Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeScrollকারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৪৮)
Karar Oi Lauho Kopat

কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৪৮)

জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়

Follow Us :

কলকাতা টিভির সম্পাদক কবীর সুমনের গান গাইছিলেন,
রাই জাগো রাই জাগো শুক সারি বলে,
তোমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে বাড়ল কারা দলে।
রাই জাগো রাই জাগো বলে দেশের পাখি,
শ্যাম শামসুল ভাইয়ে ভাইয়ে দাঙ্গা হবে নাকি?
রাই জাগো রাই জাগো পাখিরা দেয় ডাক,
ধর্ম জিগির তুলছে যারা তারা নিপাত যাক।
রাই জেগো না রাই জেগো না বলছে পদ্ম ফুল,
সজাগ থাকার যুক্তিগুলো কাদের চক্ষুশূল !
রাই জাগো রাই জাগো ঘরে ঢুকছে কেউটে সাপ,
তোমার ঘুমের সুযোগ নিল রাম, রুটি, ইনসাফ।

শুনছে কে? এবার তিনিই আদালতকে জানালেন সেই কথা। সাফ বললেন নির্বাচন চলছে, সেখানে তাঁর ভূমিকা থাকাটা জরুরি, তিনি এর আগে এমনকী মুখ্যমন্ত্রীরও সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, এই সাধারণ নির্বাচনে একজন সাংবাদিক সম্পাদক হিসেবে তাঁকে তাঁর কাজ করতে দেওয়া হোক। মজার কথা হচ্ছে বিচারক সেই কথাগুলো উড়িয়ে দেননি, তিনিও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্রায়াল চালু করার কথা বলেছেন। তিনি যে কথাগুলো বলেছেন, সেই কথাগুলো অন্যান্য বহু মামলার বিখ্যাত উকিল কপিল সিব্বল, মনু সিংভিরাও বলছেন। কৌস্তুভ রায় বলেছেন প্রি ট্রায়াল কনভিকশনের কথা, একজনকে ধরা হল একটা অভিযোগে, সেই বিষয় আদালতে আসার আগেই সেই মানুষটার ৬/৮/১০ মাস কি ৪/৫/৬ বছর কেটে গেল জেলে। এই তো ক’দিন আগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি এন সাইবাবা জামিন পেলেন, বহু মামলা থেকেও মুক্তি পেলেন, কিন্তু এই জামিনের আগেই তাঁর ৫ বছর জেল খাটা হয়ে গেছে। ওদিকে সোমা সেন, পাঁচ বছর পরে জামিন পেলেন, কেন? কারণ তাঁর বিরুদ্ধে প্রাইমা ফেসি এভিডেন্স, সাধারণ সাক্ষ্য প্রমাণও নেই। সিদ্দিকি কাপ্পন একজন সাংবাদিক, তিন বছর পরে জামিন পেলেন, জামিনের কথা শুনে তাঁর স্ত্রী বলেছিলেন, বাড়ি ফিরুক, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। কারণ এর আগে তিনি জামিন পেয়েছিলেন, জেল থেকে বের হওয়ার মুখে তাঁকে আবার গ্রেফতার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে প্রচার চলছে, ভারতের জমির ওপর যারা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে সেই চীনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন নিউজ ক্লিকের মালিক, একবারও তো আদানিকে ধরা হচ্ছে না যার পাকিস্তানে রমরম ব্যাবসা চলছে? আর ধরা হবেই বা কেন?

আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৪৭)

পাকিস্তান বা চীনের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ এমন কোনও আইন তো জারি হয়নি। কিন্তু দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না, তুই নয় তো তোর বাপ চোর বলে জেলে পুরে দিচ্ছে। এবং আকারে প্রকারে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বা আমাদের কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের মামলার চরিত্র প্রায় এক। বছর আড়াই আগে একজনকে ধরা হয়েছিল দিল্লি লিকার মামলাতে, বছর তিনেক আগে একজনকে আদালত যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছিল কলকাতায়। তিহাড় জেলের সেই অভিযুক্তের বয়ানের ভিত্তিতেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল এখনও জেলে, আর আলিপুর জেলের সেই সাজাপ্রাপ্ত ফোরটোয়েন্টির অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের সম্পাদক এখন জেলে। মোদিজি ভাষণ দিয়ে বেড়াচ্ছেন, বরং বলা ভালো চতুর্দিকে মিথ্যে বলে বেড়াচ্ছেন, তীব্র বিষ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন, এবং তাঁকে ঠান্ডা রাখার জন্য টন টন এসি লাগানো হচ্ছে মঞ্চে, সাহেব যেন ঘেমে না যান, উনি নাকি চা বিক্রি করতেন, উনি নাকি ফকির। এদিকে এই অসহ্য গরমে জেলে বন্দি নির্দোষ মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন, বিচার শুরুই হচ্ছে না, জেলের যাবতীয় কষ্ট সহ্য করছেন। এবার বিচারক অন্তত সেটা শুনলেন, বললেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার প্রক্রিয়া শেষ করব, জামিন দেওয়া যায় মনে করলে তা দেওয়াও হবে। আমরা জানি বিচার ব্যবস্থাতেও ঘুন লেগেছে, কিন্তু তারপরেও ইদানিং কিছু রায় দেখে আমাদের মনে হয়েছে সব শেষ হয়ে যায়নি, ফকিরের চুরি তো সামনে আনল এই আদালতই। তাই আমরা আমাদের সম্পাদকের মুক্তি চাইছি না, জামিনও চাইছি না, চাইছি জাস্টিস, জাস্টিস ফর অল সিটিজেন, জাস্টিস ফর ফোর্থ পিলার অফ দ্য স্টেট, জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।

দেখুন ভিডিও:

RELATED ARTICLES

Most Popular