কলকাতা: বাংলার মুকুটে নয়া পালক। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ (World Heritage)সেন্টারের তকমা পেতে চলেছে বিশ্বকবি রবি ঠাকুরের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি (G. Kishan Reddy)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদৃষ্টির জন্যই শান্তিনিকেতনের কপালে এই প্রাপ্তি সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি, পর্যটন এবং উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি টুইট করে জানান, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে ভারতের জন্য দারুণ খবর। পশ্চিমবঙ্গে শান্তিনিকেতনের নাম ওয়র্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় লিপিবদ্ধ করতে সুপারিশ করেছে ইউনেস্কো (UNESCO) ওয়র্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের উপদেষ্টা বিভাগ ইকোমস (ICOMOS)। তিনি আরও জানান, বিশ্ব দরবারে আমাদের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যকে তুলে ধরার যে দূরদর্শিতা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির, এতে তা আরও গতি পেল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি আরবের রিয়াধে ওয়র্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠক সম্মেলন রয়েছে। সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই স্বীকৃতিপ্রাপ্তির ঘোষণা হবে।
আরও পড়ুন:Purulia Incident | বধূর দেহ আটকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পথ অবরোধ
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে লিভিং হেরিটেজ-এর তকমা দিল ইউনেস্কো। যা বিশ্বে এই প্রথমবার। সাধারণত কোনও স্মৃতিস্তম্ভকে ইউনেস্কোর তরফে হেরিটেজ সম্মান দেওয়া হয়। এই প্রথম সক্রিয় অবস্থায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় জায়গা পাচ্ছে। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, সবেমাত্র খবর কি পৌঁছেছে। তবে বিশ্বভারতীর কোন কোন ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান এই সম্মান পেয়েছে এখনই তা স্পষ্ট নয়।
১৯২১ সালে ১১৩০ একর জমিতে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯২২ সালের মে মাসে বিশ্বভারতী সোসাইটি একটি সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত না হওয়া পর্যন্ত এটি নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামেই ছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বেশ কিছু সম্পত্তি, জমি এবং একটি বাংলো সেই সময়ে বিশ্বভারতী সোসাইটিকে দান করেছিলেন। স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত এটি একটি কলেজ ছিল এবং ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং দ্বিতীয় উপাচার্য ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ঠাকুরদা। বর্তমানে একাধিক কারণ বিতর্কের কেন্দ্র বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, কেন্দ্র পরিচালিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঐতিহ্য নষ্ট করছেন। রাজ্যের বিরুদ্ধে পালটা সরব হয়েছে কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্তর্জাতিক তকমা নিসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।