ওয়াশিংটন: আমেরিকার দুই হাইস্কুল ছাত্রী গণিতজ্ঞদের (Mathematicians) সামনে দাবি করেছে, ত্রিকোণমিতি (Trigonometry) ব্যবহার করে তারা নাকি পিথাগোরাসের উপপাদ্য (Pythagoras’ Theorem) প্রমাণ করার জন্য নতুন উপায় বের করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States of America – USA) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, গণিতজ্ঞরা দুই ছাত্রীর দাবিতে চমকে গিয়েছেন। কেন না, এতদিন গণিতবিদরা ভাবতেন, এই কাজ একেবারেই অসম্ভব। পক্ষান্তরে বলতে গেলে, গণিতজ্ঞদের ধারণাকে খণ্ডন করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে মার্কিন মুলুকের দুই হাইস্কুল ছাত্রী।
ক্যালসিয়া জনসন (Calcea Johnson) এবং নে’কিয়া জ্যাকসন (Ne’Kiya Jackson)। এই দুই পড়ুয়া নিউ অরলিয়ান্সের স্টেন্ট মেরি অ্যাকাডেমিতে (St. Mary’s Academy, New Orleans) পড়াশোনা করে। গত ১৮ মার্চ আমেরিকান ম্যাথেম্যাটিক্যাল সোসাইটিসতে (American Mathematical Society’s – AMS) স্প্রিং সাউথইস্টার্ন সেকশনাল মিটিংয়ে (Spring Southeastern Sectional Meeting) জনসন এবং জ্যাকসন তাদের খোঁজ উপস্থান করেছে সকলের সামনে।
আরও পড়ুন: Naga Chaitanya | Daksha Nagarkar | Kissing Scene | কাকে চুম্বন করেছিলেন নাগা!
এবিষয়ে সেন্ট মেরি স্কুল সূত্রে জারি করা নোটে বলা হয়েছে, “গবেষণা সম্পর্কে তারা যে যুগান্তকারী বক্তৃতা দিয়েছে, তা ঐতিহাসিক। আমেরিকান ম্যাথেম্যাটিক্যাল সোসাইটি মিটিংয়ে সাধারণত হাইস্কুলের পড়ুয়ারা উপস্থাপক হয় না বা উপস্থাপন করে না।”
পিথাগোরাসের উপপাদ্য ২০০০ বছরের পুরনো। এতে বলা হয়েছে, একটি সমকোণী ত্রিভুজের দু’টি ছোট ভুজের বর্গক্ষেত্রের সমষ্টি অতিভুজের (hypotenuse) বর্গক্ষেত্রের সমান এবং তৃতীয় ভুজ সমকোণের বিপরীত হয়। সারা বিশ্বের পড়ুয়া ও শিক্ষার্থীরা এই তত্ত্ব a2+b2=c2 হিসেবে পড়ে কিংবা শিখে এসেছে। সেইসঙ্গে এটাও উল্লেখযোগ্য বিষয়, গণিতজ্ঞ পড়ুয়া ও শিক্ষার্থীরা এই বিষয়টি পড়িয়ে এলেও, তাঁরা এর স্বপক্ষে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ খুঁজে পাননি, যার মাধ্যমে এটি প্রমাণ করা যায় এবং ব্যাখ্যা করা যায়, কেন এটি হয়।
আমেরিকান ম্যাথেম্যাটিক্যাল সোসাইটি সাউথইস্টার্ন রিজিওনাল কনফারেন্সে (American Mathematical Society Southeastern Regional Conference) শ্রোতাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, “ত্রিকোণমিতি আবিষ্কার হওয়ার ২০০০ বছরে, এটি সর্বদাই ধরে নেওয়া হয়েছে, ত্রিকোণমিতির উপর ভিত্তি করে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের যে কোনও তথাকথিত প্রমাণ অবশ্যই বৃত্তাকার (circular) হতে হবে।” আরও বলা হয়েছে, “প্রকৃতপক্ষে, প্রমাণের বৃহত্তম সঙ্কলনে লেখিকা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘কোনও ত্রিকোণমিতিক প্রমাণ নেই, কারণ ত্রিকোণমিতির সব মৌলিক সূত্রই (Fundamental Formulae) পিথাগোরাসের উপপাদ্যের সত্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত’।” উল্লিখিত বইটির নাম দ্য পিথাগোরিয়ান প্রোপোজিশন (The Pythagorean Proposition), লেখিকা হলেন এলিশা লুমিস (Elisha Loomis)।
এরপর, দুই ছাত্রী দাবি করে, তারা ত্রিকোণমিতি ব্যবহার করে বৃত্তাকার যুক্তি (Circular Reasoning) ছাড়াই উপপাদ্য প্রমাণ করতে পারবে। জনসন এবং জ্যাকসন তাদের সারাংশে লিখেছে, “এটা পুরোপুরি সত্যি নয়।” এরপর দুই ছাত্রীর দাবি, “আমরা পিথাগোরাসের উপপাদ্যের একটি নতুন প্রমাণ উপস্থাপন করছি, যা ত্রিকোণমিতির একটি মৌলিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে তৈরি – সিন-এর সূত্র (Law of Sines) – এবং আমরা দেখাচ্ছি যে প্রমাণটি পিথাগোরিয়ান ট্রিগ আইডেন্টিটি (Pythagorean Trig Identity) sin2x+cos2x=1 থেকে স্বতন্ত্র।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যমে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এই খোঁজ এখনও পর্যন্ত পিয়ার-রিভিউড জার্নালে (Peer-Reviewed Journal) গ্রহণ করা হয়নি। দুই ছাত্রীর দেওয়া তথ্য গ্রহণ করা হবে কী, হবে না, তা এখনই বলা মুশকিল।