Tuesday, June 10, 2025
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ: ড্যামেজ কন্ট্রোলের প্রথম ধাপ, অপসারিত পার্থ, মন্ত্রিসভা আর দলীয় সমস্ত...

চতুর্থ স্তম্ভ: ড্যামেজ কন্ট্রোলের প্রথম ধাপ, অপসারিত পার্থ, মন্ত্রিসভা আর দলীয় সমস্ত পদ থেকে

Follow Us :

সত্যি এ বাংলায় আগে এমনটা দেখা যায়নি৷ কোনও রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তারপরে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার৷ এখনও পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বিভিন্ন ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা, প্রচুর গয়না, বিদেশি মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে গুচ্ছ গুচ্ছ দলিল পাওয়া গিয়েছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্পত্তি। দলের মুখপাত্র বলেছেন, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে, আমন্ত্রিত বিদেশ সফরে থাকা সাহিত্যিক অমর মিত্র ফেসবুকে লিখেছেন লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে৷ এই প্রবাসেও একজন বাঙালি হিসেবে এই প্রশ্নের সামনে আমাকে দাঁড়াতে হচ্ছে, এরকমটা আশা করিনি। কে আশা করেছে? তৃণমূলের লক্ষ লক্ষ সাধারণ সমর্থক গরিবগুর্বো মানুষগুলো, যারা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় গেলে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলত, তারা কি আশা করেছিল? তলার সারির লক্ষ লক্ষ কর্মী, যারা জান বাজি রেখে, লড়ে গিয়েছে, তারা আশা করেছিল? যারা এককালে সিপিএম করত, এখন তৃণমূল করে, তারা আশা করেছিল? যারা কন্যাশ্রীর টাকা পেয়ে দু’হাত তুলে এই সরকারকে সমর্থন করেছিল, সবুজ সাথীর সাইকেল পেয়ে খুশি হয়েছিল, তারা কি এমনটা আশা করেছিল? আমি ওপরের সারির কোনও নেতার কথা বলছিই না৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও না৷ আমি বলছি আম জনতার কথা, যারা এক কোটি টাকা বললে ডিয়ার লটারির কথাই মাথায় আনতে পারে৷ তাদের কথা বলছি৷ তারা অবাক চোখে দেখছে, ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমীর এই ছবি, ডাঁই করে রাখা কোটি কোটি টাকা, ওরা তো প্রহর গোনে, ইডি মুদ্রা গুনছে কোটি কোটি।

অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী ফেসবুকে লিখেছেন, “বিষয়টা লজ্জ্বার। বিষয়টা রাগের। চোখের সামনে রোজ দেখছি তাজা কিছু ছেলেমেয়েকে অভিনয় শিখে, অভিনয় চর্চা করে, নিজেকে তৈরি করার অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাজ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিজের সম্মান বজায় রেখে। কাজ করছে ও, যেটুকু যা পাচ্ছে। এরা তাহলে কি? অভিনেতা নয়? অভিনেত্রী নয়? অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে, অন্যায় পথে টাকা রোজগার করে, অন্যায় ভাবে দু’একটা বিজ্ঞাপন, সিনেমা বা সিরিয়ালে কাজ পেলেই তিনি মডেল? তিনি অভিনেতা? তিনি অভিনেত্রী?? লজ্জ্বা করছে !! রাগ হচ্ছে !! কত শত ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে, ট্রেনিং নিয়ে, পরীক্ষা দিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে আছে একটা কাজ পাবার আশায় !!! সরকারি, বেসরকারি, চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিং জব, যা হোক কিছু — একটা কাজ, জাস্ট একটা কাজ, যাতে সম্মানের সঙ্গে কাজ করে কিছু টাকা রোজগার করা যায়। আর সেখানে কোনও একজন মানুষের ১০/১৫ টা বাড়ি… ২১ কোটি টাকা নগদ… বিদেশি মুদ্রা… গয়না ….এই দেশে!!!!! এই রাজ্যে !!! এই শহরে !!!! এঁরা জনগণের স্বার্থে কাজ করেন ? দেশের স্বার্থে রাজনীতি করেন ? আমাদের দেখে কি সত্যিই মনে হয় আমরা রোজ সকালে breakfast এ ঘাস খাই ???? লজ্জ্বা করছে ! রাগ হচ্ছে !

