ওয়েবডেস্ক- হরমুজ প্রণালী (Strait of Hormuz) । ‘গ্লোবাল অয়েল লাইফলাইন’ (‘Global Oil Lifeline’) বলা হয় হরমুজ প্রণালীকে। এই সামুদ্রিক পথটি আন্তর্জাতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই পথটি খনিজ তেলবাহী জাহাজ চলাচলের এটিই একমাত্র পথ। বিশ্বব্যাপী পেট্রোলিয়াম পরিবহনে (petroleum transportation) প্রণালিটির কৌশলগত গুরুত্ব অত্যধিক। এদিকে যুদ্ধের আবহে হরমুজ প্রণালীই গোটা বিশ্বের কাছে আলোচনার বিষয় বস্তু হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ ইজরায়েল-ইরান (Israel-Iran) যুদ্ধে আঁচে বন্ধ হয়ে যেতে পারেন এই হরমুজ প্রণালী। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে সঙ্কট নেমে আসবে।
পারস্য উপসাগত থেকে হরমুজ প্রণালী হয়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাস সরবরাহ হয় গোটা বিশ্বে। ভারতের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব না পড়লেও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা। কারণ এই হরমুজ প্রণালী দিয়েই পরিবাহিত তেলের বেশিরভাগই এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যায়।
জাপানের আমদানিকৃত তেলের তিন-চতুর্থাংশ হরমুজের ওপর দিয়ে নিয়ে যায়। আর চীনের আমদানিকৃত তেলের অর্ধেকই আসে এই হরমুজ প্রণালী হয়ে। হরমুজ দিয়ে প্রতিদিন ২০ লক্ষ ব্যারেলের মতো তেলজাত দ্রব্য রফতানি হয়ে থাকে। এর সঙ্গে আছে তরলীকৃত গ্যাস।
আরও পড়ুন- ইরান-ইজরায়েলের উত্তেজনা রুখতে মুসলিম দেশগুলোর দল গঠন
এদিকে ইরানে সামরিক আঘাত করেছে আমেরিকা। ফলে বাণিজ্যিক দিতে পাল্টা বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ইরান। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে গোটা বিশ্বেই সঙ্কট নেমে আসবে। চাপে আছে ভারতও। ভারত দেশের তৃতীয় অপরিশোধিত তেল আমদানিকারী ও ব্যবহারকারী দেশ। এই প্রণালী বন্ধ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে চিন এবং এশিয়াকে। বাদ যাবে না ভারতও।
রবিবার এই প্রণালী বন্ধ করার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিল ইরানের সংসদ। তবে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। ইরানি সাংসদ ইসমাইল কোসারি জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ আপাতত বিবেচনাধীন রয়েছে। প্রয়োজন পড়লেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিদিন ভারতের প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ লক্ষ ব্যারেল তেল লাগে। এর মধ্যে প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আসে এই জলপথ হয়ে। কাজেই ইরান প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে সঙ্কটে পড়তে পারে ভারত। বাড়বে তেলের দাম। সৌদি আরব, ইরাক, কাতার, ইরান এবং কুয়েতের সিংহভাগ তেল রফতানি হয়ে থাকে এই প্রণালী দিয়ে।
কোনও যুদ্ধ বা সংঘাতের সময় ইরান কখনও প্রণালী অবরোধ করেনি। ১৯৮০-এর দশকে, ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়, উভয় দেশই প্রণালী দিয়ে যাওয়া জাহাজগুলিতে আক্রমণ করেছিল, কিন্তু যানবাহন চলাচল বন্ধ করেনি।
দেখুন আরও খবর-