নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে (National Executive Meeting) কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, সংখ্যালঘু মানুষদের কাছে যেতে হবে। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat, RSS Chief)) বৈঠক করছেন মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের (Muslim Intellectuals) সঙ্গে। কিন্তু এসবের ফলে কাজ কতটা হচ্ছে তা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, কোনও কোনও রাজ্যে কি সংখ্যালঘুদের বেশি সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ-প্রশাসন (Police-Administration)?
বিজেপি (BJP) শাসিত ছোট্ট রাজ্য হরিয়ানা (Haryana)। সেই রাজ্যের ছোট্ট একটি জেলা, নাম ‘নু’ জেলা (Nuh District)। এই জেলায় বড় অংশ রাজপুত মুসলিমের (Rajput Muslims) বাস। গত প্রায় এক দশকে, এই জেলায় বেশ কয়েকটি লিঞ্চিং (Lynching)-এর ঘটনাও ঘটৈছে। এবার সামনে এল, মুসলিমদের মিথ্যা মামলায় জড়ানোর গুরুতর অভিযোগ। সোমবার ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, হরিয়ানার গো-হত্যা সংক্রান্ত ২০১৫ সালের বিশেষ আইনে গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত, শুধু নু-সেসনস কোর্টে বিচারাধীনের সংখ্যা ছিল ১১৯২টি। এরা প্রায় সবাই স্থানীয় রাজপুত মুসলিম। মূল অভিযোগ, হত্যার জন্য গরু পাচারের চেষ্টা এবং পরিণতিতে গ্রেফতার। এর মধ্যে গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর, শুধু ছয় মাসে, এই সংক্রান্ত ৬৯টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে নু আদালতে (Nuh Court)। কী তার ফল? মাত্র ৪ জন বাদে বাকি ৬৫ জন নির্দোষ প্রমাণিত। শতাংশের হিসেবে, গ্রেফতার হওয়া মানুষদের ৯৪ শতাংশ কোনও অপরাধ করেননি। নির্দোষ। অথচ তাঁরা জেল খেটেছেন। এখানেই প্রশ্ন,, সংখ্যালঘুদের কী হরিয়ানার পুলিশ বাড়তি সন্দেহ করছে? নাকি সব জেনে শুনে মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে? অভিযুক্তদের আইনজীবীরা কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছেন। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা অবশ্য সরকারের পক্ষে এখনও অনেক যুক্তি দিচ্ছেন।
এটা তো গেল একটি বিজেপি শাসিত রাজ্যের একটি জেলার ঘটনা। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও সংখ্যলঘুরা কি অবিচারের শিকার হচ্ছেন?
গত রবিবার লখনউয়ে মুসলিম পার্সোনাল ল-বোর্ডের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসেছিল। তাঁদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। সেই বৈঠক থেকে এক আবেদনে দেশের পিছিয়ে থাকা এবং সংখ্যালঘু মানুষদের উপর ঘটা অবিচারের ঘটনায় দেশের বিচার ব্যবস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তাঁদের এই আবেদন থেকে একটাই কথা মনে হয়, সংখ্যালঘুদের হেনস্তার যে ছবি হরিয়ানার নু জেলায় দেখা যাচ্ছে, তা সম্ভবত কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সম্প্রতি একটি বিদেশি তথ্যচিত্রেও সংখ্যালঘুদের প্রশ্নে ভারত সরকারের (Government of India) ভূমিকা নিয়ে প্রায় এমনই দাবি করা হয়েছে। ভারত সরকার অবশ্য এসব অভিযোগকে অপ্রচার বলে, নিষিদ্ধ করেছে ওই তথ্যচিত্র (Documentary)।