কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ইউক্রেনের ‘পুনর্জন্ম’ হল। কোনও অবস্থাতেই রাশিয়ার সঙ্গে ‘আপস’ নয়। বুধবার দেশের ৩১-তম স্বাধীনতা দিবসে এই ভাষাতেই নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি। ঘটনাচক্রে এদিনই ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ৬ মাস পূর্ণ হল। ১৯৯১ সালে কমিউনিস্ট শাসনের অবসান ও সাবেক সোভিয়েতের পতনে স্বাধীন দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়ায় ইউক্রেন।
অন্যান্যবার সমারোহ করে স্বাধীনতা দিবস পালিত হলেও এবার রুশ হানার আতঙ্কে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের নাগরিকদের মনোবল বাড়াতে জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
আবেগভরা গলায় তিনি বলেন, রুশ হানার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনের পুনর্জন্ম হয়েছে। রুশ হানার আশঙ্কায় এদিন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যাবতীয় আনন্দানুষ্ঠান বাতিল করা হয়। খারকিভ, মাইকোলিভেও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জেলেনস্কি আরও বলেছেন, অধিকৃত ক্রিমিয়া যে কোনও মূল্যে পুনর্দখল করবেন তিনি। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইউক্রেন ইতিমধ্যেই ইউরোপের সমর্থন ও অভিনন্দন পেয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ স্কোলজ রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: NASA James Webb Telescope: নতুন করে বৃহস্পতির ছবি প্রকাশ করল নাসা
দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধিতে জেলেনস্কিও বলেছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর চারটেয় বিশ্বের সামনে এক নতুন দেশের উত্থান হয়েছে। এটা জন্ম নয়, ইউক্রেনের পুনর্জন্ম। একটা দেশ যারা চোখের জলে ভাসেনি, হা-হুতাশ করেনি, যারা যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালায়নি। আমরা সেই দেশ যারা এখনও আত্মসমর্পণ করেনি, আবার আমাদের বিরুদ্ধে কী ঘটেছে, তা ভোলেওনি। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব। রুশ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাব বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধের শেষে আমরা কী পাব? সাধারণত সবাই বলেন, শান্তি। কিন্তু আমি বলছি, এ যুদ্ধের শেষে আমাদের জন্য বিজয় অপেক্ষা করে আছে।
জেলেনস্কি সদর্পে এই ভাষণ দিলেও বাস্তব পরিস্থিতি হচ্ছে, এদিন রাজধানী কিয়েভের রাস্তাঘাট প্রায় শুনশান ছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতবছর এই দিনে আমি কিয়েভের খ্রেৎসচাটিকের প্রধান রাজপথে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হাজার হাজার মানুষ তখন স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড দেখতে ব্যস্ত। পথ দিয়ে যাচ্ছিল নতুন নতুন অস্ত্র। মাথার উপর দিয়ে উড়ছিল যুদ্ধবিমান। আর ঠিক একবছর পরেই সেই ছবিটা এমনভাবে পালটে যাবে, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কোনওদিন।