খুব !!! “সত্যিই তো,স্বাধীনতার পর থেকে বাংলার বাইরে প্রায় সর্বত্র এমন ছবি বহুবার দেখা গিয়েছে, বাংলায় দেখা যায়নি৷ আমাদের লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে আসছে, যাদের ভোটে উপচে পড়েছিল ইভিএম, তারা ভাবছে, এটা হয় নাকি? যারা আরও একটু এগিয়ে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলায় নো ভোট টু বিজেপি বলে মাঠে নেমেছিল, তারা বিভ্রান্ত, তাদের একজনও কি ভেবেছিল দুর্নীতি মুক্ত সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে? না ভাবেনি, কিন্তু এটাও তো ভাবেনি, যে নো ভোট টু বিজেপি বলার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের দলের অন্যতম নেতার দুর্নীতির এই চেহারা? এর আগেও তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতাদের ধরা হয়েছে, তাঁরা ইডি হাজতে গিয়েছেন, তফাৎটা কোথায়? কেবল তাড়া তাড়া নোট পাওয়া গিয়েছে, সেটাই কি একমাত্র তফাৎ? না, এর আগে যাদের ধরা হয়েছে, তাঁরা বলেছেন, আমি নির্দোষ, আমরা নির্দোষ। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুকে হাত রেখে বুকে ব্যাথার কথা বলেছেন, একবারও মুখ ফুটে বলেননি যে তিনি নির্দোষ। এটা বিশ্বাস করাই যায় না যে ওই কোটি কোটি টাকা ওই অভিনেত্রী মহিলার। এবং এক মজার ব্যাপার হল আলোচনার সিংহভাগ ফুটেজ খাচ্ছে ওই কেচ্ছা, আরও তিন চারটে নাম বেরিয়ে আসছে, ১১০ কেজির বিশাল বপু পার্থ কেমন করে বান্ধবীদের সামলাতো তা নিয়ে গাল গপ্পো, কেচ্ছা দখল করছে আলোচনার পরিসর। কোথায় তাঁরা মাছ ধরতে যেতেন, কোথায় কতটা সময় কাটাতেন, কি খেতেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু আলোচনা হওয়া উচিত তো ওই দুর্নীতি নিয়ে, ওই বেকার ছেলেগুলোর ভবিষয়ৎ নিয়ে যাদেরকে ঠকানো হয়েছে৷ তাদের মেধা, তাদের পরিশ্রম নিয়ে চু কিৎ কিৎ খেলা হয়েছে, তাদের কারোর কারোর বয়স চলে গেছে, তাদের কেউ কেউ হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন, চোখের সামনে দেখেছেন চাকরি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। শুধু কি তাই? যে শিক্ষকরা চাকরি পেলেন টাকা দিয়ে, সেই মেধাহীন বা কম মেধাবী শিক্ষকরা কী পড়াবেন? স্কুলে বাচ্চাদের বলতে পারবেন, চুরি করিও না, শেখাতে পারবেন? কোন নৈতিক মানদণ্ড নিয়ে সেই শিক্ষক ছাত্রের মখোমুখি হবেন? এর আগে এই বাংলায় অভিযোগ কী ছিল? দায়িত্ব নিয়ে বলছি বাম জমানার কথা, কারোর আপত্তি থাকলে মামলা করুন। ৯০% সিপিএম হোল টাইমার কর্মী নেতার স্ত্রী স্কুল বা কলেজে চাকরি পেয়েছেন, যুব বা ছাত্র ফেডারেশনের রাজ্য কমিটির নেতাদের প্রত্যেকের স্ত্রী স্কুলে বা কলেজে চাকরি পেয়েছেন, একটা সময়ে বেহালায় সিপিএম নেত্রী আলোকণা রায়চৌধুরির বাড়ির বাইরে পোস্টার পড়েছিল, আলোকণা রায়চৌধুরির মায়ের চাকরি চাই, কারণ তাদের পরিবারের প্রত্যেকে চাকরি পেয়েছিল। পঞ্চয়েত প্রধান, জেলা পার্টি নেতাদের কাছে কোটা থাকতো শিক্ষকের চাকরির, দিতেনও তাঁরা।

কিন্তু এইরকম লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে? না এমনটা আগে হয়নি। একজন নেতা কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন, সেই টাকা পাওয়া গিয়েছে? না এমনটাও হয়নি। সেদিক থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই এপিসোড বলে দিচ্ছে, বাংলা এখন দুর্নীতির ক্ষেত্রে দেশের অন্য পাঁচটা রাজ্যের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। কী বলবেন? চোরেদের মন্ত্রিসভা? না এই বাক্যবন্ধের লিগাল রাইট তো বুধবাবুর, আপাতত বলা যাক, মন্ত্রিসভার একজন সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দুটো প্রধান কারণে দুর্নীতি জন্ম নেয়, বেড়ে ওঠে। প্রথম হল আইন, নিয়ম – কানুনের জটিলতা। ওয়েব সাইট থাকুক, পরীক্ষার খাতা থেকে, সেই খাতার মূল্যায়ণ আর মেরিট লিস্ট চোখের সামনে থাকুক, সব্বার জন্য থাকুক, প্রত্যেকে জানবে কে কোন পরীক্ষা দিল, কত নম্বর পেল, কেন পেল না, মেধা তালিকায় কারা আছে, কাদের চাকরি হল, কাদের হলনা। সবটা সামনে থাকলে দূর্নীতি কমতে বাধ্য। দ্বিতীয় হল, যে কোনওভাবে পেতে হবে, আমাদের এই মনোভাব দুর্নীতির জন্ম দেয়, সিনেমার টিকিট নেই? মিউটেশন থেকে বার্থ সার্টিফিকেট, পাওয়ার নিয়ম আছে, চাকরির পরীক্ষা আছে, কলেজে ভর্তি হওয়ার মেধা তালিকা আছে, কিন্তু আমরাই সেই নিয়ম, সেই নীতি – নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সেটা পেতে চাই, ফলে জন্ম হয় কিছু দুর্নীতিবাজেদের, ভাবুন না, এই ছাত্ররা যারা টাকা দিয়ে শিক্ষক হল, তাদের বাড়ির লোকজন, বাবা মা জানতো না? টাকার জোগান দেয়নি? ধরা করা করেনি? নেতাদের পিছনে পিছনে ঘোরেনি, লক্ষ লক্ষ মানুষের অনৈতিক চাহিদা জন্ম দেয় ওই টাকার পাহাড়ের, দুর্নীতির।

