কলকাতা: সরকারের উতসশ্রী পোর্টালে (Portal) শিক্ষকদের বদলির (Transfer) ফলে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভাব দেখা দিয়েছে। বিধানসভার (WB Assembly) বিদ্যালয় শিক্ষা (School Education) সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির (Standing Committee) রিপোর্টে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এরকম চলতে থাকলে গ্রামীণ স্কুলগুলির শিক্ষা পরিকাঠামো (Infrastructure) ভেঙে পড়তে পারে।
২০২১-২২ এবং ২০২৩ সালের যে রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ওই পোর্টালের মাধ্যমে গ্রামের স্কুল থেকে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা শহরে (City) চলে এসেছেন বদলি নিয়ে। ফলে গ্রামের স্কুলগুলি শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে।
আরও পড়ুন:Calcutta High Court: গণধর্ষণের মামলায় তদন্তে গাফিলতি, আদালতের তোপের মুখে পুলিশ
গত বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে কমিটি দেখেছে, মোট ২৭৫০৬ জন শিক্ষিকা নিজ নিজ জেলায় বদলির সুযোগ পেয়েছেন ওই পোর্টালের মাধ্যমে। প্রাথমিকে ৯২২১ জন, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ১৮২৮৫ জন বদলি নিয়েছেন। ওই তারিখ পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরে সাধারণ সেকশনে ৫১৬৭২ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৫৯২৯টি শূন্য পদ রয়েছে। এছাড়া আদালতের নির্দেশে যেভাবে বেনিয়মের জন্য চাকরি যাচ্ছে, সেটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয় বলে স্ট্যান্ডিং কমিটি মনে করে। কমিটি বলছে, এরকম চলতে থাকলে গ্রামীণ শিক্ষার পরিকাঠামো একেবারে ভেঙে পড়বে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টও এই প্রকল্পে বদলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিকবার। বিচারপতি বিশ্বজিত বসু বলেন, গ্রাম থেকে যদি সকলেই শহরের স্কুলে বদলি নিয়ে চলে আসেন, তবে আর গ্রামের স্কুলগুলি চলবে কী করে। তিনি রাজ্য সরকারকে ওই পোর্টালে আপাতত বদলি বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন। সেইমতোই এখন উতসশ্রীতে এখন বদলি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিচারপতি শিক্ষা দফতরকে আরও বলেছেন, যে সব স্কুলে পড়ুয়া বেশি, শিক্ষক নেই, সেখানে শিক্ষক দিন। আর যেখানে পড়ুয়া কম, শিক্ষক বেশি, সেখান থেকে শিক্ষকদের অন্যত্র পাঠান। তিনি এক বদলির আবেদনকারীকে কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, আগে ছাত্রছাত্রীদের ভালো করে পড়ান। তাদের কথা ভাবুন। তারপরে বদলির কথা ভাববেন।