কলকাতা: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023)। পাড়ার সর্বজনীন পুজো থেকে পুরোনো জমিদার বাড়ির পুজো সর্বত্রই এখন সাজো সাজো রব। তেমনই এক পুজো হল ঝাড়গ্রামের (Jhargram) চিল্কিগড়ের কনক দুর্গা মন্দিরের (Durga Temple) পুজো। জঙ্গলঘেরা গা-ছমছমে পরিবেশের মধ্যে তৈরি এই মন্দিরে একসময় চালু ছিল নরবলি প্রথা। মনে করা হয় প্রায় ৪৫০ বছর আগে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সামন্তরাজ গোপীনাথ সিংহ।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই চিল্কিগড়। দেবীর মূর্তি অষ্টধাতুর অশ্বারোহিণী। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ডুংলি নদী। এখানে সাড়ম্বরে দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। অত্যন্ত জাগ্রত এই দেবীর কাছে বহু মানুষ মানত পূর্ণ হলে পুজো দিয়ে যান। তবে দুর্গাপুজোর চার দিন বিশেষ রীতি আচার মেনে পুজো চলে ঝাড়গ্রামের কনক দুর্গা মন্দিরে। এই চার দিন দেবীকে হাঁসের ডিম, মাছ পোড়া, শাক ভাজা ও পান্তা ভাতের ভোগ নিবেদন করা হয়। মহাষ্টমীতে হাঁসের ডিমের ভোগ দেওয়া হয়। নতুন মাটির হাঁড়িতে জল ও অন্যান্য সামগ্রী ভরে শালপাতা দিয়ে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে উনুনে চাপিয়ে দেওয়া হয়। উনুনে তিনটি কাঠে আগুন জ্বেলে ঘরের দরজা তালাচাবি দিয়ে বন্ধ করা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেবী স্বয়ং এসে এই ভোগ রান্না করেন।
আরও পড়ুন: ৭৫০ বছর ধরে ঘটে পূজিত হন গুপ্তমণি মা
চিল্কিগড়ের প্রায় ভেঙে পড়া যে প্রাচীন মন্দির রয়েছে তার পশ্চিমপ্রান্তের দালানে একসময় নরবলি হত। সেই রক্তে পুজো হত কনকদূর্গার। সময়ের সঙ্গে নরবলি বন্ধ হয়ে যায়। চালু হয় মোষবলির প্রথা। এখন অষ্টমী পুজোর পর গভীর রাতে জঙ্গলের ভেতরে বলির আয়োজন করা হয়। তিথি-নক্ষত্র মেনেই বলি দেওয়া হয়। সেখানে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার থাকে না। পূর্বমুখী এই মন্দিরে রয়েছে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। এগিয়ে গেলেই দেখা যায় পূর্বমুখী বারান্দা। মন্দিরের বাঁদিকে রয়েছে অতি প্রাচীন এক বটগাছ। যা থেকে নেমে আসা ঝুরিতে ভক্তরা ইচ্ছাপূরণের ডুরি বেঁধে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে আপদে-বিপদে রক্ষা করেন দেবী কনকদুর্গা। শুধু তাই নয়। এই মন্দিরে এসে দেবী দর্শনের পর মনস্কামনা জানালে, তা-ও পূরণ করেন দেবী।
দেখুন আরও অন্য খবর: