skip to content
Wednesday, July 3, 2024

skip to content
HomeCurrent Newsচতুর্থ স্তম্ভ: উত্তর প্রদেশের পর রাষ্ট্রপতি

চতুর্থ স্তম্ভ: উত্তর প্রদেশের পর রাষ্ট্রপতি

Follow Us :

দেশে, দিল্লিতে, উত্তরপ্রদেশে আপাতত যে রাজনৈতিক চহলপহল, তা কিন্তু ২০২৪ এর নির্বাচন নিয়ে নয়, ওটা ফাইনাল গেম। তার আগে সেমিফাইনাল ম্যাচটা অনেকেরই এখনও চোখে পড়ে নি, কোয়াটার ফাইনাল ম্যাচকে নিয়েই সবাই ব্যস্ত, ৫ রাজ্যে নির্বাচন, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, পঞ্জাব, মণিপুর আর গোয়া। আম জনতার চায় পে চর্চা এখন ঐ পাঁচটা রাজ্যের নির্বাচনকে ঘিরে, ঐ নির্বাচনে যদি বিজেপি হারে, তাহলে ২০২৪ জমজমাট লড়াই, বিজেপি বিদায় একরকম নিশ্চিত হয়ে যাবে, কিন্তু তার মধ্যে একটা সেমিফাইনাল ম্যাচ আছে, বিজেপির কপালে শনি নাচছে, সেই শনিটা ঠিক কোনখানে?

অনেকেই খেয়াল করেন নি, করছেন না পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ঠিক পরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সেটা কিন্তু এবার দারুণ ইন্টারেস্টিং হতেই পারে। অনেকেই বলবেন কেন? লোকসভায় এন ডি এর এখনও ৩৩৪ জন সাংসদ আছে, রাজ্য সভায় ১১৬ জন। লোকসভা রাজ্যসভা মিলিয়ে ৫৮% ভোট আছে এন ডি এর, তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আছে, এবং সেটা বুঝতে হলে আমাদের দেশে রাষ্ট্রপতি কেমন করে নির্বাচিত হন, সেটা একটু মন দিয়ে বুঝতে হবে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে, লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেন, কিন্তু তাদের একটা ভোটের মান হল ৭০৮, মানে একজন এম পি ভোট দেবেন, সেই প্রার্থীর খাতায় জমা হবে ৭০৮ খানা ভোট। এই হিসেবে সাংসদের ৫৮ % ভোট এখন এন ডি এর কাছে। শিবসেনা, অকালি দল, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম এখন এন ডি এতে নেই, তা সত্ত্বেও লোকসভা রাজ্যসভা মিলিয়ে এন ডি এর ৪৫০ জন সাংসদের মোট ভোট ৩ লক্ষ ১৮ হাজার ৬০০, মানে বিজেপি যে প্রার্থীকে মনোনীত করবে তার পক্ষে এই ভোট পড়বে, এর বাইরেও কিছু ভোট আসতেই পারে, বিজেডির ভোট, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির ভোট, ওয়াই এস আর কংগ্রেসের ভোট, মায়াবতির ভোট।

এসব আসতেই পারে, বিজেপির হাতে ইডি, ইনকাম ট্যাক্স, সি বি আই আছে, রাজ্যের বরাদ্দ বাড়ানোর ক্ষমতা আছে, এসবের কারণে ভোট প্রভাবিত হতেই পারে। কিন্তু, হ্যাঁ, এখানে কিন্তু আছে, কারণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট কেবলমাত্র এমপি-রা দেয় না, এম এল এরাও দেয়। এবং সেই হিসেব আরও গোলমেলে, ১৯৭১ এর জনসংখ্যার হিসেবের ভিত্তিতে, প্রত্যেক রাজ্যের এম এল এদের ভোটের মান কিন্তু আলাদা।

যেমন এই বাংলার প্রত্যেক এম এল এর ভোটের মান ১৫১, ঝাড়খন্ডের বিধায়কদের ভোটের মান ১৭৬, আবার সিকিমের একজন এম এল এ ভোট দিলে সেই প্রার্থীর খাতায় জমা হবে ৭ ভোট, অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের একজন বিধায়কের ভোটের মান ২০৮, এইখানেই সমস্যা। হিসেব বলছে, যে পাঁচ রাজ্যে ভোট হচ্ছে, তাদের  এম এল এদের ভোট যোগ করলে, মোট ভোট হবে ১ লক্ষ ৩ হাজার ৭৫৬, এবং তার মধ্যে কেবল উত্তরপ্রদেশের মোট ভোট ৮৩ হাজার ৮২৪। ২০১৭তে উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে বিজেপির আসন ছিল ৩০৬, শরিক অপনা দলের আসন ১১, দুইয়ে মিলে ৩১৭,

