নয়াদিল্লি: দেশে উচ্চ শিক্ষার (Higher Education) মানোন্নয়নে বিশেষ করে তাকে আন্তর্জাতিক মানের (International Standard) করতে এবার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government)। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিকে মান্যতা দিয়ে এবার শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতে (India) শাখা খোলার অনুমতি কেন্দ্রের। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি (UGC) তরফে মিলবে অনুমোদন জানিয়েছে কেন্দ্র। এই মর্মে গাইড লাইন সহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক রাঙ্কিং এ প্রথম ৫০০- র মধ্যে থাকা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই ওই সুযোগ দেওয়া হবে।
এতদিন পর্যন্ত বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক বন্দোবস্তের বা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হতো। নতুন শাখা বা ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে ইউজিসির কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন পর্যবেক্ষণের জন্য ইউজিসি একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করবে। সেই স্ট্যান্ডিং কমিটি আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বিচার করবে। স্ট্যান্ডিং কমিটি এই কাজে সংশ্লিষ্ট উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তার অসাধারণ অবদান, প্রতিষ্ঠানের চালিকাশক্তি, গবেষণার ক্ষমতা ও অবদান, প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাস সহ একাধিক ক্ষেত্র পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে। ওই পর্যবেক্ষণে কমিটির সন্তুষ্ট হলে তারপর পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিজেদের প্রস্তাব ইউজিসির কাছে পাঠাবে অনুমোদনের জন্য।
আরও পড়ুন: প্রয়াত বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া
ইউজিসি অনুমোদনে সম্মতি দিলে বা সবুজ সংকেত দিলে বছর দুয়েকের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ দেশে তাদের ক্যাম্পাস তৈরি শুরু করবে। পড়াশুনোর কোর্স ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভারতের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে হবে। পঠনপাঠন চালু করার আগে নিজেদের প্রসপেক্টাসে এবং ওয়েবসাইটে ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ফ্রি সংক্রান্ত তথ্য তা রিফান্ড বা মকুব সংক্রান্ত তথ্য, বিষয়ভিত্তিক কোর্সের আসন সংখ্যা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য রাখতে হবে। বিদেশে নিজেদের মূল প্রতিষ্ঠানে যেভাবে পড়াশোনা হয় ভারতের মাটিতেও ঠিক সেই ভাবেই পড়াশোনা ব্যবস্থা চালাতে হবে ওই প্রতিষ্ঠানগুলিকে। যেহেতু ভারতেই নতুন শাখা বা ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে তাই সেখানে সংশ্লিষ্ট উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান কোনও মুক্ত বা দূর-শিক্ষার মাধ্যমে পড়াশুনো করাতে পারবে না। কিন্তু বিদেশে কোন অধ্যাপকের কোন লেকচার বা ভাষণ প্রয়োজনে শুধুমাত্র দশ শতাংশই অনলাইনে দেখাতে পারবেন তারা। বাকিটা ক্যাম্পাসে শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে পড়াশোনার মাধ্যমে করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসির অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কোন কোর্স এমনকি প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইচ্ছায় বন্ধ করতে পারবে না।
এতদিন পর্যন্ত বিদেশের বা আন্তর্জাতিক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক এবং বিশেষ করে ছাত্র হস্তান্তর বা স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে পড়ুয়াদের বিদেশে গিয়ে বা এদেশে এসে পড়ার সুযোগ থাকতো। শুধু তাই নয় অনেকেই স্কলারশিপ নিয়ে সরাসরি বিদেশি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিও হতেন। কিন্তু কেন্দ্রের নয়া সিদ্ধান্তে ফলে এবার আর বিদেশে গিয়ে নয়, দেশে থেকেই প্রথমসারির বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনোর সুযোগ থাকছে পড়ুয়াদের কাছে।
আরও খবর দেখুন