নয়াদিল্লি: বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) দায়ের করা মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী। ফলে, মঙ্গলবার এই আবেদনের শুনানি মুলতুবি রাখা হয়। পরবর্তী বেঞ্চ গঠন না হওয়া পর্যন্ত মামলাটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের দাঙ্গায় বিলকিস বানোর পরিবারকে খুন ও তাঁকে গণধর্ষণের দায়ে ১১ জনের যাবজ্জীবন হয়। কিন্তু, গত ১৫ অগাস্ট সরকার তাদের মুক্তি দেয়, জেলে ভালো ব্যবহার করার যুক্তিতে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের জল গড়াতে থাকে। শেষে সর্বোচ্চ আদালতে ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয়।
আরও পড়ুন: Amit Shah Slams Congress: সংসদে হট্টগোলের দায় কংগ্রেসে ঘাড়ে চাপালেন অমিত শাহ
এদিন মামলার শুনানি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিচারপতি অজয় রাস্তোগি জানান, তাঁর সহকর্মী বিচারপতি এই মামলা শুনতে আগ্রহী নন। রাস্তোগির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, ফলে এই মামলাটি এমনটি একটি বেঞ্চে তালিকাভুক্ত করতে, যেখানে তাঁদের দুজনের কেউ সদস্য নন। তবে বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর সরে দাঁড়ানোর কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি বেঞ্চ।
বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ আসামিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ নির্যাতিতা নিজেই। বিলকিস বানোর আইনজীবী প্রধান বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় আবেদনটি যাতে শুনানির জন্য ওঠে, তা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের দ্রুত মুক্তি হল কীভাবে? বিলকিসের ধর্ষণকারীদের মুক্তির বিষয়টিতে ছাড়পত্র দিতে কেন্দ্র মাত্র ২ সপ্তাহ সময় নিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে গুজরাত সরকার বলেছে, ওই ব্যক্তিরা ১৪ বছর জেল খেটেছে। তাদের ব্যবহার ভালো ছিল। আর তাতেই কেন্দ্র তাদের মুক্তির বিষয়ে ছাড়পত্র দেয়।
সাবরমতী এক্সপ্রেসে হামলায় ৫৯ জন করসেবকের মৃত্যুর পরই গোটা গুজরাত জুড়ে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় বিলকিস বানোর বাড়িতে চড়াও হয় কয়েকজন। গর্ভবতী বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয় এবং তাঁর পরিবারের মোট ১৪ জনকে খুন করা হয়। বিলকিসের ৩ বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে খুন করে তারা। প্রাণে বাঁচতে পরিবারের অন্যরা জমিতে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন।
এই মামলায় ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টে বিলকিস দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পান। ৫০ লক্ষ টাকা ছাড়াও চাকরি এবং বাড়ি দেওয়া হয় তাঁকে। মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, পরে হাইকোর্টেও সেই সাজা বহাল থাকে।