হলদিয়া: দহনজ্বালায় জ্বলছে রাজ্য। শুষ্ক গরমে ঘর থেকে বাইরে বেরোলেই নাক-মুখ জ্বলে যাচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ পারদের লাফে হাঁসফাঁস অবস্থা বঙ্গবাসীর। রাজ্যে ১৪ জেলায় তাপমাত্রার (Temperature) পারদ ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মাঝেই রবিবার দুপুরে আচমকা দেখা মিলল ‘টর্নেডো’র। ঘূর্ণিঝড়ের মতো ঘুরপাক খেতে দেখা গেল ধুলোর মেঘকে।তবে সেটা ক্ষণস্থায়ী। স্থানীয় টর্নেডোতে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর নেই।
রবিবার দুপুরে তাপপ্রবাহের জেরে রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল। হঠাৎ করে ১২ টা নাগাদ হলদিয়া সিটি সেন্টার মোড়ের চৌরাস্তায়, বাস স্ট্যান্ডের কাছে হঠাৎ দেখা গেল টর্নেডো। টর্নেডোর মতো ঘূর্ণির টানে রাস্তার জঞ্জাল ধুলো ঘুরপাক খেতে খেতে উঠে যাচ্ছে আকাশে। অতিরিক্ত গরমের মাঝে এই ধরনের ঘূর্ণিঝড় দেখে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। যদিও এ ধরনের ঘুর্নিঝড় এর আগে কখনও দেখেনি এলাকার মানুষ। শিল্পাঞ্চলে কাজ করা বেশ কিছু শ্রমিকরা এই ঘূর্ণিঝড় দেখে একদিকে যেমন আতঙ্কিত, তেমনই ঘূর্ণিঝড়ের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে ছাড়েননি তারা। স্থানীয়দের দাবি, পার্শ্ববর্তী হুগলি নদী থেকেই তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে সিটি সেন্টারের বুকে। হলদিয়ায় ওই জায়গায় এদিন একাধিক এমন ঝড় দেখা গিয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন:Bibhas Adhikari | ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর বিভাস অধিকারীকে নিজাম প্যালেসে তলব সিবিআইয়ের
মনে করা হচ্ছে, সাংঘাতিক গরমে তেতে উঠেছে ভূপৃষ্ঠ। তার জেরে মাটির ঠিক উপরের হাওয়া মারাত্মক গরম হয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করতে এই টর্নেডোর সৃষ্টি হয়। পাক খেতে খেতে উল্লম্বভাবে গরম হাওয়া ওপরে উঠতে থাকে। সেই গরম হাওয়ার সঙ্গে ধুলো জঞ্জালও ঘুরপাক খেতে খেতে উপরে উঠলে ধুলো ঝড় ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়। একে বলা হয় মেসো টর্নেডো বা স্থানীয় টর্নেডো। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানীয় এলাকায় তাপমাত্রার ফারাক তৈরি হতেই এমন টর্নেডো তৈরি হতে পারে। তবে এদিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ হলদিয়ায় এই স্থানীয় টর্নেডো বা মেসো টর্নেডো তৈরি হয়। এদিনে মেসো টর্নেডোটির উচ্চতা ছিল ১৫ ফুটের বেশি। দূর থেকে এই ঘূর্ণি দেখে মেঘ বলে মনে হচ্ছিল। প্রায় ১৫-২০ মিনিট সময় স্থায়ী হয়েছিল ঝড়।
সূর্যের প্রখর রোদের তেজে মাত্রাছাড়া গরমে নাভিশ্বাস দসা রাজ্যের প্রায় সর্বত্র। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে। এই পর্বে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। গরমের জেরে সোমবার থেকেই রাজ্যের সরকারি স্কুল-কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও ছুটি দিতে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।