ভালবাসা অন্ধ হয়— লিখেছিলেন শেক্সপিয়ার৷ যাঁকে মন থেকে ভালবেসে ফেলেছেন তাঁর দোষত্রুটিগুলো তেমন ভাবে চোখে পড়ে না। তবে এই চোখে না-পড়া বা পড়া উচিত কি না, তা নিয়ে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক চলতেই পারে। মানুষমাত্রই ভুল করে আর সত্যিকারের আপনজন হলেন তিনিই, যিনি সেই ভুলগুলো দেখে মুখ না-ফিরিয়ে তাঁকে বুঝিয়ে ঠিক পথে চালিত করেন। ইদানীং আপনার ও আপনার মনের মানুষের মধ্যে এ-রকমই একটা অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। আকছার সেগুলিকে প্রিয় মানুষের ছোটখাট ভুল বলে পাত্তা দেন না। এই ছোটখাট ঘটনাগুলোই হয়তো আপনাদের সম্পর্কের লাল সিগন্যালের মতো, এগুলি এড়িয়ে গেলেই বিপদ। অপেক্ষা করছে বিচ্ছেদ।
যাঁরা কমিটেড রিলেশনশিপে বিশ্বাসী, তাঁরা সহজে সম্পর্ক থেকে বেরোতে চান না। ছোটখাট ঝামেলায় চেষ্টা করেন মাথা ঠান্ডা করে সমস্যা সমাধানের। এটা ভুল নয়, নানা কারণে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।আবার দুজনের বোঝাপড়ায় সমস্যার সমাধানও হয়ে যায়। আপনার ক্ষেত্রেও কি ঠিক এটাই হয়?
দু’জনের জন্য বারবার সময় চাইতে হয় সেই আপনাকেই
শুভ সকাল থেকে শুভরাত্রির বার্তা চিরকাল আপনি দেন। তাতে আক্ষেপ নেই। কিন্তু দিনের অন্যান্য সময়ে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ বা কল আপনি করেন। সব চেষ্টার যে উত্তর পান তা নয়, কারণ তিনি কাজে ব্যস্ত। হতেই পারে। কিন্তু এখানেও একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। একবার, দু’বার এটা হতে পারে, বারবার নয়। মনে রাখবেন আমরা প্রত্যেকেই নিজের মতো করে মূল্যবান। আজকের কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই ব্যস্ত। কিন্তু তাই বলে কাছের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগে তা বাধা হতে পারে না। ফোনে কথা বলার সময় কমতে পারে, তবে কথা বন্ধ হয়ে যাওয়াটা কাম্য নয়। একটা আবেগঘন হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজও যথেষ্ট।
সম্পর্ক নিয়ে ফের একবার ভাবুন…
আপনাদের দু’জনের ঠিকমতো কথা হয় না
সম্পর্কের স্বাস্থ্য যে ভাল নেই এই কারণটি তা বোঝানোর পক্ষে যথেষ্ট। অনেকক্ষেত্রে তা প্রত্যক্ষ ভাবে না হয়ে পরোক্ষ হয়। যেমন আপনার মনের মানুষ তাঁর সমস্যার কথা আপনাকে জানাতে না চাওয়া। এই নিয়ে তাঁর যুক্তি, তিনি এ-রকমই! এই উত্তর পেলে আপনার সম্পর্ক নিয়ে ফের একবার ভাবুন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর বাস্তবের কোথাও কোনও মিল নেই।
সম্পর্কে দু’জনের, কিন্তু চলে তাঁর ইচ্ছানুসারে
এক একটা সময় আপনাদের একসঙ্গে এত ভাল কাটে যে, সম্পর্ক নিয়ে সব আশঙ্কা কেটে যায়। এতে উচ্ছ্বসিত হবেন না। আবার ভাবুন এই মুহূর্তগুলো কি শুধু তাঁর মেজাজ ভাল থাকলেই আসে? আপনার ভাল লাগা তেমন আমল পায় না? কবে তাঁর মেজাজ ভাল থাকবে তার জন্য আপনাকেই অপেক্ষা করতে হয়। দিন পেরিয়ে সপ্তাহ, সপ্তাহ পেরিয়ে মাস, অপেক্ষা ক্রমশ দীর্ঘায়িত হলে বুঝতে হবে এই সম্পর্কের স্থায়িত্ব ক্ষণিকের।
সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে মনের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করুন
তাঁর কথা ও কাজে কোনও মিলই দেখতে পান না
ভাল মুহূর্তে যেমন বন্ধুদের মাঝে, কোথাও এক সঙ্গে ঘুরতে গেলে বা জনসমক্ষে তিনি এমন আচরণ করেন যেন আপনি ওঁর ধ্যানজ্ঞান। কিন্তু ঠিক পরের দিনই সব উল্টো। তাঁর কথাবার্তায়, আচরণে কোথাও আপনার গুরুত্ব আছে বলে অন্তত আপনার তা মনে হয় না। মনে হয় সুন্দর মুহূর্তগুলি যেন একটা ঘোরের মতো। দৈনন্দিন জীবেন আপনি তাঁর উপস্থিতিতেও ভীষণ একা।
এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে অবিলম্বে এই নিয়ে আপনার প্রিয় মানুষের সঙ্গে আলোচনা করুন। তাতেও কাজ না হলে ভালভাবে সম্পর্কের ইতি টানুন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবেন না।
(ছবি সৌজন্য: Pexels)