HomeআজকেAajke | রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ, আনন্দ বোসের বোকামি
Aajke

Aajke | রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ, আনন্দ বোসের বোকামি

এসবের দরকার ছিল মাননীয় রাজ্যপাল?

Follow Us :

একা রামে রক্ষে নেই সুগ্রীব দোসর। সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের পরে ফ্লাড গেট খুলে গেছে, মহিলারা প্রকাশ্যে এসেই বিবৃতি দিচ্ছেন যে গণধর্ষণ, রাতে পিঠেপুলি বানানো ইত্যাদি সবটাই বানানো, তাঁদেরকে বোকা বানানো হয়েছে, নিরক্ষর মহিলাদের ঠকানো হয়েছে ইত্যাদি। কংগ্রেসের পবন খেরা থেকে শশী থারুর, বাম বুদ্ধিজীবী অভিনেতা প্রকাশ রাজ থেকে ইউটিউবার ধ্রুব রাঠী তাঁদের মতামত দিচ্ছেন, মানুষকে জানাচ্ছেন ধর্ষণের অভিযোগ এনে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা হচ্ছিল। ওই ধর্ষণের অভিযোগের কথা নেই এমনকী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে, এখন তাঁরা বলছেন, কিছুই কি হয়নি? খুব বড় ব্যাপার ইত্যাদি। আর এই ষড়যন্ত্রের নীল নকশা বানানোর অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে সেই কাঁথির খোকাবাবুর তো নার্ভাস ব্রেকডাউন। তার উপরে আবার রাজ্যপাল এপিসোড এসে হাজির। এতদিন কিছু হলেই শুভেন্দু সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা ঢুকে পড়তেন রাজভবনে। সেখানেই আজ পিস রুম তো কাল গরমে স্যুট কোট পরে রাজ্যপালের সফর চলছিল। মনে হচ্ছিল এক্সটেনশন অফ মুরলীধর লেন, বিজেপির রাজ্য দফতর হয়ে উঠেছে রাজভবন। এখন ওনাদের মুখে আর রাজ্যপালের নামই নেই। তিনি ওই বড় একা লাগে এই আঁধারে বসে আছেন একা ওই রাজভবনে। লোডবো লোডবো বলে পরের দিন চলে গিয়েছিলেন দেশের বাড়িতে, আবার ফিরেছেন, ষড়যন্ত্র তুলে ধরতে ডাকলেন রাজ্যের মানুষকে, নাকি সচ কা সামনা। এক বিশুদ্ধ নৌটঙ্কি। সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ, আনন্দ বোসের বোকামি।

কলকাতায় ফিরেই আমাদের রাজ্যপাল দেখলেন তিনি একা, কারণ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা তো বাদই দিন, কাঁথির খোকাবাবু, সুকান্ত মজুমদার বা দিলীপ ঘোষও ছেড়েই দিন মুরলীধর লেনের কোনও পিওনও রাজ্যপাল ইস্যুতে মুখ খোলেননি, কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চায় বলো? কাজেই তিনিই নামলেন নিজেকে ডিফেন্ড করতে। কী করা সম্ভব ছিল? এটা বলতেই পারতেন যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যে, তদন্ত হলেই সত্যি বেরিয়ে আসবে, পুলিশ তদন্ত করুক আমি সরে দাঁড়াচ্ছি। এরপর মানে মানে সরে গেলে মুখরক্ষা হত।

আরও পড়ুন: Aajke | সন্দেশখালি থেকে রাজভবন পিঠেপুলির উৎসব চলছে

তিনি সেসব না করে লড়ব বলে মাঠে নামলেন। নাকি সিসিটিভি ফুটেজ বের করে মানুষকে দেখাবেন। কিসের সিসিটিভি? তিনি যে অফিসে বসেন তার ভিতরে ক্যামেরা আছে? তাঁর বুকপকেটে ক্যামেরা ছিল? আর মানুষকে দেখানোর কী আছে? পুলিশকে দিয়ে দিন, একটা কপি সিবিআইকে, পিএমওতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এই দেখুন আমি ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার। না, উনি বললেন পুলিশকে দেখাব না আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখাব না। কী কাণ্ড! দেখতে চেয়েছে কে? তাহলে দেখাবেন কাকে? পাবলিককে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে, প্রথম ১০০ জনকে উনি ফুটেজ দেখাবেন। তো সাকুলে ১০০ জন দেখতেও চায়নি। সে ছাড়ুন, আছে কি ওই ফুটেজে? রাজভবনের আউটপোস্ট, পুলিশের আনাগোনা আর সেই মহিলা বের হলেন, আউটপোস্টে গেলেন আর বের হলেন। তো এতে কী প্রমাণিত হল? কিছুই না। উল্টে আরও একটা অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে দায়ের হল, আপনি নির্যাতিতার ভিডিও পাবলিক করলেন, যা আইনত করা যায় না। আমরা ভেবেছিলাম উনি ওনার অফিসের, রাজভবনের করিডোরের ছবি দেবেন, নির্যাতিতা যে আসেনইনি তার প্রমাণ দেবেন, তা না করে এক অবান্তর ফুটেজ দেখিয়ে তিনি কী প্রমাণ করতে চাইলেন? প্রমাণ তো কিছুই হল না উল্টে আরও জড়িয়ে যাচ্ছেন আমাদের আনন্দ বোস। আমরা আমাদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, মহামান্য রাজ্যপাল নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পুলিশের হাতে ফুটেজ তুলে দিয়ে তদন্তের দাবি করলেই কি সবথেকে ভালো হত না? তার বদলে সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দেব না, মমতাকে দেব না ইত্যাদি বলে লোক হাসানোর ব্যবস্থা করলেন কেন? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।

রাজ্যপালের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়েই গেছে, নির্বাচন শেষ হলে তাঁকে সরে যেতেই হবে মিলিয়ে নেবেন। কিন্তু সেই প্রস্থান কিছুটা সন্মানজনক হতেই পারত, অন্তত লোক না হাসিয়ে এক নীরব প্রস্থানও তো হতেই পারত। কিন্তু কিছু মানুষের অভ্যেস হল জল ঘুলিয়ে খাওয়া, উনি এখন সেই জল ঘোলানোর কাজে নেমেছেন, পাঁক ছড়াবে, সর্বাঙ্গে লাগবে তারপর এক সাংবিধানিক প্রধানের অসন্মানজনক প্রস্থান বাংলার ইতিহাসে থেকে যাবে। বহুদিন পরে সে অধ্যায় উঠে আসবে আবার, আবার, আবারও। এসবের দরকার ছিল মাননীয় রাজ্যপাল?

RELATED ARTICLES

Most Popular