দেবাশীষ দাশগুপ্ত, কলকাতা: তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের পিছনে চক্রান্ত দেখছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor C V Ananda Bose)। বৃহস্পতিবার এক মহিলা ওই অভিযোগ করার দুঘন্টা পর রাত সাড়ে নটা নাগাদ রাজভবন থেকে লিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, বানানো অভিযোগ নিয়ে মাথা ঘামাতে আমি রাজি নই। কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তুলে নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চায়, ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুন।
পরে রাজভবন সূত্রে আরও বলা হয়েছে, রাজ্যপাল গুন্ডা দমনে সক্রিয় হয়েছেন। রাজ্যের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজে পথে নেমেছেন। সম্প্রতি সন্দেশখালি নিয়েও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। এসব কারণেই কোনও কোনও শক্তি রাজ্যপালকে অপদস্থ করতে নেমেছে। রাজভবন সূত্রে এও জানানো হয়েছে, সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ঘটনার পর রাজ্যপালকে খুন করার হুমকি দিয়ে চিঠি এবং ইমেল এসেছে।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ (Appointment of Vice-Chancellors of State Universities) নিয়েও রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত চলছে। রাজভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, এসব নানা কারণে বিভিন্ন মহল থেকে রাজ্যপালকে হেনস্থা করার লাগাতার চেষ্টা চলছে।
রাজভবন আরও বলেছে, সেখানকার পিসরুম থেকে যেসব অভিযোগ নির্বাচন দফতরে পাঠানোর কথা ছিল, ওই মহিলা সেগুলি কোনও কোনও রাজনৈতিক দলকে পাচার করে দিতেন। এই কাজে তাঁকে তাঁর এক পুরুষ বন্ধু সাহায্য করতেন। নির্বাচন দফতর কোনও অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে। রাজভবন সূত্রের দাবি, এর পিছনে বড় চক্রান্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের
রাজ্যপাল বলেছেন, আমি দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছি, তার থেকে সরে আসার প্রশ্নই ওঠে না।
ওই মহিলা হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, ২৪ এপ্রিল এবং আজ নিয়ে দুবার রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, ২৪ এপ্রিল শ্লীলতাহানির পর তিনি আবারও আজ রাজ্যপালের দফতরে গেলেন কেন, কেনই বা এক সপ্তাহ পর অভিযোগ সামনে আনলেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শাসকদল অনেকদিন ধরেই লেগে রয়েছে। পাকাপাকিভাবে বোস রাজ্যপাল হয়ে আসার পর প্রথম প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা তাঁকে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। রাজভবনে সাক্ষাতের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, উনি ভালো মানুষ। ওঁর সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধে হবে না। রাজ্যপাল রাজভবনে বাংলা শেখার জন্য সরস্বতী পুজোর দিন হাতেখড়ি অনুষ্ঠান করেন। তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই বোসের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত শুরু হয়। তা এখন তুঙ্গে উঠেছে। তার মধ্যেই আজ এই ঘটনা ঘটল।
অন্য খবর দেখুন
