বগটুই: সিবিআই তাঁকে হুমকি দিয়েছিল বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন নিহত লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, সিবিআই অফিসাররা আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। আমার কাছে টাকাও চাওয়া হয়েছিল। সিবিআই ক্যাম্প অফিসের সামনে বসে রেশমা বলেন, গ্রামে নিয়ে যাওয়ার আগে লালনকে সিবিআই অফিসাররা ব্যাপক মারধর করেন। যে অফিসাররা আমার স্বামীকে মারধর করে মেরে ফেলেছেন, তাঁদের আমি ফাঁসি চাই। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার চাইছি আমি। লালন-রেশমার মেয়ে জানান, সোমবার লালনকে গ্রামে নিয়ে এসেছিল সিবিআই। তখন অফিসাররা তাঁকে বলেন, বাবাকে আজই শেষ দেখা দেখে নে। এরপর আর দেখতে পাবি না। মঙ্গলবার রেশমা ময়না তদন্তের পর লালনের দেহ নিতে অস্বীকার করেন। সব মিলিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে গোটা বীরভূমে।
সোমবার সন্ধ্যায় রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচালয়ে লালনের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ছিল। তারপর থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে বগটুই গ্রাম সহ গোটা রামপুরহাট। লালনের আত্মীয়স্বজন এবং তৃণমূলকর্মীরা রাতে পথে নামেন। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে থেকে ফের অবরোধ শুরু হয়। সিবিআই ক্যাম্প অফিস ঘেরাও করা হয়। সেখান থেকে সিবিআই অফিসার এবং কর্মীদের বেরোতে বা ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের গাড়িকেও আটকে দেওয়া হয়। সকাল থেকে অবরোধ চলে জেলার বিভিন্ন অংশে। অনেক জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে জোর করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে উন্মত্ত জনতা। ওই শিবিরের সামনে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ব্যারিকেড বসানো হয়। জনতা সেই ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। দফায় দফায় জনতার সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের ধস্তাধস্তি চলে। রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত।
আরও পড়ুন:Mamata Banerjee: সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলনেত্রী
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সিবিআই হেফাজতে থাকা বগটুই-কাণ্ডে ধৃত জাহাঙ্গির শেখকে নয়দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে এদিন রামপুরহাট মহকুমা আদালত। গত ৬ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড থেকে সিবিআই জাহাঙ্গিরকে গ্রেফতার করে। লালনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ৩ ডিসেম্বর।