Wednesday, June 4, 2025
HomeআজকেAajke | দিদিকে বলো থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী, কী বলব? 

Aajke | দিদিকে বলো থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী, কী বলব? 

Follow Us :

সংবাদমাধ্যম প্রসারিত হয়েছে। কতটা? সরকারি পরিচালনায় আকাশবাণী আর দূরদর্শন থেকে আজ শয়ে শয়ে প্রাইভেট টিভি আর রেডিও চ্যানেল। প্রথমে সরকারি মাধ্যম মানে সরকারি কবজা, সরকারেরই বয়ান, সরকারেরই মুখপত্র। তারপর সেটাকে ভেঙে অজস্র টিভি রেডিও চ্যানেলে নানাবিধ মতামত, কোনওটা সরকার বিরোধী, কোনওটা সরকারের পক্ষে, কিছু অবশ্যই নিরপেক্ষ। ওদিকে খবরের কাগজ তো আছেই। কাজেই সরকার, হরেক কিসিমের সরকার সংবাদমাধ্যমকে অনুগত করার কাজে নেমে পড়ল এবং সে কাজকে এক হিমালয় সম উচ্চতায় নিয়ে গেল বিজেপি, মোদি–শাহ। কিন্তু ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়া আসার পরে গোটা ছবিটা পাল্টে যাচ্ছে। না, খবর চাপা প্রায় অসম্ভব, কোথাও না কোথাও খবর বেরিয়ে যাচ্ছে। অতএব শুরু হল খবর দিয়ে নয়, নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করে, নতুন ধারণার জন্ম দিয়ে এক পাবলিক পারসেপশন তৈরি করা। মানে মানুষের মনে কিছু ধারণার জন্ম দেওয়া যার সত্যতা যাচাই করা বেশ সময়, শিক্ষা আর যুক্তির ব্যাপার। উদাহরণ দিই। মুসলমান জনসংখ্যা বাড়ছে, এ ধারণার জন্য নমাজের জন্য জমায়েত হওয়া এক ভিড়ের ছবি বা কোনও মুসলমান অধ্যুষিত জায়গায় জমা হওয়া মানুষের ছবিই যথেষ্ট। চোখে পড়বে দাড়ি টুপি, ব্যস, ধারণা তৈরি হল। 

ধরুন ইতিহাসের বইতে আমরা প্রায় সবাই পড়েছি আওরঙ্গজেব অত্যাচারী সম্রাট ছিলেন, মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তারের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, সেসব যুদ্ধে পরজিত হয়েছেন ছোট ছোট হিন্দু রাজারা। এ তো ইতিহাস। কিন্তু আওরঙ্গজেব অত্যচারী ছিলেন, আওরঙ্গজেব মুসলমান ছিলেন, মুসলমানরা আওরঙ্গজেবের উত্তরসূরি, আওরঙ্গজেব কা অওলাদ, এমন এক সরলরৈখিক ধারণা তৈরি করার কাজ চলছে, অনেকটা সফল। এ ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করতে হলে যথেষ্ট শিক্ষা, যথেষ্ট সময় আর যুক্তিবোধের দরকার। তা নেই। অতএব সংবাদমাধ্যমের বিকাশ আর বিস্তার হয়েছে বটে কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সিংহভাগ, সোশ্যাল মিডিয়ার সিংহভাগ এখন খবর নয়, ধারণা তৈরি করে, নিত্য নতুন ন্যারেটিভ। এটাই আপাতত রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার। সেই হাতিয়ারকে মোকাবিলা করার জন্য বা আরও কাজে লাগানোর জন্যই রাজনৈতিক নেতারা এখন সরাসরি মানুষের সঙ্গে ডায়লগে যেতে চাইছেন। মানে আমি আছি, দরকারে প্রয়োজনে আমার সঙ্গেই তো কথা বলতে পারেন। ওসব ধারণা ইত্যাদি নিয়ে তো সাধারণ মানুষের দিন চলে না, তাঁদের সেচের ব্যবস্থা, গ্রামের রাস্তা বা স্কুলে মাস্টারমশাই চাই। কাজেই মোদিজির মন কি বাত, যোগীজির আম দরবার, ভূপেশ বাঘেলের লোকবাণী, বাংলায় দিদি কে বলো, যা আপাতত সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী। আজ সেটাই আমাদের বিষয় আজকে। কী বলব দিদিকে?

আরও পড়ুন: Aajke | পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাজনা বেজে গেল, জিতবে কারা? 

