কলকাতা: সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকেও (Birthday of Subhash Chandra Bose) রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দান হিসেবে বেছে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিজেপি কিংবা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নাম না করে সোমবার মমতা বলেন, ওরা এখন আন্দামানের দ্বীপের (Andaman and Nicobor Islands) নাম দিচ্ছে। ও তো নেতাজি যখন আন্দামানে গিয়েছিলেন তখনই নাম দিয়েছিলেন। ফের এদিন পরিকল্পনা বা যোজনা কমিশনের প্রসঙ্গের অবতারণা করে মমতা বলেন, নেতাজির স্বপ্ন ছিল প্ল্যানিং কমিশন। সেটা তো ওরা হতেই দিল না।
সুভাষ বসুর ১২৭-তম জন্মদিবসে এদিন রেড রোডে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির নাম না করে আক্রমণ শানান। বাংলাকে পদে পদে অপমান করা হচ্ছে। একের পর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সি পাঠানো হচ্ছে এখানে। কই কটা এজেন্সি গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে? তিনি বলেন, এজেন্সি পাঠালেও আমরা ভয় পাই না। অনেকে ভয় পায়। কিন্তু আমরা পালাই না। আমরা অনেক লড়াই করে উঠে এসেছি। এজেন্সি দেখিয়ে আমাদের চুপ করিয়ে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: PM Narendra Modi: আন্দামানের দ্বীপগুলিকে পরমবীর চক্র বিজয়ীদের নামে নামকরণ করলেন মোদি
এ বিষয়ে মমতা বলেন, মনে রেখো গণতন্ত্রে সংবিধান আছে। সংবিধান সকলকেই মেনে চলতে হবে। যা খুশি করো, কিন্তু দেশটাকে ভেঙে দিও না। দেশকে এক রাখো। বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নাম না করেও মমতা বলেন, একটা ফুলকে আলাদা করে চেনা যায়। যদি বাগানে হাজার হাজার ফুল থাকে, তাহলে! আর তা দিয়ে যখন একটা মালা গাঁথা হয়, তখন কে আলাদা করতে পারে, কোনটা মুসলমানের, কোন ফুলটা অন্য কারও।
বাংলার লেখক-কবিদের গান-কবিতা কীভাবে দেশবাসীর মনে ইংরেজ বিরোধী দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তুলেছিল, সেকথাও ভাষণের ছত্রে ছত্রে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এদিন তাঁর ভাষণের অধিকাংশটাই জুড়ে ছিল ভোট-রাজনীতির ভাষা। লোকসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে এখন থেকেই রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করেছে। গেরুয়া শিবির যেমন একদিকে নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বারের জন্য মুখ হিসেবে তুলে ধরেছে।
অন্যদিকে, ভারত জোড়ো যাত্রার রাস্তা থেকে অন্যান্য ছোট ও আঞ্চলিক দল রাহুল গান্ধীর মধ্যে দেশনেতাকে দেখতে পাচ্ছে। হিন্দি বলয়ের অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দক্ষিণের কেসিআর ছাড়াও নীতীশ কুমারও এই কুচকাওয়াজে শামিল। মমতা বলেন, ২৬ জানুয়ারি পতাকা তুললেই দেশনেতা হওয়া যায় না। দেশ কা নেতা হো ক্যায়সা, নেতাজিকে জ্যায়সা। দেশনেতা হতে গেলে তাঁর যে অনেক গুণ থাকতে হবে, সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদান স্মরণ করিয়ে দিতে একাধিক দেশাত্মবোধক সঙ্গীত-কবিতার কথা বলেন। সবশেষে নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজের জয় হিন্দ ধ্বনি দিয়ে এদিনের মতো ভাষণ শেষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।