কলকাতা: জনসংখ্যায় দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ রাজ্য মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের (Maharashtra Assembly Elections) দামামা বেজে গিয়েছে। চলতি মাসেই শেষ হয়ে যাবে মনোনয়ন পর্ব। যুযুধান দুই জোটেরই প্রস্তুতি ক্রমে তুঙ্গে উঠছে। চলতি সময়ে দেশের রাজনীতির পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভোট। যতই দিন এগোচ্ছে, ততই রাজনীতি সচেতন ভারতীয়দের নজর কেড়ে নিচ্ছে আরব সাগরের উপকূলে এই ধুন্ধুমার লড়াই।
অক্টোবরেই মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ECI)। ভোট হবে এক দফাতেই। ভোটগ্রহণ ২০ নভেম্বর ও গণনা হবে ২৩ নভেম্বর।
এবারের ভোটে ছ’টি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল পরস্পরের মুখোমুখি। ক’বছর আগেও কিন্তু বড় দলের সংখ্যা ছিল চারটি। দু’টি বড় দল ভেঙে চারটি দল তৈরি হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে।
২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে দু’টি যুযুধান জোট লড়েছিল। এনডিএ-তে ছিল বিজেপি ও শিবসেনা। ইউপিএ-তে বড় দু’টি দল ছিল জাতীয় কংগ্রেস ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি। ভোটে এনডিএ-র জয় হলেও সরকার গড়তে পারেনি তারা। কে মুখ্যমন্ত্রী হবে, তা নিয়ে বিরোধে শিবসেনা জোট ছাড়ে।
আরও পড়ুন: বাসস্থান চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ কেজরিওয়াল
রাষ্ট্রপতির শাসন চলে ২০১৯ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে মাসখানেক। এই অবস্থায় এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন এনসিপি বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানান। বিজেপি ও অজিত-পন্থী এনসিপি মিলে সরকার গড়ে ওঠে, বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী হন।
বিধানসভায় গরিষ্ঠতা প্রমাণের আগেই, দু’দিনের মধ্যে এই সরকার পদত্যাগ করে। এর পরে শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি জোট বাঁধে, নাম হয় মহাবিকাশ আঘাড়ি। এই জোটের সরকার হয়, মুখ্যমন্ত্রী হন উদ্ধব ঠাকরে।
উদ্ধব ঠাকরের সরকার অবশ্য বছর দুয়েকের মধ্যেই সঙ্কটে পড়ে। ২০২২ সালে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে শিবসেনা দলের অধিকাংশ বিধায়কই উদ্ধবের সংসর্গ ত্যাগ করে বিজেপির হাত ধরেন। উদ্ধব সরকার পড়ে যায়, একনাথ শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রিত্বে নতুন সরকার হয়। উপমুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। বছরখানেক পরে, ২০২৩-এ এনসিপি-তে আবার ভাঙন দেখা দেয়, অজিত পওয়ার সহ অনেক বিধায়ক দল ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেন। সরকারে অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী হন।
মাসকয়েক আগে হয়ে যাওয়া লোকসভা ভোটে এনডিএ-র তুলনায় প্রায় ডবল আসন জিতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাড়ি চাঙ্গা। আবার সরকার বাঁচাতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটও। ফোটোফিনিশের এই দৌড়ে কে প্রথম ছোঁবে দৌড়শেষের ফিতে, কে দাঁড়াবে ভিক্টরি স্ট্যান্ডে? তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র একটি মাস।
দেখুন অন্য খবর: