ওয়েব ডেস্ক: চকোলেটে (Chocolate) একটা কামড় দিলেই মোমের মতো গলে যায় মন। চকোলেট (Chocolate) খেতে ভালবাসেন না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। তাইতো অনেকের ফ্রিজে (Fridge) ঠাসা থাকে মুঠো মুঠো চকোলেট (Chocolate)। মন ভাল হোক বা খারাপ ফ্রিজ থেকে বের করে টুক মুখে দেন অনেকেই। চকোলেট (Chocolate) খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় বা পরিমাণ দুইই ‘চকোলেট লাভারদের’ (Chocolate Lover) কাছে বৃথা। মেপে-ঝুপে কি আর চকোলেট খাওয়া যায়! আর চকোলেট ক্রেভিং (Chocolate Craving) হলে তো কথাই শেষ। একসঙ্গে যটা ইচ্ছে তটাই মুখে পুরে নেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) বিভিন্ন পোস্টে প্রায়ই একটি দাবি চোখে পড়ে। চকোলেট খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা নাকি শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের (Magnesium) অভাবের লক্ষণ। এর পরেই কেউ কেউ পরামর্শ দেন ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট (Magnesium Supplement) গ্রহণ করতে, কিংবা ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড মিশ্রিত জলে পা ভিজিয়ে রাখতে। আবার দেখা যায় ‘ক্যাডমিয়াম-মুক্ত’ ডার্ক চকলেট (Dark Chocolate and Honey) ও মধু খাওয়ার পরামর্শ।
চকোলেটে অবশ্যই ম্যাগনেশিয়াম (Magnesium) থাকে, কিন্তু শুধুমাত্র চকলেট (Chocolate) খাওয়ার ইচ্ছে থেকেই এটা প্রমাণ হয় না যে শরীরে এটির ঘাটতি রয়েছে। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আকাঙ্ক্ষার কারণ অনেক বেশি জটিল (Complicated)। এটি মানসিক চাপ, আবেগপ্রবণ খিদে, অভ্যাস অথবা মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে। চকোলেটের স্বাদ, গন্ধ এবং মুখে মোলায়েমভাবে গলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা একধরনের আনন্দদায়ক অনুভূতি তৈরি করে। বিশেষত, নারীদের ক্ষেত্রে মাসিকের আগে বা চলাকালীন হরমোন পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের ক্রেভিং দেখা যায়। তবে এর মানে এই নয় যে এটি শুধুই ম্যাগনেশিয়ামের অভাবের ইঙ্গিত।
আরও পড়ুন:মাওয়াঘাট স্টাইলে বাড়িতেই বানিয়ে নিন ইলিশের মুড়ো ভর্তা
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা কী?
ডা. রোমা কুমার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট সাইকোলজিস্ট (গঙ্গা রাম ও ম্যাক্স হাসপাতাল, দিল্লি) জানান, “চকোলেট খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেশিরভাগ সময়েই মানসিক ও আবেগঘন বিষয়। স্ট্রেস বা বিষণ্ণতায় কেউ কেউ চকলেটের মাধ্যমে সান্ত্বনা খোঁজেন। যখন এমন ঘটনা বারবার ঘটে, তখন মস্তিষ্ক সেটিকে এক ধরনের পুরস্কার হিসেবে মনে রাখতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে অভ্যাস তৈরি হয়। একে শুধু ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি বলাটা ঠিক নয়। সত্যিই যদি ম্যাগনেশিয়ামের অভাব হতো, তাহলে মানুষ আরও বেশি করে পালং শাক, বাদাম বা ছোলার মতো ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে চাইত।”
পুষ্টিবিদ ও গবেষক ডা. স্বাতী ডাভে ডা. কুমারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে জানান, “চকোলেট খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেই ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে এটা একেবারে সরলীকরণ।” প্রাকৃতিক অবস্থায় ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি খুবই বিরল। তবে দীর্ঘদিন অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান, অপুষ্টি, নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের ব্যবহার বা রোগ থাকলে শরীরে এটির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তখন ক্লান্তি, দুর্বলতা, পেশিতে টান ধরা, কিংবা হৃদস্পন্দনে অনিয়ম দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকলেও তা শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের শোষণ বাড়াতে সহায়ক নয়। চকোলেটের সঙ্গে মধু খাওয়াতেও বিশেষ কোনও পুষ্টিগুণ বাড়ে না।
দেখুন অন্য খবর