মুসলমানদের ক’টা বিয়ে, জ্ঞানবাপী মসজিদ আসলে মন্দির ছিল কি না বা টিপু সুলতান প্রকৃত অর্থে ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন কি না এসব নিয়ে চিন্তিত খুব, খুব কম সংখ্যক মানুষ। তার থেকেও বেশি চিন্তিত তাঁর প্রতিদিনের জীবন জীবিকা নিয়ে, তাঁর গ্রাম, শহর বা মহল্লা নিয়ে, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এবং যে নেত্রী প্রকাশ্যেই বলে দেন বিধানসভার প্রতিটা আসনে তিনিই প্রার্থী, ভোট মানুষ দেবেন তাঁকেই, সেই নেত্রীকে তো মানুষের কথা শুনতেই হবে। কাজেই দিদিকে বলো পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হয়ে গেল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী। লক্ষ লক্ষ মানুষ দিদিকে বলোতে ফোন করেছেন এবং সরকারের দাবি, তৃণমূলের দাবি ৮০ শতাংশ সমস্যার চটজলদি সমাধান হয়েছে। এবার সেই সরাসরি যোগাযোগ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আরও বড় হাতিয়ার। প্রশ্ন উঠবেই, নির্বাচনবিধি লাগু হবার পরে সরকারি ব্যবস্থায় এ তো নেত্রীর প্রচার। কে বলবেন কথাটা? শুভেন্দু, দিলীপ বা সুকান্ত? বলার মুখ নেই কারণ এই একই কাজ প্রধানমন্ত্রী করে চলেছেন, মন কি বাতে হাজির হচ্ছেন মানুষ, তিনি বলছেন, শুনছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও সরাসরি মানুষের অভিযোগ শুনতে চাইছেন, নির্বাচিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সে অধিকার আছে বইকী। কাজেই যে প্রশ্নতে এসে আমরা শেষমেশ ঠেকছি তা হল দিদিকে বলো। মুখ্যমন্ত্রীকে বলো, কী বলব? নিজের গ্রাম, নিজের মহল্লা, নিজের চাকরি সুরক্ষার কথা তো বলবেন, প্রয়োজনের কথা বলুন, তার সঙ্গেই জানান এলাকায় এলাকায় গড়ে ওঠা ক্ষুদে শাহেনশাহদের কথা, তাদের পেল্লায় বাড়ির কথা, কাটমানির কথা, প্রকল্প আটকে থাকার কথা, বিরোধিতা করলেই রক্তচক্ষু দেখানোর কথা। হ্যাঁ, সুযোগ যখন মিলেছে, তখন এই প্রবল অন্যায়ের কথাই বলা হোক দিদিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে। আচ্ছা এসব কথা কি বলা যায় আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে? তৃণমূল দলের ভুঁইফোড় নেতাদের অন্যায়, গা-জোয়ারি আর দুর্নীতির কথা কি বলা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে? আমরা এই প্রশ্ন করেছিলাম মানুষজনকে, শুনুন তাঁরা কী বলছেন।

মানুষ যদি সংকোচ আর ভয়কে জয় করে এই সুযোগের ব্যবহার করে দলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে এই কথাগুলো বলতে পারে, আর তার ফলে যদি ৬০-৭০ শতাংশ অভিযোগের সমাধান হয়, তাহলে রাজনীতির রং রূপ পালটে যাবে। এই সরাসরি কথা বলতে পারার অধিকার, সমস্যা বা অভিযোগ সরাসরি জানাতে পারার অধিকার ভারতীয় গণতন্ত্রে এক নতুন ইতিহাস রচনা করতেই পারে, গ্রাসরুটে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতিকে রুখে দিয়ে এক নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতেই পারে। প্রয়োজন ওই ভয় আর সংকোচকে ঝেড়ে ফেলে সত্যিটা জানিয়ে দেওয়া, এবং সেই অভিযোগের সুরাহা না হওয় পর্যন্ত বার বার তুলতে থাকা। কারণ কেবল সমালোচনা নয়, অধিকারের কথা বলা, প্রতিবাদের স্বর তোলাটাও গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত। আপনাদের মতামত জানান।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Weather | উত্তরবঙ্গে জারি কমলা সতর্কতা, ৫০-৬০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া
00:00
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Sheikh Hasina | এই প্রথম সরাসরি বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা, দেখুন Live
00:00
Video thumbnail
Ukraine | ইস্তানবুলে আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেন জুড়ে সাইরেনের শব্দ, ফের প্রবল যু/দ্ধ রাশিয়া-ইউক্রেনের?
00:00
Video thumbnail
Yogi Adityanath | মুখ্যমন্ত্রীকে বেলাগাম আ/ক্রমণ করলেন প্রধান বিচারপতি, দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
RBI | বাড়িতে জমাচ্ছেন ২টাকা ৫টাকার নোট! কী হবে নোটের ভবিষ্যত? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বড় ঘোষণা
00:00
Video thumbnail
Weather | উত্তরবঙ্গে জারি কমলা সতর্কতা, ৫০-৬০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া
03:22
Video thumbnail
Eco ইন্ডিয়া | কীভাবে শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা যায়? শুনে নিন কলকাতাবাসীদের মুখে
00:49
Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
01:51:13
Video thumbnail
আমার শহর (Amar Sahar) | বর্ষার শুরুতেই ভাঙল রাস্তা আলিপুরদুয়ারে
02:15