কলকাতা: এসআইআর আবহে নেতাজি ইন্ডোরে (Netaji Indoor Stadium) বিএলএদের (Mamata Banerjee Meeting BLA) নিয়ে বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই বৈঠক যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।সোমবারের বৈঠক থেকে আসন্ন বিধানসভা ভোটের সুর বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিজেপি ও কমিশনের আঁতাঁতের অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “এবার কোনও পিকনিক হবে না। সব হবে একেবারে ২০২৬ এ জেতার পর। কর্মীরা দেখুন, নেতারা বুঝে নিন।” মমতা বলেন, “কী চলছে আর কী করা উচিত সেটা জানতে হবে। নির্বাচনে ২ মাস আগে ডেলিবারেট অ্যাটেম্পট। মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। অটোক্রেসি চলছে। BLO-দের দোষ নয়। কিন্তু দেখছিলাম কেন্দ্রীয় সরকারের বিএলও লাগিয়েছে। গায়ের জোরে দু’বছরের কাজ দু’মাসে করতে চাইছে।সরকার যাতে কাজ করতে না পারে। মতুয়া, তফসিলি, আদিবাসীদের ভোট থাকবে না। ৪৬ জন মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে অর্ধেকের বেশি হিন্দু।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, প্রতিদিনই বিএলও অ্যাপে নতুন নিয়ম বদলানো হচ্ছে, অথচ কোনও স্থায়ী SOP নেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে তিনি তাঁকে ‘অপরদার্থ’ বলে আক্রমণ করেন এবং বলেন, এমন স্বৈরাচারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তিনি আগে দেখেননি। বাংলায় থাকা বিহারবাসীদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “উত্তরপ্রদেশ, বিহারের যে বাসিন্দারা এখানে থাকেন, তাঁদের বলা হচ্ছে তাঁদের নাম কাটতে হবে। বিহারে ভোট না দিলে সম্পত্তির অধিকার দেবে না। ভুল। আপনারা যদি ওখানে ভোট না দেন, এখানে থাকেন, কাজ করেন, তাহলে আপনার সম্পত্তি নেওয়ার অধিকার নির্বাচন কমিশনের নেই। এটা আপনাদের সম্পত্তির অধিকার। বাংলায় থাকতে চাইলে ভোটার লিস্টে নাম তুলুন, বিহার থেকে নাম কাটুন।”
আরও পড়ুন: ২৫ ডিসেম্বরের আগেই আরও নামবে পারদ!
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি চক্রান্তকারী দল। দু’চোখে দুর্যোধন আর দুঃশাসন। যারা গান্ধীজির নাম কেটে দেয় তারা দেশকে কতটা ভালোবাসে জানা আছে।বাংলাকে জব্দ করতে চাইছে, ওদের স্তব্ধ করব। বিজেপি রইল পিছুর টানে, কাঁদবে তুমি কাঁদবে। আমরা যা লক্ষ্য করলাম ১.৫ কোটি নাম বাদ দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে দুষে মমতা বলেন, ২০০২ সালের তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে। নাম, ক্রমিক সংখ্যা খোঁজার জন্য উপায় নেই। বহু ভোটারকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এপিক নম্বর দিয়ে খুঁজে বের করার উপায় এতদিন ছিল না। ২০০২-এর নম্বরের সঙ্গে ২০২৫-এর নম্বরের সামঞ্জস্য নেই? এটা ক্রিমিনাল অফেন্স না? বিজেপি খোকাবাবুদের আবদার। হাত ঘুরিয়ে নারু পাব। বাংলাকে দখল করব। অসম্মান করব, বাংলার ইতিহাস ভুলিয়ে দেব। চালাকি! চালাকি দিয়ে মহৎ কাজ হয় না। মমতা বলেন, “প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বিজেপির অফিস থেকে যা বলে দেওয়া হচ্ছে, তা-ই চেঞ্জ করা হচ্ছে। আমি শুনেছি নির্বাচন কমিশনের অফিসের বিজেপির একটা এজেন্ট রেখে দিয়েছে।
বিজেপি ও কমিশনের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, “কলকাতা জেলা আগে অন্যরকম ছিল। আগে ১০০টি ওয়ার্ড ছিল। এখন ১৪৪টি। ২০০৯ সালে ডিলিমিটেশন হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন এক বারও কি ভেবেছেন? ভ্যানিশ কুমার বাবুরা… বিজেপির দালালেরা একবারও ভেবেছেন? বিএলও-দের নামে গালাগালি দেওয়ার আগে ট্রেনিং দিয়েছিলেন? পুরোটাই অপরিকল্পিত।আমাকে আপনারা ক্যাঁচকলা করবেন। যত কেস করবেন, করবেন। চাইলে গলাটাও কেটে নিতে পারেন। কিন্তু আমি মানুষের কথা বলব। তিনি আরও বলেন, ২৪ বার নির্দেশিকা বদলেছে। তোমরা কালপ্রিট, বিজেপি কালপ্রিট। পরিবারতন্ত্র করতে গিয়ে দেশ ভাসিয়ে দিচ্ছ। তোমরা কী জানো ভোট সম্পর্কে হরিদাস? ২০০৪ এ লোকসভা ছিল। ডিলিমিটেশন তার পর। সেটা মনে আছে? একটা ভোটার আরেকটায় চলে গেল। আগে ছিল আলিপুর। এখন ভবানীপুর। নতুন নতুন ওয়ার্ড ঢুকল। ম্যাপিং টাই তো ভুল। এটা ডেড ব্লান্ডার।এলাকায় এলাকায় শান্তিপূর্ণ মিটিং-মিছিল চলবে। বিএলএ-১, বিএলএ-২ যাঁরা আছেন, তাঁদের ডিসটার্ব করা চলবে না।”







