কলকাতা: রাজ্য-রাজ্যপাল (Governor Jagdeep Dhankhar) সংঘাতের জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta HC)। জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) অপসারণের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে। মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের (Ramaprashad Sarkar) অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সংবিধানের ঊর্ধ্বে গিয়ে, সংবিধান বর্হিভূত কাজ করছেন। এমত অবস্থায় তাঁকে সাংবিধানিক প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, উনি বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের মুখপত্র হিসাবে কাজ করছেন। শাসকদলের তরফেও এই অভিযোগ একাধিক বার করা হয়েছে।
রাজ্যপাল যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে নষ্ট করছেন বলেও মামলার অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে। আদতে এই অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। মুখ্যমন্ত্রী শুধু রাজ্যপালকে নন, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলে একাধিক বার সরব হয়েছেন। মামলাকারীর দাবি, অবিলম্বে রাজ্যপালকে তাঁর এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। হাইকোর্ট সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে মামলার সকলপক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুক্রবার এই জনস্বার্থ মামলাটির শুনানি হতে পারে।
বিগত দিনগুলিতে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত ক্রমশ তীব্রতর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কাউকেই রেয়াত করেননি রাজ্যপাল। নানা ইস্যুতে টুইট করে প্রকাশ্যেই রাজ্যের সমালোচনা করেছেন। রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই বলেও অভিযোগ করেছেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পালটা সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল। রাজ্যপালকে বিজেপি-র মুখপাত্র বলে খোঁচা দিতেও কুণ্ঠা করেনি বাংলার শাসকদল। রাজ্যপালের ভূমিকায় বিরক্ত হয়ে তাঁকে টুইটারে ব্লকও করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনা নজিরবিহীন। বিরোধের সূত্র ধরে, রাজ্যপালকে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি মমতা।
আরও পড়ুন UP Election 2022: বিজেপির ইস্তাহারে ‘লাভ জিহাদ’! ১০ বছরের শাস্তির সঙ্গেই ১ লক্ষ টাকা জরিমানা
শুধু মমতা নন, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও রাজ্যপালের সম্পর্ক তলানিতে। যার অন্যতম কারণ, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল রাজভবনে পড়ে থাকার অভিযোগ। রাজ্যপাল বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন, তা নিয়েও লোকসভার স্পিকারের কাছে নালিশ করা হয়েছে। যদিও রাজ্যপাল শাসকদলের এই অভিযোগ খারিজ করে জানান, তাঁর কাছে কোনও ফাইল পড়ে নেই। শাসকদল তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।