প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার কারণে ওই ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। চাকরিহারা প্রার্থীরা সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখে। পরে মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্টে যান।
কী বলল সুপ্রিম কোর্ট
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বলে, কারও চাকরি বাতিল করা যাবে না। তা ছাড়া যাঁদের বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের বক্তব্যও শুনতে হবে। এর ফলে চাকরি হারানো তরুণ-তরুণীরা মনোবল ফিরে পেলেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতো প্রাথমিকেও শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিস্তর অনিয়ম হয়েছে বলে একাধিক মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেগুলির শুনানিও চলে দীর্ঘদিন আদালতে। বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, যে মামলাগুলি আমরা শুনছি, তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। তিনি শেষ দেখে ছাড়বেন বলেও হুমকি দেন। এমনকী বিচারপতি এমনও মন্তব্য করেন, আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালেও আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। তাতে যদি আমাকে বদলি করা হয়, তাতেও আমার অসুবিধা নেই।
আরও পড়ুন: টেট প্রার্থীদের আন্দোলনের নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন, অভিযোগ পর্ষদ সভাপতির
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়ে অনেকের বিরাগভাজন হন। আইনজীবীদের একাংশও বলে, এভাবে চাকরি বাতিল করা যায় না। প্রবীণ আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ তখন বলেছিলেন, এভাবে একতরফা চাকরি বাতিল করা যায় না। তাঁদের কথা শোনা উচিত আদালতের। অবশেষে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল। এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সূত্রেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা শাসকদলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য।
সাময়িক স্বস্তি মানিকের
এদিকে এদিন সুপ্রিম কোর্টে সাময়িক স্বস্তি মিলল মানিকের। এর আগে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, পুজো পর্যন্ত সিবিআই মানিকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু পুজো মিটতেই ইডি গ্রেফতার করে মানিককে। এদিন মানিকের করা পুরনো মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ফের জানায়, সিবিআই মানিকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না. তবে তারা তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। চার সপ্তাহ পরে সিবিআইকে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।