বেঙ্গালুরু: হিজাব বিতর্কের (Hijab Controversy) আঁচ থেকে বেঙ্গালুরু শহরকে দূরে রাখতে স্কুল-কলেজ চত্বরে জমায়েত-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হল। হিজাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনওরকম জমায়েত করা যাবে না। বুধবার এই মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) পুলিস কমিশনার কমল পন্ত (Section 144 of the Criminal Procedure Code )। নির্দেশিকা অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা (Karnataka Hijab Row) নিয়ে বিতর্কের জেরে পড়ুয়া বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে উঠছে কর্নাটক। স্কুল-কলেজ সহ রাজ্যের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। হিজাবের বিরোধিতায় গেরুয়া স্কার্ফ পরে পালটা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন হিন্দুত্ববাদী ছাত্ররা। বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালতেও (Karnataka High Court)। এই বিতর্কের মধ্যেই কর্নাটক সরকার ক্লাসরুমের ‘ড্রেস কোড’ (karnataka Dress code guideline) নিয়ে অবস্থা স্পষ্ট করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমতা বা শৃঙ্খলা নষ্ট হয়, এমন কোনও পোশাক পরা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় রাজ্য। কর্নাটক সরকারের এই নির্দেশ দিয়ে নানামহল থেকে সমালোচনাও হয়েছে। এমত অবস্থায় কর্নাটক হাইকোর্ট কী রায় দেয়, সে দিকেই তাকিয়ে সবপক্ষ। এ দিন সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলা উঠলে, তা বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতি কৃষ্ণ দীক্ষিতের মন্তব্য, স্বার্থান্বেষী কিছু ব্যক্তি এই ধরনের বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চায়।
এই বিতর্কের সূত্রপাত, গতমাসে, কর্নাটকের উদুপির পিইউ কলেজে। হিজাব পরে আসায় ছয় ছাত্রীকে ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে ওই ছাত্রীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। বিচারপতি এদিন মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়ে দিলেও তাঁর মন্তব্য, ‘আবেগ নয়, যুক্ত ও আইন দিয়ে এই মামলার বিচার হবে। বিচারের ক্ষেত্রে সংবিধানই শিরোধার্য।’
উদুপির পিইউ কলেজের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। হিজাবের বিরোধিতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেরুয়া স্কার্ফ পরে আসতে শুরু করেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। এই বিতর্কের জের ধরেই কর্নাটকের এক কলেজে জাতীয় পতাকা নামিয়ে গেরুয়া পতাকা তোলার অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন- Hijab Row: কর্ণাটকে হিজাব বিতর্কে ঘি ঢাললেন শিক্ষামন্ত্রী
বেঙ্গালুরু পুলিস কমিশানারের আশঙ্কা, যে কোনও সময় এই বিক্ষোভের আঁচ এসে লাগতে পারে শহরে। যে কারণে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। পুলিস কমিশনার বলেন, ‘সাধারণ মানুষের শান্তি যাতে বিঘ্নিত না হয়, তার জন্যই এই পদক্ষেপ।’ পুলিস কমিশনারের সই করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, সিআরপিসি-র ১৪৪(১) ধারায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গেটের ২০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনওরকম জমায়েত-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ।