Thursday, June 12, 2025
Homeলাইফস্টাইলপোস্টকার্ড, নাড়ু, বিজয়া দশমীর কত কিছু যে হারিয়ে গেল

পোস্টকার্ড, নাড়ু, বিজয়া দশমীর কত কিছু যে হারিয়ে গেল

Follow Us :

কলকাতা: বিজয়া দশমী এলেই খুব মায়ের কথা মনে পড়ে। দশমীর রাতে পাড়ার ঠাকুর বিসর্জনের পরই চৌকির তলা থেকে মায়ের রংচটা টিনের বাক্স বেরিয়ে পড়ত। তার আনাচে কানাচে থাকত পোস্টকার্ড, এনভেলপ, ইনল্যান্ড লেটার। তাতে থাকত ন্যাপথলিনের গন্ধ। সেই বাক্সই ছিল মায়ের প্রাণ। জামাকাপড় থেকে শুরু করে কত কীই না থাকত। একটি রুপোর কৌটোতে থাকত খুচরো টাকা। দশমীর রাতে মা সেই রংচটা বাক্স খুললেই আমরা ভাইবোনেরা হামলে পড়তাম।

সেই বাক্স থেকে বেরিয়ে পড়ত গুচ্ছ গুচ্ছ পোস্টকার্ড। বড়দের বিজয়ার প্রণাম, ছোটদের আশীর্বাদ জানাতে হবে যে। যাদবপুরের বড়পিসিকে মা লিখত, ঠাকুরঝি, তুমি আমার বিজয়ার আশীর্বাদ লইও। সমরবাবুকে (বড় পিসেমশাই) প্রণাম জানাইও। খড়গপুরের ছোটপিসিকে লিখত, ঝুনু, তুমি এবং আশিস (ছোট পিসেমশাই) বিজয়ার আশীর্বাদ নিও। ছোটদের আশীর্বাদ দিও আমার।

আরও পড়ুন: আজ বিজয়া দশমী, আকাশে বাতাসে বিষাদের সুর

পুঁটিয়ারিতে থাকতেন আমাদের কুলপুরোহিত তারানাথকাকু। ১৯৪৭ সালের আগে ঢাকায় তারানাথকাকু আর আমার বাবা আগুনকে সাক্ষী রেখে মিতা পাতিয়েছিলেন। তারপর থেকে দুজন দুজনকে মিতা বলে ডাকতেন। মা তারানাথকাকুকে লিখত, শ্রদ্ধেয় তারানাথদা, আমার বিজয়ার প্রণাম লইবেন। এই মাসের মানি অর্ডার পাঠাইলাম। পাইলে প্রাপ্তি স্বীকার করিবেন।

বড়দা চাকরি করত তখনকার বিহারের চন্দ্রপুরা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে। কোনও কোনও বার দাদা পুজোর ছুটি না পেলে আমাদের সকলেরই মন খারাপ হয়ে থাকত। মাকে কাঁদতে কাঁদতে দাদাকে বিজয়ার আশীর্বাদ জানিয়ে চিঠি লিখতে দেখেছি।

আজ সেই চিঠি লেখার পাট বেমালুম উঠে গিয়েছে। জানি না, পোস্টাপিসে আজকাল পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটার পাওয়া যায় কি না। ডিজিটাল যুগে অবশ্য তার কোনও দরকারই পড়ে না। মোবাইলেই বিজয়া সেরে নেওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে, ফেসবুকে, ইনস্ট্রাগ্রামে একটা পোস্ট করে দিলেই হল।

ছোটবেলায় বিজয়া দশমী মানেই ছিল পাড়ায় বাড়ি বাড়ি ঘোরা। বড়দের নমস্কার করলেই মিলত একটা তিলের নাড়ু, একটা নারকেলের নাড়ু, একটু কুচো নিমকি। খুব বেশি হলে ছোট এক বাটি ঘুঘনি। তখন পুজোর মধ্যেই বাড়িতে তৈরি করা হত তিলের নাড়ু, নারকেলের নাড়ু, নারকেলের তক্তি বা খাজা।

আজকাল সব হারিয়ে গিয়েছে। এখন আর বলতে গেলে কোনও বাড়িতেই এসব তৈরি হয় না। ছোট ছেলেমেয়েরা বিজয়া দশমীতে পাশের বাড়ির বড়দের প্রণাম করতে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারবে না। তখন বাড়ি বাড়ি যাওয়া আমাদের মতো ছোটদের যে কী আনন্দের ব্যাপার ছিল, তা আর বলার নয়।

মাঝে মাঝে ভাবি, আজকের শিশুদের শৈশবটাই বোধহয় হারিয়ে গিয়েছে। মায়ের পেট থেকে পড়েই হাইটেক যুগের শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে। নিজের চোখে দেখা, সাত-আট মাসের বাচ্চার হাতে মোবাইল দিলেই সে কান্না থামিয়ে দেয়।

মনে পড়ে, আমরা ছোটবেলায় পুজোর সময় পয়সা জমিয়ে গল্পের বই কিনতাম। আজকের শৈশব গল্পের বই কী, তাই জানে না। তাদের গল্পের বইও মুঠোফোনে বন্দি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Ahmedabad | আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্র
00:00
Video thumbnail
Air India | Amit Shah | বিমান দুর্ঘটনা কাণ্ডে অমিত শাহ-কে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
00:00
Video thumbnail
Justice Suryakant | ভারতীয় বিচারব্যবস্থা গভীর বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে, কেন? মন্তব্য বিচারপতির
00:00
Video thumbnail
Air India | আমেদাবাদের ভেঙে পড়া বিমানে কোন দেশের কত যাত্রী ছিলেন? দেখুন প্যাসেঞ্জার লিস্ট
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | কীভাবে হল বিমান দুর্ঘটনা? ব‍্যাখ‍্যা দিলেন ক‍্যাপ্টেন শুভগত জোয়ারদার
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | মৃ/ত্যুর আশঙ্কা ২৪২ যাত্রীর, দেখুন এই মুহূর্তের কী অবস্থা
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | কীভাবে ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান? দেখুন সেই মুহূর্তের ছবি
00:00
Video thumbnail
Ahmedabad | Air India | লন্ডনগামী বিমানে কতজন যাত্রী ছিলেন? কী অবস্থা তাঁদের? দেখুন লেটেস্ট আপডেট
00:00
Video thumbnail
Air India | Gujrat | ভেঙে পড়া বিমানে ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী! এই খবরে তীব্র চাঞ্চল্য
00:00
Video thumbnail
Justice Suryakant | ভারতীয় বিচারব্যবস্থা গভীর বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে, কেন? মন্তব্য বিচারপতির
05:21