কেতুগ্রাম: শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ছড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তার মধ্যেই বহু স্কুল (School) ধুঁকছে শিক্ষকের অভাবে। কোথাও শিক্ষক আছেন তো ছাত্র নেই, আবার কোথাও ছাত্র আছে তো শিক্ষক নেই। ইতিমধ্যেই বহু স্কুল উঠে গিয়েছে। আরও অনেক স্কুল উঠে যাওয়ার মুখে। এই পরিস্থিতিতেই সামনে এল পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) কেতুগ্রামের (Ketugram) কনকলতা জুনিয়র গার্লস স্কুলের দুর্দশার চিত্র। পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে সামান্য মাসোহারার ভিত্তিতে স্থানীয় দুই যুবক-যুবতীকে দিয়ে কোনওরকমে স্কুলের কাজ চালানো হচ্ছে।
কেতুগ্রামের (Ketugram) ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে। স্কুলে স্থায়ী শিক্ষিকা বলতে মাত্র ২ জন। এক ক্লাসে পড়া দিয়ে অন্য ক্লাস সামলাতে ছুটতে হয় ওই দুই শিক্ষিকাকে(Teacher)। অধিকাংশ দিনই উড়ো ক্লাস হয় না। নিয়ম করে টিফিনের পর মিড-ডে মিল খেয়েই পড়ুয়ারা বাড়ি চলে যায়। স্কুলও ছুটি হয়ে যায়। স্কুলে নেই কোনও শিক্ষাকর্মী। ফলে ঘণ্টা বাজানোর কাজও সারতে হয় ওই দুই শিক্ষিকাকে। স্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত একদিনও অঙ্কের ক্লাস হয়নি।
আরও পড়ুন:Kunal Ghosh: শিক্ষা দুর্নীতি, উত্তরপ্রদেশে ইডি হানা নিয়ে ধর্মেন্দ্র প্রধানের জবাব চাইলেন কুণাল
২০১০ সালে স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পায়। শুরুর দিকে ঠিকঠাক চললেও কয়েক বছর যেতে না যেতেই শুরু হয় শিক্ষক শিক্ষিকার অভাব। সমস্যা দেখা দেয় পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনে। বর্তমানে এই স্কুলে ৩১৭ জন ছাত্রী রয়েছে। সেই তুলনায় কম শিক্ষক শিক্ষিকা। অভিযোগ, শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও কোন লাভ হয়নি। শেষপর্যন্ত অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের লেখা পড়ার কথা ভেবেই এলাকার দুই শিক্ষিত যুবক-যুবতীকে সামান্য মাসোহারার বিনিময়ে অলিখিতভাবে স্কুলে নিয়োগ করে। তাতেও অবশ্য সমস্যার সামাধান হয়নি। অধিকাংশ ক্লাসই ফাঁকা থেকে যায়। নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় ছাত্রীদের একটা বড় অংশ প্রায়ই স্কুলে আসে না। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রাজলক্ষী মণ্ডল জানান, স্থানীয় দুই শিক্ষিত যুবক-যুবতীকে সামান্য টাকার বিনিময়ে রাখা হয়েছে। স্কুল এবং অভিভাবকরা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিয়মিত পঠন-পাঠন যে ব্যহত হচ্ছে তাও স্বীকার করে নেন প্রধান শিক্ষিকা। কেতুগ্রাম (Ketugram) চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক কুন্তল দত্ত জানান, এই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের অনুমোদন হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত তাঁদের নিয়োগ হয়নি। তবে তিনি বলেন, মাসোহারার ভিত্তিতে এইভাবে কাউকে ছাত্রী (Student) পড়ানোর জন্য রাখা যায় না। সব শুনে মহকুমা শাসক অর্চনা পি ওয়াংখেড়ে বলেন, বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানাব।