কলকাতা: ব্যবধানটা মাস ছয়েকের। ২ মে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল জোড়াফুল শিবির। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে প্রায় দেড় গুন বাড়ল সেই ভোট। উপনির্বাচনে ৪টি আসন বিপুল মার্জিনে জয় ছাড়াও রাজ্যের শাসকদলকে বড় স্বস্তি দিল ভোট শতাংশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ, নদিয়ার শান্তিপুর এবং কোচবিহারের দিনহাটা কেন্দ্রে সম্মিলিতভাবে ৭৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে জোড়াফুল শিবিরে। বড়সড় ধস নেমেছে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে। বিধানসভা নির্বাচনে ৩৮.১০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। আর চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তাদের প্রাপ্ত ভোট নেমে এসেছে ১৪.৫০ শতাংশে।
আরও পড়ুন: চার কেন্দ্রে ভরাডুবির পর ‘দিশাহীন’ সাংবাদিক সম্মেলন বিজেপির
বড় চমক রয়েছে অবশ্য অন্য জায়গায়। শান্তিপুর বাদে বাকি তিনটি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে দিনহাটায় ৫৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক। ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৫টি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। মাত্র ৬ মাসে সেই ভোট নেমে এসেছে ২৫ হাজার ৪৮৬-তে। তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ বিধানসভা নির্বাচনে পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৯৭৮টি ভোট। এবার তিনি পেলেন ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৭৫টি ভোট।
শান্তিপুর কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার জিতেছিলেন প্রায় ১৬ হাজার ভোটে। তিনি ১ লক্ষ ৯ হাজার ৭২২টি ভোট পেয়েছিলেন। এবার ওই কেন্দ্রে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৪৭ হাজার ৪১২। তৃণমূল উপনির্বাচনে পেয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৮৭টি ভোট। বিধানসভা নির্বাচনে যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৪৪। বাকি দুটি কেন্দ্র খড়দহ এবং গোসাবা তৃণমূলের দখলেই ছিল। উপনির্বাচনে আসন দুটি ধরে রাখা ছাড়াও জয়ের ব্যবধান অনেকটাই বাড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল।
আরও পড়ুন: মান্ডি লোকসভা এবং তিনটি বিধানসভা আসনে বিজেপিকে হারিয়ে হিমাচলে চমক দিল কংগ্রেস
এ বার প্রশ্ন হল, তৃণমূলের ভোট শতাংশ লাফিয়ে বাড়ার কারণ কী? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তেহারে উল্লিখিত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন। ভোটের প্রচারে গিয়ে মমতা বলেছিলেন লক্ষ্ণীর ভান্ডার, দুয়ারে রেশন সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কথা। ফলপ্রকাশের কয়েকমাসের মধ্যে সেগুলি চালু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এর একটা বড় প্রভাব উপনির্বাচনে পড়েছে।
উপনির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল নেতারা বারবার বলেছেন এই প্রকল্পগুলির কথা। সোনার বাংলার গড়ায় ডাক দিয়ে বিধানসভা ভোটের প্রচার করতে দিল্লি থেকে প্রায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা সহ গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা। ২ মের পর থেকে তাঁদের কারুর টিকিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপনির্বাচনের প্রচারে এই ইস্যুকেও হাতিয়ার করেছিল তৃণমূল। যার ফল হাতেনাতে পেয়েছে তারা।