ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় (Sanjay)। তাঁর শিল্প সংস্থায় তৈরি হয় লোহার রড-সহ নানা ইস্পাত সামগ্রী। এবার খেতাব জিতলেন ‘আয়রন ম্যান’ (Iron Man)। ভিয়েতনামের সমুদ্রে সাঁতার কেটে, সড়ক পথে সাইকেল চালিয়ে ও দৌড়ে বিশেষ ‘আয়রন ম্যান’ প্রতিযোগিতায় সফল হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর (West Medinipur) জেলার এই উদ্যোগপতি। নাম সঞ্জয়কুমার পাটোয়ারি ( Sanjay Kumar Patwari)। বয়স ৪৪ বছর। পুরো প্রতিযোগিতাটি তিনি শেষ করেছেন ৬ ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে।
বর্তমানে খড়্গপুরে থাকেন সঞ্জয়। সেখানকার গোকুলপুরে একটি শিল্প গোষ্ঠীর কর্ণধার তিনি। বাল্যকাল থেকে শরীরচর্চায় মন ছিল সঞ্জয়ের। এখন ব্যবসার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও শরীরচর্চার ক্ষেত্রে খামতি রাখেননি তিনি। এখনও প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা করে নিজেকে ফিট রাখেন সঞ্জয়।
প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আয়রন ম্যান প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় কোনও প্রতিযোগীকে বেশ কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতিযোগীকে প্রথমে সমুদ্রে ২.৪ মাইল সাঁতার কাটতে হয়। সাঁতার শেষ করার পরেই ১১২ মাইল সাইকেলিং এবং ২৬.২২ মাইল দৌড়ে লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী অনেক প্রতিযোগীই সম্পূর্ণ করতে পারেন না। মাঝ পথেই অজ্ঞান হয়ে যান বা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবারে ভিয়েতনামে সঞ্জয়ের সঙ্গী ছিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা ভাস্কর চৌধুরী। জানা গিয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০ জন ভারতীয় ছিলেন। ভাস্কর জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতার দিন ভিয়েতনামে ডানাং শহরে তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি। উপস্থিত ছিল ১৫টি অ্যাম্বুল্যান্স।
প্রতিযোগিতা শেষ করার জন্য আট ঘণ্টা সময় নির্ধারিত করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতার দিন সঞ্জয় ভোর সাড়ে পাঁচটায় দক্ষিণ এশিয়া সাগরে ২.৪ মাইল সাঁতার কাটেন। সময় লাগে ৫৩ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। এরপরই ভিজে গায়েই সাইকেলে চড়ে ডানাং শহরের তিনটি ফ্লাইওভার-সহ শহরের ৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন ৩ ঘণ্টা ১২ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে। এরপর সাইকেল রেখেই দু’ঘণ্টা ৪১ মিনিট ১১ সেকেন্ডে তিনি ২১.১ কিমি পথ দৌড়ে লক্ষ্যে পৌঁছন।
তিন হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে ১৩৯৯ জন প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। তাঁরা সকলেই ‘আয়রন ম্যান’ খেতাব পান। ওই ১৩৯৯ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সঞ্জয়ের স্থান ৭৮৪তম। আর দশজন ভারতীয়র মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সঞ্জয়। খেতাব জিতে সঞ্জয় বলেন, শরীর চর্চার কোনও বিকল্প নেই। দু’বছর আগে বাঁ-পায়ে লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার করিয়েছি। কিন্তু তাতেও দমে যাইনি। তবে অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসি বলেই এই প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছিলাম।