বারাসত: দত্তপুকুর কাণ্ডে (Duttapukur Case) ত্রিকোণ প্রেমের তথ্য উঠে এল পুলিশি তদন্তে। ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও দেহ উদ্ধারের পর তিনদিন হতে চলল এখনও কাটা মুণ্ড উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মিলেছে কাটা হাত। সঙ্গে সেই হাতে উল্কি। তবে দেহটি কার তা নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করেছিল পুলিশ। সূত্রের খবর, মাথা উদ্ধার না হলেও প্রাথমিক ভাবে মৃতের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ জানা যাচ্ছে, দেহটি হজরত লস্কর নামে এক ব্যক্তি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটার আঙুলকাটা গ্রামের বাসিন্দা হজরত লস্কর। বয়স আনুমানিক ৪০।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমের কারণেই খুন করে মাথা কেটে হাত পা কেরোসিন দিয়ে আংশিক পুড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে। পাশাপাশি আঘাত করা হয় মৃতের পুরুষাঙ্গে। বুধবার দুপুরে বারাসত স্টেশন চত্বর থেকে এক জনকে আটক করার পর প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। মৃত ও ধৃত উভয়ের বাড়ি গাইঘাটা থানা এলাকার। দত্তপুকুরের মালিয়াকুরের বেগুন ক্ষেতে কাদের সাহায্যে খুন করা হয়েছে সেই খোঁজ করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম ওবায়দুল মণ্ডল,বয়স ৩০।
সোমবার সকালে মাথা বিহীন দেহ উদ্ধার হওয়া স্থল দত্তপুকুরের মালিয়াকুর সহ আশপাশের এলাকায় যায় বারাসত জেলা পুলিশের তদন্তকারীরা। খোঁজ করে মাথা। পুলিশ সূত্রের খবর,বুধবার দুপুরে বিভিন্ন থানা এলাকার বেশ কয়েকজন নিঁখোজের পরিবার বারাসত জেলা হাসপাতালের মর্গে আসেন। তাদের মধ্যে গাইঘাটা থানা এলাকার আঙ্গুলকাটা গ্রামের বাসিন্দা হজরত লসকরের স্ত্রীও আসেন। রবিবার রাত থেকে হযরত নিঁখোজ। সূত্রের খবর,মৃতের হাতের উল্কি দেখে হযরতের স্ত্রী স্বামীকে চিনতে পারেন। সূত্রের খবর, হজরত লসকরের আদিবাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বেশ কয়েকমাস আগে হজরত বিয়ে করে গাইঘাটায় থানা এলাকায় এসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত। হজরতের স্ত্রীর বয়ান শোনার পর পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় মোবাইল ট্রাক করে মৃতের এক তুতো ভাই ওবায়দুলকে বারাসত স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ধরে। সূত্রের দাবি, ওবায়দুলকে পুলিশ ধরে জেরা করে খুনের ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে কি দেখা মিলবে শীতের? কী বলছে আবহাওয়া দফতর
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, প্রাথমিক ভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ধৃত ওবায়দুল তুতো ভাই মৃত হজরত হলে হলে অর্থ ও অন্যান্য জিনিসপত্রের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদের জেরেই খুন। তবে তদন্তকারীদের কাছে এখনও পরিস্কার নয় প্রমাণ লোপাট করতে খুনের পর মাথা কেটে নিয়ে হাত পা পোড়ানো এবং মৃতের যৌনাঙ্গে আঘাতের কারণ সম্পর্কে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত চুরি ছিনতাই এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর নামে একাধিক থানায় অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অকুস্থল থেকে একটি ঠান্ডা পানিয় ভর্তি বতল ,তিনটে রক্ত মাখা মদের গ্লাস উদ্ধার হলেও কেরোসিনের পাত্র মেলেনি। পাশাপাশি দেহ ময়নাদতন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মেলেনি মদের নমুনা। অর্থাৎ, খুনের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত এবং মৃতের জন্য ঠান্ডা পানিয় নেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীদের আরও দাবি, দেহ থেকে মাথা কাটতে ব্যবহার করা হয়েছিল খুব ধারাল অস্ত্র । পুলিশের বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, ধৃত ও মৃত তুতো ভাই হলে তারা দুষ্কৃতি কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে গাইঘাটা সহ বেশ কিছু থানায় অভিযোগও আছে। ওবায়দুলকে ধরলেও পুলিশের ধন্দ কাটছেনা। হযরতের হাতের উল্কিতে লেখা দু’টো ইংরেজি হরফ ও ত্রিকোণ সম্পর্কের মহিলা সম্পর্কে। সব প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে বারাসত জেলা পুলিশ।
বারাসত জেলা পুলিশের কোনও কর্তা ফোন ধরেননি।
অন্য খবর দেখুন