আর একটা বড় কারণ হল ভিজিলেন্সের অভাব, নজরদারির অভাব বা অনেক ক্ষেত্রে সেই নজরদারেরা হাত মিলিয়ে ফেলে দুর্নীতির সঙ্গে। ধরুন চিটফান্ড, কে জানত না? পুলিস জানত, প্রতিটা দলের নেতা জানত, সাংবাদিকরা জানত, মানুষও জানত ১০০ টাকা জমা রেখে ৩ বছরে ১০০০ টাকা পাওয়া যায় না, কিন্তু চিটফান্ড চলেছে, রমরম করে চলেছে৷ তারপর যেদিন বেলুন ফাটল, সেদিন ও মা, সে কি একি, তাই নাকি, দেখেছ এত কোটি টাকা। দেবশিশু সুলভ উক্তি। নিয়োগে দুর্নীতি, সে কি আজকের? জানা ছিল না যে নেতা মন্ত্রী ধরে চাকরি পাওয়া যায়, জানা ছিল না যে শাসক দলের পিছনে ঘোরাঘুরি করলে মিললেও মিলতে পারে সরকারি চাকরি? কার জানা ছিল না, সামনে এসে বলুন, কার জানা ছিল না? হ্যাঁ সেই দুর্নীতি আরও বড় হয়েছে, তার আকার, প্রকার বড় হয়েছে, সত্যি, কিন্তু এ তো হঠাৎ আকাশ থেকে পড়েনি। আগেও লিখেছি, এ দুর্নীতি তো কিছুই নয়, মামুলি দুর্নীতি, কতদূর যাবে? ১০০ কি ১৫০ কোটি। শিক্ষা নিয়ে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে এর চেয়ে হাজার গুণ বড় দুর্নীতি চলছে, সেটাও সব্বাই জানে, যেদিন ফাটবে, সেদিন ও তাই নাকি? সে কি? এ কি শুরু হয়ে যাবে। কোন মন্ত্রী বান্ধবীকে নিয়ে কালিপং চলে গেল, রাত কাটিয়ে গার্ড অফ অনার নিয়ে ফিরে আসল, কোন মন্ত্রী ছাপাখানার থেকে ঘুস খাচ্ছে, কোন মন্ত্রী শান্তিনিকেতনে বাড়ি কিনে তাস খেলতে যাচ্ছে, কোন শিল্পপতি শিল্পের নামে জমি নিয়ে ফাটকা বাজি করছে, কোন সাংবাদিক কেবল মাত্র সরকার ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে কোটি কোটি টাকার মালিক, সেগুলো জানতে হবে সরকারকে, জানাতে হবে মানুষকে। তাদের ছেঁটে দিতে হবে। কারণ এখনও মানুষের আস্থা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর, মানুষ বিশ্বাস করেন ওই মহিলাকে, যিনি টোয়েন্টি ফোর ইন্টু সেভেন কাজ করে চলেছেন বাংলার জন্য, বাংলার মানুষের জন্য। রাস্তা হচ্ছে, হাসপাতালে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, সেই মমতাকেই হাল ধরতে হবে, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে, বাকি রইল বিজেপি বা সিপিএমের বিরোধিতা, সে তো থাকবেই। আপাতত আশার আলো পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে, দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, মানুষ ভরসা ফিরে পাবেন? না ফিরে পাবেন এমনটা হলফ করে বলা যায় না, তবে ভরসা ফিরে পাওয়ার প্রথম ধাপটা অতিক্রম করল তৃণমূল দল, হাল ধরলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
NATO Vs Russia | NATO বনাম রাশিয়া, তৃতীয় বিশ্বযু/দ্ধ কি সময়ের অপেক্ষা? দেখুন এই ভিডিও
02:08
Video thumbnail
Fake Passport | ED | জাল পাসপোর্ট চক্রের পান্ডা আজাদকে গ্রেফতার ইডির
02:44
Video thumbnail
Volodymyr Zelenskyy | দেশ ছেড়ে পালাতে চলেছেন জেলেনস্কি? কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
10:38
Video thumbnail
Sukanta Majumdar | BJP Press Meet | সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার, কী বললেন শুনুন
02:46
Video thumbnail
Digha Jagannath Temple | বুধবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে হতে চলেছে স্নানযাত্রা
01:26
Video thumbnail
West Bengal Transportation Department | ১৫ বছরের পুরনো বাস চলাচলে অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের
01:18
Video thumbnail
APAI | Siliguri | শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত হল APAI আয়োজিত প্রি-কাউন্সেলিং ও শিক্ষা মেলা
02:11
Video thumbnail
Tollywood Court Case | টলিউডে কাজের স্বাধীনতা সংক্রান্ত মামলা, আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভবনা
01:12
Video thumbnail
Sharmishta Paloni Case | শর্মিষ্ঠা পানোলি কাণ্ডে ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য, কী হবে এবার? দেখুন বড় খবর
03:36
Video thumbnail
Mamata Banerjee | অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য পেশ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,দেখুন ভিডিও
06:16