বাঁকুড়া: অসুস্থতার কারণে স্কুল আসতে পারেননি স্কুলের একমাত্র শিক্ষক। স্কুলের পঠনপাঠন সামাল দিতে ছুটলেন স্কুল পরিদর্শক। স্কুল আছে, রয়েছে পড়ুয়াও আছে শিক্ষক কিন্তু তা একজনই। স্কুলের একমাত্র শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্কুলের পঠনপাঠন সামালাতে অফিসের কাজ ফেলে স্কুলে ছুটলেন স্কুল পরিদর্শক। মিড ডে মিল থেকে শুরু করে পঠনপাঠন সবই সামাল দিলেন শিক্ষা দফতরের ওই আধিকারিক। এমনই ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষকের অভাব রয়েছে গ্রাম বাংলার অনেক প্রাথমিক স্কুলে। এর জেরে প্রাথমিকস্তরের পঠনপাঠনে ছাত্রছাত্রীদের একটু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কেন, এই সমস্যার প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের বাঁকুড়া সদর পূর্ব সার্কেলের অধীনে রয়েছে ৯৯টি প্রাথমিক স্কুল। এর মধ্যে বেশিরভাগ প্রাইমারি স্কুলের অবস্থান বাঁকুড়া শহরে। এই সার্কেলের আওতায় রয়েছে শহর লাগোয়া পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অল্প সংখ্যক প্রাথমিক স্কুল। পড়ুয়ার অভাবে শহরের প্রাথমিক স্কুলগুলি ধুঁকলেও সেখানে শিক্ষক শিক্ষিকার কোনও অভাব নেই। অথচ শহর লাগোয়া অনেক গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকা পর্যাপ্ত নেই।
আরও পড়ুন: ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি, শনিবার থেকে বাড়বে পরিমাণ, জানাল আবহাওয়া দফতর
বাঁকুড়া শহরের অদূরে পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন একজন শিক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এই অবস্থায় স্কুলে এসেও বাড়ি ফিরে যেতে হত পড়ুয়াদের। কিন্তু সেই খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের দফতরের কাজ ফেলে ওই স্কুলে ছুঁটতে হল বাঁকুড়া সদর পূর্ব চক্রের সার্কেল ইন্সপেক্টর অফ স্কুল সজল মাহাতোকে। স্কুলে আসা পড়ুয়াদের পড়ানো থেকে শুরু করে স্কুলের মিড ডে মিলের দায়িত্ব সামলালেন ওই সার্কেল ইন্সপেক্টর অফ স্কুল।
স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, স্কুলে একজন শিক্ষক থাকায় তিনি অনুপস্থিত থাকলেই স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন এস আই অফ স্কুলের পক্ষে স্কুলের পঠনপাঠন সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে স্কুলের পড়ুয়াদের পড়াশোনা ব্যহত হতে বাধ্য। গ্রামের স্কুলগুলি বাঁচাতে শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষকের প্রয়োজন বলে দাবি অভিভাবকদের। অভিভাবকদের এই দাবি মানছেন স্কুলের পরিদর্শকও। তাঁর বক্তব্য, এই স্কুলে দ্বিতীয় শিক্ষক পাঠানোর কথা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার উন্নয়নে জোর দিচ্ছেন পরিকাঠামো ও পঠনপাঠনে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তাহলে বাহাদূরপুর গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের মত অনেক স্কুলে কেন পর্যাপ্ত শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে না প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।