স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগে অগ্রাধিকার এবং মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে স্থানীয়দের লাগাতার আন্দোলনে চার দিন ধরে বন্ধ কারখানা নির্মাণের কাজ। এই ধরনের সমস্যা চলতে থাকলে এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট হুমকি দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার (Bankura) মেজিয়া ব্লকের কালিদাসপুর মোড় এলাকায়।
বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের কালিদাসপুর মোড় এলাকায় ইথানল (Ethanol) তৈরির একটি কারখানা স্থাপনের জন্য ২০১৬ সালে ২৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে একটি বেসরকারি সংস্থা। প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করে ২০২০ সালে ওই জায়গায় কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। করোনা অতিমারির জেরে প্রায় দু’ বছর কাজ বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি ফের ওই কারখানা তৈরির কাজে হাত লাগায় সংস্থাটি। কারখানা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-এর মধ্যে এই কারখানায় দৈনিক ৫ লক্ষ লিটার ইথানল উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। কারখানা স্থাপনের জন্য সংস্থাটি ওই এলাকায় বিনিয়োগ করবে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। কর্মসংস্থান হবে প্রায় এক হাজার মানুষের। সম্ভাবনাময় এই কারখানা স্থাপনের শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খায় সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ২০২৪-এ বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না, ফের হুঙ্কার মমতার
গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে স্থানীয় জোড়সা ও মোহনা গ্রামের একদল বাসিন্দা স্থানীয়দের কাজে অগ্রাধিকার ও মজুরির দাবিতে শুরু করে আন্দোলন। লাগাতার সেই বিক্ষোভে (Agitation) গত পাঁচ দিন ধরে থমকে রয়েছে কারখানা স্থাপনের কাজ। কারখানা সূত্রে জানা গেছে সংস্থার সঙ্গে ইন্ডিয়ান অয়েলের (Indian Oil) চুক্তি রয়েছে ইথানল সরবরাহের। ২০২৪-এর মধ্যে মেজিয়ার কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে না পারলে ওই চুক্তি মোতাবেক ইথানল সরবরাহ করা ওই সংস্থার পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে যে সমস্ত কাজে অদক্ষ শ্রমিক লাগে সেই কাজে স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু কারখানায় যন্ত্রপাতি স্থাপনের ভিত তৈরির কাজ অদক্ষ শ্রমিকদের দ্বারা করানো সম্ভব নয়। সেজন্য বাইরে থেকে দক্ষ শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ স্পষ্টতই জানিয়েছে, স্থানীয়রা ইচ্ছাকৃতভাবে এভাবে ইস্যু তৈরি করে কারখানা স্থাপনের কাজ আটকে রাখলে কর্তৃপক্ষ কারখানা অন্যত্র এমনকী ভিন রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা করবে। কারখানা কর্তৃপক্ষের এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও আন্দোলনকারী শ্রমিকরা একচুল সরতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে। এই পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় এই কারখানা স্থাপনের ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসন কী ভূমিকা নেয় সেদিকেই তাকিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ। যদিও তৃণমূল (TMC) ব্লক সভাপতির দাবি বিষয়টি মিটে গেছে কোনও সমস্যা নেই।