চীনের সঙ্গে সংঘাতের পারদ আরও চড়িয়ে এবার তাইওয়ানকে কয়েকশো কোটি ডলার-এর সামরিক সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকা। মার্কিন সংসদের সংশ্লিষ্ট সেনেট কমিটি বুধবার ওই ব্যাপারে রীতিমত আইন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্রকে অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র বিক্রি করে আসছে আমেরিকা। কিন্তু তাইওয়ানের লাগোয়া অঞ্চলে চীনের সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতার আবহে আমেরিকার এই সাহায্য যথেষ্ট তাৎপর্যের বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন পার্লামেন্টের ওই সেনেট কমিটির সিদ্ধান্ত, আগামী চার বছরে সাড়ে চারশো কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য পাঠানো হবে। যা বেজিংয়ের উদ্বেগ বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। রিপাবলিকান আর ডেমোক্র্যাট দুপক্ষের অনুমোদন নিয়েই সেনেট-এর বিদেশ বিষয়ক কমিটি ওই তাইওয়ান নীতি বিষয়ক আইন-এর বিলটি দ্রুত কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিজ্ঞমহল জানাচ্ছে, ১৯৭৯ সালের পর থেকে তাইওয়ানের পাশে থেকে কখনও এতটা গুরুত্বের সঙ্গে সহায়তা যোগায়নি আমেরিকা।
ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের তরফে বিদেশ বিষয়ক সেনেট কমিটির প্রধান বব মেনেনডেজ অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা বেজিংয়ের সঙ্গে কোনও সংঘাত চান না। কিন্তু নানা ভাবে তাইওয়ানের উপর যে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং দ্বীপরাষ্ট্রের উপর ক্রমাগত ভয়ের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা চলছে তার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল। সাড়ে চারশো কোটি ডলারের ওই আর্থিক সাহায্য ছাড়াও দুশো কোটি ডলারের ঋণ নেওয়ার গ্যারান্টিও দেওয়া হয়েছে মার্কিন সমরাস্ত্র কেনার জন্য।
এছাড়াও ওই আইনের ভিত্তিতে তাইওয়ানকে ন্যাটো বহির্ভূত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহযোগী হিসাবে ঘোষণা করছে আমেরিকা। চীন বরাবরই তাইওযানকে তাদের দেশের আওতাভুক্ত একটি প্রদেশ হিসাবেই দেখাতে চায়। আর সেজন্যই আন্তর্জাতিক স্তরে দ্বীপরাষ্ট্রকে কোনওরকম স্বীকৃতি দেওয়ার তীব্র বিরোধী। বেজিংয়ের এই আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে এবার তাইওয়ানের রাজধানীতে দূতাবাস তৈরির দিকেই এগোচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার পরিণতিতে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা আর স্নাযুর চাপ আরও তুঙ্গে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।