৭৮% আসন ছিল বিজেপির। সমস্যাটা এইখানে, বিজেপি যদি আগেরবারের বা তারচেয়েও বেশী আসন পায়, তাহলে তো ল্যাটা চুকেই গ্যালো, বাকি যা খুচখাচ লাগবে ,মায়াবতীর বি এস পি ইত্যাদি থেকে এসে যাবে। কিন্তু যদি হেরে যায়, যে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তাহলে? বা ধরুন বিজেপি জিতল, কিন্তু ১০০ টা আসন কমে গ্যালো, তাহলে, ধরুন গোয়া, ছোট্ট রাজ্য, হাত থেকে বেরিয়ে গ্যালো। তাহলে? উত্তরাখন্ডে যদি খারাপ রেজাল্ট হয়? কারণ এই মুহূর্তে যা অবস্থা তার হিসেব বলছে, এম পি, এম এল এ মিলে মোট ভোট, ১০,৮৭, ৬৮৩। তার মধ্যে এন ডি এর ভোট  ৫,৪৩,০৬২। মানে ৪৯.৯৫% ভোট। বিজেপির মনোনীত এম পিদের ভোট ধরবেন না, ওনারা মানে ঐ গগৈ বা স্বপন দাশগুপ্তরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। তাই বলছি, যদি উত্তরপ্রদেশে হেরে যায়, গোয়াতে হেরে যায়, পঞ্জাবে কিছুই না করতে পারে, তাহলে সেদিনই বিসর্জনের বাজনা বাজতে শুরু করবে,

বিরতির আগে যা বলছিলাম,যদি উত্তরপ্রদেশে হেরে যায়, গোয়াতে হেরে যায়, পঞ্জাবে কিছুই না করতে পারে, তাহলে সেদিনই বিসর্জনের বাজনা বাজতে শুরু করবে, কিন্তু অতটা না হলেও, উত্তর প্রদেশে ১০০ টা আসন কমে যাওয়া মানে ২০৮০০ ভোট কমে যাওয়া, তার জন্য বিজেডি, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা ওয়াই এস আর কংগ্রেসের কাছে হাত পাততে হবে, ওনারাও তো ভোট এমনি এমনি দেবেন না, সে হিসেবও জটিল। কিন্তু মোদী শাহের ম্যানেজ করার অপরিসীম ক্ষমতা কে মাথায় রাখলে, সেটাও হয়ে যাবে বলেই মনে হয়, ভেঙ্কাইয়া নাইডু কে প্রোমট করা হবে? না, পরিস্কার না। কোবিন্দ আরেকটা টার্ম পাবেন? সেখানেও না।

সম্ভবত দক্ষিণের কোনও মহিলা রাজনীতিবিদ, আবার মোদিজীর চমক কিন্তু এইখানেই কহানী মে টুইস্ট, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে বললে ভুল হবে, একরকম স্থির হয়েই গ্যাছে, তিনি হলেন শারদ পাওয়ার। না বলতে পারেন হিন্দি, না আছে সেরকম ক্যারিস্মা। কিন্তু যা আছে তা হল যোগাযোগ, মারাত্মক যোগাযোগ। তিনি প্রার্থী হলে টি আর এস এর ভোট, জগন রেড্ডি বা নবীন পট্টনায়েকের ভোট কোন দিকে যাবে কেউ জানে না, ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, তাঁকে অকালি সমর্থন করবে, ডি এম কে সমর্থন করবে, শিবসেনা সমর্থন করবে, বাকি বিরোধীরাতো বটেই, কংগ্রেসও সমর্থন করবে, এই ছক পরিস্কার হয়ে গেছে, কন্সটিটিউশন ক্লাবে মমতা ব্যানার্জির ভাষণ শুনতে এসেছিলেন শরদ পাওয়ার, সঙ্গে কন্যা সুপ্রিয়া সুলে, এসেছিলেন চিদাম্বরম, দিগগি রাজা, দিগ্বিজয় সিং, এস পির জয়া বচ্চন, রামগোপাল যাদব, আপের সঞ্জয় সিং, আর জে ডির মনোজ ঝা, টি আর এস এর কেশব রাও, ডি এম কে এম পি ত্রিচুরী শিভা, আরও অনেকে। মানে একদিকে রাজ্যে ভোট নিয়ে ব্যতিব্যস্ত আদিত্যনাথ যোগী, তার ওপর রক্তচাপ বাড়াতে টিকায়েত ভাইরা হাজির, কৃষকরা হাজির নো ভোট টু বিজেপি নিয়ে, ওদিকে জাঠ নেতা জয়ন্ত চৌধুরি এস পি র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, মায়াবতী ব্রাহ্মণ ভোট পাবার চেষ্টা করছেন, যাদব, ওবিসি, দলিত ভোট জমা হচ্ছে এস পি র পাশে, পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে ৩১৩ তো দুর, সিংহাসন বাঁচানোও কঠিন, কাজেই এতদিন যোগীর সঙ্গে আকচাআকচি ভুলে নরেন্দ্র মোদী, যোগীর প্রশংসা করছেন, মানুষের ক্ষোভ সামলানোর চেষ্টা করছেন, কতটা সামলাতে পারবেন, সেটাই দেখার।

