নয়াদিল্লি: পূর্ব নির্ধারিত অবস্থান থেকে সরে এসে সংসদ ভবন অভিযান আপাতত প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সংযুক্ত কিসান মোর্ (Samyukt Kisan Morcha)। ২৯ নভেম্বর, শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিনই সংসদ অভিমুখে ট্রাক্টর র্যালি ( tractor rally) করার কথা ঘোষণা করেছিল সংযুক্ত কিসান মোর্চা। শনিবার মোর্চার তরফে কৃষক নেতা দর্শন পাল সিং (Farmer leader) বলেন, ‘আপাতত ২৯ নভেম্বর পার্লামেন্টের উদ্দেশে ট্রাক্টর র্যালি হচ্ছে না। দলীয় বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ সংযুক্ত কিসান মোর্চার এদিনের ঘোষণার পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বিজেপি-র সঙ্গে কৃষক নেতাদের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। যদিও কৃষক নেতৃত্ব এদিন আবারও স্পষ্ট করে দেয়, সংসদ অভিযান প্রত্যাহার করা হলেও কৃষকদের আন্দোলন আগের মতোই চলবে।
কেন্দ্রের আনা বিতর্কিত তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে সিঙ্ঘু বর্ডার-সহ দিল্লির সীমানা অঞ্চলগুলোয় এক বছর ধরে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের একাধিক সংগঠন। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যের কৃষক এই আন্দোলনে শামিল। অতিমারি উপেক্ষা করে, সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও তাঁবুর মধ্যে থেকে লড়াই জারি রেখেছেন। কৃষক নেতাদের বৈঠকে ডেকে মোদী সরকারের তরফে রফাসূত্র বের করার চেষ্টা হলেও দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি। অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আইন প্রত্যাহার কোনও সমাধান সূত্র নয়। এর বাইরে কৃষক নেতাদের কোনও প্রস্তাব থাকলে, কেন্দ্র তা বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু রাকেশ টিকায়েত সহ কৃষক নেতার নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন।
কৃষকদের এই সংগঠিত আন্দোলনের চাপে মোদী সরকারকে নরম হতে হয়। গুরুনানকের জন্মজয়ন্তীতে নরেন্দ্র মোদী সরকার কৃষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বিতর্কিত তিন কৃষি বিল বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন। জানান, সংসদের শীতকতালীন অধিবেশনেই কৃষি বিল বাতিল করা হবে। কৃষকদের উদ্দেশে আন্দোলন তুলে নেওয়ারও আর্জি জানান।
আরও পড়ুন-প্রশান্তের কৌশলী চালে কংগ্রেস-বিজেপির ঘর ভাঙিয়ে কর্ণাটকে ‘ডেবিউ’ করতে চায় তৃণমূল?
যদিও নরেন্দ্র মোদীর মুখের কথায় ভরসা রাখতে পারেননি কৃষক নেতারা। রাকেশ টিকায়েত সেই দিনই ঘোষণা করেন, ‘আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রশ্নই নেই। আগে আইনি প্রক্রিয়ায় কৃষি বিল প্রত্যাহার হোক। তার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংযুক্ত কিসান মোর্চা।’ টিকায়েত বলেন, ‘সরকার বিতর্কিত তিন কৃষি বিল বাতিল করার কথা বললেও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কোনও ঘোষণা করেননি। আমাদের আরও অনেক দাবি-দাওয়া রয়েছে। তা নিয়ে কেন্দ্র আগে আলোচনা করুক।’
অর্থাত্ সুর নরম না-করে, সংঘাতের পথেই হাঁটে কিসান মোর্চা। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই ট্রাক্টর র্যালির কর্মসূচি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। এদিন সংযুক্ত কিসান মোর্চার বৈঠকে সেই ঘোষিত কর্মসূচিই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।