কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মাত্র তিন ফুট উচ্চতা! মনে রয়েছে অদম্য জেদ। আর তাতেই মিলল সাফল্য। বামন হয়েও হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলেন গাট্টিপল্লী শিবপাল। শুধু তাই নয় দেশের প্রথম বামন ব্যক্তি হিসেবে তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে নজির গড়লেন।
শরীরিক গঠনের জন্য বেশির ভাগ সময়েই তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করত সকলে। ২০০৪ সালে প্রতিবন্ধী কোটায় গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করার পরও কম উচ্চতার জন্য মেলেনি চাকরি। প্রথমে বিনোদন জগতে নিজের কেরিয়ার তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন শিবপাল। একটি চলচ্চিত্র এবং একটি ধারাবাহিকে অভিনয়ও করেন। তবে, সেখানেও শিকে ছেঁড়েনি।
এরপর এক বন্ধুর সাহায্যে একটি প্রাইভেট সংস্থায় চাকরি পেয়েছিলেন। সেখানেই গত ২০ বছর ধরে মর্যাদার সঙ্গে কাজ করছেন শিবপাল। এরপরেও মেলেনি সমাধান। অফিসে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি বুক করলেও ড্রাইভাররা তাঁর উচ্চতা দেখে রাইড বাতিল করে দিত। স্ত্রীকে নিয়ে বাইরে গেলে কটু মন্তব্যের শিকার হতে হত তাঁকে। তখনই শিবপাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, একটি গাড়ি কিনবেন এবং নিজেই সেটি চালিয়ে সকলকে দেখিয়ে দেবেন।
আরও পড়ুন – উত্তরপ্রদেশে রাস্তা উদ্বোধনে বিপত্তি, নারকেলের ঘায়ে ভাঙল কোটি টাকার নতুন সড়ক
কিন্তু ড্রাইভিং শেখার ক্ষেত্রেও তাঁর উচ্চতা তাঁর প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ মাত্র তিন ফুট হওয়ার কারণে সাধারণ গাড়ির সিটে বসে তিনি সামনে কিছু দেখতে পান না। পাও পৌঁছায় না অ্যাক্সিলেটর-ব্রেক-ক্লাচ পর্যন্ত। এরপরেই ইন্টারনেট তাঁর জীবনের অন্যতম সমস্যার সমাধান করে দেয়। এক ভিডিয়ো দেখে তিনি জানতে পারেন, তাঁর উচ্চতায় গাড়ি চালাতে গেলে গাড়ির আসন এবং অন্যান্য সরঞ্জামে কী কী পরিবর্তনগুলি আনতে হবে।
এরপর একটি গাড়িকে প্রয়োজন অনুসারে মডিফাইও করেন শিবপাল। তারপর, ওই গাড়িতেই চালানো শিখেছিলেন। তাঁকে প্রথমে তিন মাসের জন্য একটি ‘লার্নার্স লাইসেন্স’ দেওয়া হয়। পরে, পরিবহন দফতরের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা দিয়ে এখন পূর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছেন গাট্টিপল্লী শিবপাল। বর্তমানে তিনি ঠিক করেছেন, এক বছরের মধ্যে তাঁরই মত বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ড্রাইভিং স্কুল খুলবেন। ইতিমধ্যেই সেই প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন তিনি।