সিউড়ি: তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও বোমাবাজিতে পা উড়ে গেল এক যুবকের। ঘটনায় গুরুতর জখম আরও এক নাবালক। আহতদের নাম শেখ সাদ্দাম হোসেন। তাঁর ডান পা সম্পূর্ণ উড়ে গিয়েছে। আর একজনের নাম শেখ মোজাফর হোসেন। আহত দুজনকেই সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার বহড়াপুর গ্রাম এলাকায়। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সাইথিয়া ব্লকের তৃনমুলের কার্যকরী সভাপতি তুষারকান্তি মণ্ডল গোষ্ঠীর বাবু শেখ নামে এক ব্যক্তি এদিন বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বাতাসপুর রেল স্টেশনে গিয়েছিলেন। সেই সময় সাঁইথিয়া ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সাবের আলির লোকজন বাবু শেখকে বেঁধে রেখে মারধর করে বলে অভিযোগ। সেই খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যায় শেখ সাদ্দাম হোসেন ও শেখ মুজফফর হোসেন। সেই সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে এলোপাথাড়ি বোমাবাজি। সেই বোমায় ডান পা উড়ে যায় সাদ্দামের। জখম হয় মুজফফরও। তাঁদের উদ্ধার করে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:BjP Dengue Rally: ডেঙ্গি নিয়ে বিজেপির মিছিলে ধুন্ধুমার কলকাতায়, আটক বিক্ষোভকারীরা
আহত সাদ্দামের বাবা শেখ মহম্মদ আলির বলেন, দিন কয়েক আগে ব্লকের কার্যকরী সভাপতি তুষারকান্তি মণ্ডল এলাকায় মিটিং করতে গেলে তাঁকে মারধর করে ব্লক সভাপতি সাবের আলির লোকজন। সেই সময় থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। আমরা তুষারকান্তি মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ। সেই কারণেই আজ আমাদের উপর বোমাবাজি করে হামলা চালানো হল। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সাঁইথিয়া ও সিউড়ি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। এখনও গ্রামে পুলিশের টহলদারি চলছে। উদ্ধার করা হয়েছে বেশকিছু তাজা বোমা। বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।
এমনিতেই বীরভূম জেলা জুড়ে বোমা উদ্ধার প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় চলছে শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ। কখনও জেল থেকে, কখনও আদালত চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দলীয় নেতাদের এক হয়ে চলার কথা বললেও তাতে যে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না, এই সব গোষ্ঠী সংঘর্ষই তার টাটকা প্রমাণ। কেষ্টহীন বীরভূম কার্যত এখন নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ২৬ নভেম্বর দলের সর্বস্তরের নেতাদের কলকাতায় বৈঠকে ডেকেছে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা ছাড়াও জেলার সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতাদেরও ডাকা হয়েছে বৈঠকে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রত ছাড়া পাওয়ার আশা ক্ষীণ ধরে নিয়েই রাজ্য নেতৃত্ব বীরভূমের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চান।
এদিকে, বীরভূমের মাড়গ্রামে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি সহ ৬৫ জন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির বীরভূম জেলার সহ সভাপতি স্বরূপ রতন সিনহা।