দীর্ঘ ১২২ বছরের রেকর্ড ভেঙে ইতিমধ্যেই উষ্ণতম মার্চের(hottest march in 122 years) সাক্ষী হয়েছে ভারত। যত দিন যাচ্ছে তত চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। ক্রমবর্ধমান এই তাপমাত্রা যে কোথায় গিয়ে থামবে তার ঠিক নেই। এই অবস্থায় একাধিক শারীরিক সমস্যার কথা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে অত্যাধিক ঘাম(excessive sweat) হওয়া থেকে শুরু করে, চ্যাটচ্যাটে ত্বক(sticky skin), ডিহাইড্রেশন(dehydration), প্রচণ্ড ক্লান্তি(tiredness), সেরিব্রাল পেন(cerebral pain), ঝিমঝিম ভাব(dizziness), গা ম্যাজম্যাজ করা(sickness), মাংশপেশিতে টানের(muscle cramps) মতো সমস্যা যেমন রয়েছে। তেমন প্রচণ্ড গরমে প্রভাবিত হয় হৃদস্পন্দনও(pulse), দ্রুত হৃদস্পন্দন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখানেই শেষ নয় সানস্ট্রোকের(sunstroke) পাশাপাশি ইউরিন্যারি ট্র্যাক্টের সংক্রমণও(Urinary Tract infections) কয়েকগুণ বেড়ে যায় গ্রীষ্মকাল। তাই এই ওয়ার্ল্ড হেলথ ডে- তে কীভাবে প্রচণ্ড গরমে কাবু না হয়ে নিজেকে ও পরিবারের সকলকে সুরক্ষিত রাখবেন জেনে নিন-
এই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে এই নিয়মগুলো অবশ্যই মেনে চলুন-
- সব সময় আপনার ত্বকের সঙ্গে মানানসই সানব্লক ক্রিম(sunblock cream) বা সানস্ক্রিন(sunscreen) ব্যবহার করুন। এর ফলে রোদে পুড়ে(sunburn) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে পারবেন।
- যতটা সম্ভব সরাসরি সূর্যের(direct sunlight) আলো থেকে দূরে থাকুন। বাড়ির বাইরে বেরোলে একটানা অনেকক্ষণ রোদের মধ্যে থাকবেন না। যাতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- হালকা, ঢিলেঢালা জামা কাপড় পড়ুন।
- শরীরের দিকে নজর দিন। আচমকা গরমে শরীর খারাপ লাগলে তুলনামূলক ঠাণ্ডা জায়গায় গিয়ে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নিন।
- গরমকালে হজমের সমস্যা বেড়ে যায় তাই হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ভাল হয় যদি অল্প পরিমাণে বার বার খাবার খান। এতে শরীরে শক্তির সঞ্চার হবে আর পরিমাণে কম থাকায় খাবার সহজে হজম হবে।
- অন্যদিকে ভারি খাবার খেলে তাতে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকে তা শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। এতে শরীরের হজমের প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়। খাবার হজম করতে বেশি সময় লাগে এবং পেটের নানান সমস্যা তৈরি হয়। তাই এই সময় বেশি মাত্রায় জল রয়েছে এমন সব মরসুমি ফল ও সবজি নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। গরমকালে তরমুজ, কমলালেবু, শশা , টোমেটো, পুদিনা ও মৌরি খান। এইসব খাবার শরীর ঠাণ্ডা রাখবে।
- মদ্যপান, ফিজি ড্রিঙ্কস ও ক্যাফেন যুক্ত খাবার যত পারবেন এড়িয়ে চলুন। কারণ, এগুলো শরীরকে আরও ডিহাইড্রেট করে দেয়। বরং নারকেলের জল, দইয়ের শরবত, ঘোল খান শরীর ভাল থাকবে।
সন্তান সম্ভবাদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন
গরমে গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন। বেশি পরিমাণে ফলে খেতে পারেন। ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন(vitamin), মিনারেল(mineral) ফাইবার(fibre) ও গুড সুগার(good sugars) আছে হবু সন্তান ও মায়ের জন্য ভীষণ উপকারী। পাশাপাশি এগুলো শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি জোগাবে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখবে। এছাড়াও ত্বক ও চুল ভাল রাখবে। এখানেই শেষ নয় প্রচুর পরিমাণে ফল খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকবে না। হজম ভাল হবে ও বাওয়েল মুভমেন্ট ভাল হবে, পেট পরিষ্কার থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এমন বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে যেগুলি গরমের কারণে না হলেও গরমকালে এগুলির তীব্রতা বেড়ে যায় এবং ভীষণ ভাবে প্রভাবিত হয় যেমন কিডনির স্বাস্থ্য, ত্বকের স্বাস্থ্য, মিজেলস, জন্ডিস, প্রেগন্যান্ট মহিলাদের মধ্যে প্রি-টার্ম ডেলিভারি ইত্যাদি। তাই গরমকালে স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষ সচেতনতার প্রয়োজন।
(ছবি সৌ: who.int)