রাজনৈতিক হিসেব নিকেশ ক্রমশ তাঁর বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে, ক্রমশই ভুল, আরও বড় ভুল করে চলেছেন মোদীজি, সেই ভুলের কোয়াটার ফাইনাল উত্তর প্রদেশ নির্বাচন, তারপরেই সেমিফাইনাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, এবং সবশেষে ২০২৪। এর প্রত্যেকটায় এবার খেলা হবে, প্রত্যেকটায়। আর একটাতে হেরে গেলেও বিরোধীদের কিন্তু পরেরটায় জেতার সম্ভাবনা থেকে যাবে, বিজেপির, নরেন্দ্র মোদীর, অমিত শাহের কিন্তু সে সুযোগ থাকবে না। যদি উত্তরপ্রদেশ হেরে যায়, সেই দিন থেকে মোদি থাকবে কতক্ষণ, মোদীর হবেই বিসর্জন, বাজনা বাজা শুরু হয়ে যাবে, ধরুন উত্তর প্রদেশে জিতলো, কিন্তু ১০০ টা আসন কমে গ্যালো, গোয়া হাত থেকে বেরিয়ে গ্যালো, এবং তারপর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শারদ পাওয়ার জিতে গেলেন, আবার বাজনা বাজবে।

এতদিন রাজনীতি একভাবে হয়েছে, আর এস এস – বিজেপি, নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ তাঁদের ইচ্ছেমত এজেন্ডা সেট করেছেন, বিরোধীরা রিঅ্যাক্ট করেছে, ওনারা ডি মনিটাইজেশন করেছেন, বিরোধীরা প্রতিবাদ করেছে, ওনারা জি এস টি এনেছেন, বিরোধীরা প্রতিবাদ করেছেন, ওনারা ৩৭০ ধারা তুলেছেন, বিরোধীরা প্রতিবাদ করেছেন, সে সব প্রতিবাদ ও আবার সম্মিলিত ছিল না, কিন্তু রাজনীতি এখন নতুন খাতে বইতে শুরু করেছে, কোভিড আর অর্থনীতিতে ব্যতিব্যস্ত সরকার এখন রিঅ্যাক্ট করছে, মোদী – শাহ  জানেন উত্তর প্রদেশ কেবল জিতলেই হবে না, আগের থেকে বেশি আসন দরকার, আর সেখানেই এজেন্ডা সেট করেছেন বিরোধীরা, তাঁরা বিজেপিকে জিততে দেবেন না, বিজেপি হারতে পারে, খেলা হবে, খেল হোই শ্লোগান ও বিরোধীদের, নির্বাচনের এজেন্ডাও বিরোধীদের, সেই প্রেক্ষিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে, নতুন সমীকরণের, এই নতুন বৃত্তের কেন্দ্রেই আছেন বাংলার মেয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজনীতি হল নতুন সম্ভাবনার খেলা, কোন বাঁকে কী লুকিয়ে আছে কেউ জানে না, কিন্তু এটাতো জানিই যে খেলাটার মাঝমাঠ থেকে বিপক্ষের গোল পোস্ট পর্যন্ত সবটাই, বিজেপির দখলে ছিল, সেই দখলদারি আজ আর নেই, সেটাই এই মুহূর্তের বাস্তবতা, তাই প্রশ্নটা উঠবেই, রাষ্ট্রপতি ভবনে এবার কে? এ প্রশ্নের সামনে নার্ভাস প্রধান্মন্ত্রী নিজেই, মুখ ফস্কে কি বলতে কি বলছেন, সামলাতে পারছেন না, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে পরিস্কার ধরা পড়ছে, তুমি আর নয় সে তুমি। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর কেবল ২০২৪ নয়, নির্ভর করছে আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Narendra Modi | সংসদের নিয়ম মানছেন না এনডিএ-র সাংসদরাই? কড়া বার্তা মোদির
01:46:40
Video thumbnail
Lok Sabha | INDIA-NDA | সোমে ‘হিন্দু’ মন্তব্যে উত্তাল লোকসভায় আজ INDIA কী করবে?
03:33:16
Video thumbnail
Bharatiya Nyaya Sanhita | আর ৪২০ বলা যাবে না, নতুন আইনে প্রতারণা কত নম্বর ধারায়?
01:44:51
Video thumbnail
Fire | দাউদাউ করে জ্বলছে, ফের বিধ্বংসী আগুন শহর কলকাতায়
59:16
Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (02 July, 2024)
14:55
Video thumbnail
Fourth Pillar | ইডি, আদালত, কৌস্তুভ রায়, কেজরিওয়াল আর হেমন্ত সোরেন, মামলা কিন্তু এক (পর্ব-২)
12:02
Video thumbnail
Aajke | এ এক আজব রাজ্যপাল, নিজের পিঠ বাঁচাতে ব্যস্ত
10:54
Video thumbnail
Kalyan Banerjee | মোদিকে কী বললেন তৃণমূলের কল্যাণ? রেগে লাল বিজেপি সাংসদরা
07:33:25
Video thumbnail
Kalyan Banerjee | ওম বিড়লাকে কী বললেন কল্যাণ? তারপর সংসদে কী হল দেখুন
08:23:26
Video thumbnail
Akhilesh Yadav | সংসদে হেরো সরকার, আর কী বললেন অখিলেশ? উত্তাল সংসদ
08:13:19