ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, বা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এমন দলিতদের সংরক্ষণের (Quota for converted Dalits) আওতায় আনা যায় কিনা বিচার করতে জাতীয় স্তরে একটি কমিশন গঠন করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার (Narendra Modi Govt)। শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত যদি গৃহীত হয়, রাজনীতিতে তার সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। এক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতর এবং ‘ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং’ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সরকারি সবুজ সংকেত মিলেছে। খুব শীঘ্রই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র, আইন এবং সামাজিক ন্যায় এবং অর্থ দফতরের মধ্যে আলোচনা চলছে।
প্রসঙ্গত ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন এমন দলিতদের জন্য সংরক্ষণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছে। বর্তমানে সংবিধান অনুযায়ী হিন্দু এবং যে দলিতরা শিখ বা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছেন, শুধু তাঁরাই সংরক্ষণের আওতায় আসতেন। খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী দলিতদের এই দাবি অবশ্য বহুকালের। গত ৩০ অগস্ট সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কিষাণ কল, বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চকে জানিয়েছিলেন তিনি ওই সব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের অবস্থান কী তা আদালতকে জানাবেন। বিচারপতিরা তাঁকে তিন সপ্তাহ সময় দেন। আগামী ১১ অক্টোবর বিষয়টি ফের আদালতে উঠবে।
২০০৪ সালে ইউপিএ সরকার সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্রের নেতৃত্বে এই উদ্দেশ্যে ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর রিলিজিয়াস অ্যান্ড লিঙ্গুইস্টিক মাইনরিটি’ গঠন করেছিল। তার রিপোর্ট জমা পড়ে ২০০৭ সালে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল দলিতদের সংরক্ষের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে ধর্মমুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু মনমোহন সরকার সেই রিপোর্ট গ্রহণ করেনি। তাদের যুক্তি ছিল, কোনও সমীক্ষা ছাড়াই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ফলে গঠন করা হয়েছিল আরেকটি কমিশন, ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটিজ। সেই রিপোর্টেও বলা হল, ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন এমন দলিতদের সংরক্ষণের আওতায় আনা উচিত। কিন্তু খুব ছোট নমুনার উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সেই রিপোর্টও গৃহীত হয়নি। ১৫ বছর পর ফের বিষয়টি সামনে এল আদালতের মধ্যে দিয়ে। অনেকেই মনে করছেন এবার হয়তো নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০২৪-এর ভোটের আগেই এই বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।