সিঙ্গাপুর–১ ভারত–১
(ইকসান ফান্ডি) (আশিক কুরুনিয়ন)
ফিফা র্যাংকিংয়ে ভারতের থেকে তারা অনেক পিছিয়ে। তিন দিন আগে ভিয়েতনামের কাছে হেরে গেছে চার গোলে। সেই সিঙ্গাপুরকেই হারাতে পারল না ভারত। শনিবার ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে হাং থিন টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ভারতকে অপ্রস্তুত করে ৩৭ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল সিঙ্গাপুরই। ফ্রি কিক থেকে গোল করেন ইকসান ফান্ডি। কিন্তু থং নিহাট স্টেডিয়ামে বিরতির আগেই ৪৩ মিনিটে আশিক কুরুনিয়ন গোল শোধ করে দেন। শেষ ৪৫ মিনিটে দু দলই গোল করার জন্য মরিয়া হয়। এবং দু দলের কাছেই গোল করার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতায় কোনও দলই গোল করতে পারেনি। তিন দলের টুর্নামেন্টে আলাদা করে কোনও ফাইনাল হবে না। তিনটি ম্যাচের পর যে দলের পয়েন্ট বেশি হবে তারাই চ্যাম্পিয়ন। ভারতকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আগামি মঙ্গলবার হারাতেই হবে ভিয়েতনামকে।
২০০২ সালে বাইচুং ভুটিয়ার নেতৃত্বে ভারতীয় দল ভিয়েতনাম থেকে এল জি কাপ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছিল। ফাইনালে ভিয়েতনামকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল ভারত। ভারতের পক্ষে দুটি গোল করেছিলেন বাইচুং। অতিরিক্ত সময়ে অভিষেক যাদবের গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। যে স্টেডিয়ামে ভারত ফাইনাল খেলেছিল সেই থং নিহাট স্টেডিয়ামেই এদিন খেললেন সুনীল ছেত্রীরা। ভারতের সেই দলের ডিফেন্ডার মহেশ গাউলি এখন ইগর স্টিমাকের সহকারি কোচ। আর সেই চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ স্টিভন কনস্ট্যানটাইন এখন ইস্ট বেঙ্গলের কোচ। এই আবহে মাত্র দুই দিন প্র্যাক্টিস করে স্টিমাকের ভারত গেছে ভিয়েতনামে দুটো ম্যাচ খেলতে। শেষ তারা খেলেছিল জুন মাসে। এশিয়ান কাপের তিনটি ম্যাচ খেলার পর আবার এদিন দল নামল। ভারতের গোলে ছিলেন গুরপ্রীত সিং সান্ধু। চার ব্যাক রোশন সিং, আনোয়ার আলি, নরেন্দ্র এবং আকাশ থাপা। চার মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা, শেখ আব্দুল সাহাল, জিকসন সিং এবং লিস্টন কোলাসো। দুই ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রী এবং আশিক কুরুনিয়ন। ভারতীয় দলের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রা প্রথম থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যে ভেদ শক্তি থাকলে বিপক্ষের ডিফেন্স ভাঙা যায় তা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। তার উপর কদিন আগেই ডুরান্ড কাপ খেলে ভিয়েতনামে গেছেন ফুটবলাররা। সেই ধকল এখনও ফুটবলারদের শরীর থেকে মুছে যায়নি। তাই সিঙ্গাপুরের শক্তি ভারতের চেয়ে খাতায় কলমে অনেক কম হলেও তারাই ম্যাচের দখল নিতে শুরু করে।
এবং বিরতির আগে প্রথম গোলটিও তাদের। ফ্রি কিক থেকে মিডফিল্ডার ইকসান ফান্ডির শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে এমন বাঁক খায় যে গুরপ্রীত সিং ডাইভ দিয়েও বল বাঁচাতে পারেননি। ম্যাচের বয়স তখন ৩৭ মিনিট। ছয় মিনিটের মধ্যে ভারত অবশ্য গোলটা শোধ করে দেয়। সুনীল ছেত্রী বল বাড়ান আশিক কুরুনিয়নকে। দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে ঢুকে আশিক ঠান্ডা মাথায় জোরালো শটে গোল শোধ করেন। দ্বিতীয়ার্দ্ধে ভারত বেশ কয়েকটি আক্রমণ তুলে আনে। বিশেষ করে বাঁ দিক থেকে লিস্টন কোলাসো খুবই ভাল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু দুর্বল শট নেওয়ায় সেই আক্রমণগুলো থেকে গোল হয়নি। শেষ দিকে সুনল ছেত্রীকে বসিয়ে ঈশান পন্ডিতা এবং কোলাসোকে বসিয়ে উদান্ত সিংকে নামান স্টিমাক। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। আশিকের বদলি কে পি রাহুলও সুবিধে করতে পারেননি। রাইট ব্যাক রোশন নাওরেমের বদলি হরমোহনজ্যোত খাবড়া নেমেও আক্রমণে তেমন লাভ হয়নি। আসলে ভারতীয় দলে প্রবীণ সুনীল ছেত্রী থাকলেও ভাল গেমমেকার নেই। নেই ছটফটে স্ট্রাইকার। তাই ১০৪ নম্বর দেশ ভারত ১৫৯ নম্বরের সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও জিততে পারে না।