বহরমপুর: আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং কেজরিওয়ালকে (Arvind Kejriwal) কটাক্ষ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury)। বুধবার তিনি বলেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মমতা এবং কেজরিওয়ালের জোট শিবহীন যজ্ঞ হবে। এদিন বহরমপুরে দলীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, কর্নাটকে আম আদমি পার্টি বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। একটিতেও তারা জিততে পারেনি। বরং তাদের জন্য কংগ্রেস (Congress) ওই সব আসনে হেরে যায়। হিমাচলপ্রদেশেও একই কাজ করেছে আম আদমি পার্টি।
অধীর বলেন, সারা ভারতে যখন বিরোধীরা একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে, তখন দিদি আর তাঁর কেজরি ভাই এমন একটা বার্তা দিচ্ছেন, আমরা জোট করব। কিন্তু সেই জোটে কংগ্রেসকে গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। এর অর্থ হল শিবহীন যজ্ঞ। এ যেন বিয়েবাড়িতে সব আছে। নিমন্ত্রিতরা আছে। বিয়ের আয়োজন আছে। কিন্তু বিয়ের পাত্র নেই। শিবহীন যজ্ঞ কেমন হয়, আমার জানা নেই।
মঙ্গলবার নবান্নে মমতা-কেজরিওয়াল বৈঠক শুরুর আগে অধীর তাঁদের দুজনকে ভোটপাখি এবং কংগ্রেসের ভোটকাটুয়া বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা, মেঘালয়, গোয়ায় তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলার জন্য।
আরও পড়ুন: Delhi | দিল্লি অর্ডিন্যান্স – রাজ্যসভায় বিরোধীরাই বেশি
এদিকে অধীর যখন ধারাবাহিক ভাবে কেজরি-মমতার বিরোধিতা করে চলেছেন, তখন কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স প্রশ্নে আম আদমি পার্টির (AAP) পাশে থাকা নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছেন দিল্লি এবং পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) এবং রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) বৈঠকে কংগ্রেস নেতারা আপের পাশে থাকার বার্তা দেন সোমবার। তারপরই মঙ্গলবার বেঁকে বসেছেন দিল্লি-পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতারা। দিল্লির অজয় মাকেন, সঞ্জীব দীক্ষিত, পঞ্জাবের প্রতাপ বাজওয়ার মতো নেতারা বলছেন, এই কেজরিওয়ালই ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সোনিয়া গান্ধীর গ্রেফতারির দাবি জানান। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের বিরোধিতা করেননি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের ইমপিচমেন্ট কিংবা উপরাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি কেজরিকে। এখন বিপাকে পড়ে তিনি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করার জন্য কংগ্র্রেসের দুয়ারে হত্যে দিয়ে পড়েছেন।
এই অবস্থায় কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব কেজরির পাশে দাঁড়ানো নিয়ে সংশয়ের দোলায় ভুগছেন। অর্ডিন্যান্স প্রশ্নে কেজরিওয়াল বিরোধীদের পাশে পেতে চান। তাঁর মতে, রাজ্যসভায় ভোটাভুটিতে যদি বিজেপিকে হারিয়ে দেওয়া যায়, তবে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের পক্ষে একটা বড় জয় হবে। মঙ্গলবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী সেই বার্তাই দেন। মমতা কেজরিকে পাশে থাকার কথা দিয়েছেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকেও কেজরিকে পাশে বসিয়ে মমতা বলেন, এটা একটা বড় সুযোগ। লোকসভা ভোটের আগে মিরাকলও ঘটে যেতে পারে।