আগরতলা: ত্রিপুরায় বাম-কংগ্রেস (Left Front & Congress alliance) আসন সমঝোতা নিয়ে জট কাটল। কংগ্রেস (Congress) প্রথমে ১৭টি আসন চেয়েছিল। সিপিএম(CPM) তাদের ১৩টির বেশি আসন ছাড়তে চায়নি। শেষে কংগ্রেস ১৭টি আসনেই প্রার্থী দেয়। বামেরা নির্দলের জন্য একটি ছেড়ে ৫৯টি আসনেই প্রার্থী দিয়ে দেয়। তাঁরা মনোনয়নপত্রও (nominations filed) জমা দেন। তবে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা জারি ছিল। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। কংগ্রেসের চার প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। একই ভাবে কংগ্রেসের জন্য ছাড়া ১৩টি আসন থেকে বামেরাও প্রার্থী তুলে নেয়। কংগ্রে্সের দাবি মেনে তফসিলি সংরক্ষিত পাবিয়াচেরা আসনটি বামেরা তাদের ছেড়ে দিয়েছে। দুই পক্ষই দাবি করেছে, বিজেপিকে হঠানোর লক্ষ্যেই বাম এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি এক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে সিপিএমের রাজ্য কমিটির জরুরি বৈঠক বসে। সেখানেই স্থির হয়, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পুরনো ফর্মুলাই মেনে নেওয়া হবে বৃহত্তর স্বার্থে। বামেরা শুক্রবার কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দেওয়া ১৩টি আসন থেকে প্রার্থী তুলে নেবে। পক্ষান্তরে কংগ্রেসও বামেদের চারটি কেন্দ্র থেকে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করবে। শুক্রবারও দুই দল দফায় দফায় বৈঠক করে। সেই বৈঠকগুলিতেই জট খোলে। স্বস্তি পান বাম এবং কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা।
এবার অনেক আগে থেকেই ত্রিপুরায় বাম এবং কংগ্রেসের আসন সমঝোতা নিয়ে কথা হচ্ছিল। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কারও সঙ্গে প্রাক নির্বাচনী জোট করবে না। তবে আসন সমঝোতা করা যেতে পারে। সেই সিদ্ধান্তমতোই সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বামেরা কংগ্রেসকে ১৩টির বেশি আসন ছাড়তে চায়নি। আবার কংগ্রেস ১৩টিতে সন্তুষ্ট ছিল না। তারা ১৭টি আসন চায়।
একটা সময় আলোচনা ভেস্তে যায়। কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক থেকে মাঝপথেই আগরতলায় চলে যান দলের পলিটব্যুরো সদস্য এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি আগরতলায় গিয়ে দলীয় সতীর্থদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কথা বলেন কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গেও। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারান ইয়েচুরি দিল্লিতে কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ইতিমধ্যে বামেরা ৫৯টি আসনেই প্রার্থী দেয়। কংগ্রেসও ১৭টিতে প্রার্থী দেয়। অবশেষে জট কাটে শুক্রবার।
এখন বাম এবং কংগ্রেস যৌথভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাবে কি না, তা নিয়ে কথা শুরু হয়েছে। ত্রিপুরার সিপিএম নেতৃত্বের বড় অংশ চাইছে, আসন সমঝোতা যখন হল, তখন আর যৌথ প্রচারে আপত্তি কেন। কংগ্রেসও সেটাই মনে করছে।