শনিবারই কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছেন শশী থারুর। দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পারেন গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ অশোক গেহলট। আর সাম্প্রতিক অতীতে এই প্রথম এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে যখন কংগ্রেস সভাপতি পদে গান্ধী পরিবারের কেউ থাকছেন না। অবশ্য স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে অন্তত ১১ বার এমন কেউ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন যিনি গান্ধী পরিবারের সদস্য নন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রথম কংগ্রেস সভাপতির পদে বসেছিলেন পট্টভি সীতারামাইয়া। সুভাষচন্দ্র বসুর কাছে সভাপতি পদে ভোটের লড়াইয়ে হেরে গেলেও অন্তত্ স্বাধীনতার পরে দুটি বছর ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫০ কংগ্রেসের সর্বোচ্চ পদের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। আর এরপর ১৯৫১ সাল পর্যন্ত শতাব্দী প্রাচীন দলটির সভাপতির পদে ছিলেন পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন।
এরপর জওহরলাল নেহরু সভাপতির ব্যাটন হাতে তুলে নিলেও ১৯৫৫ সালে তিনি সে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেন। সেই বছর থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন ইউ এন ধেবর। পরবর্তীতে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি নীলাম সঞ্জীব রেড্ডি ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৩ পর্যন্ত এআইসিসি-র শীর্ষ পদে ছিলেন।
কংগ্রেস রাজনীতিতে সব থেকে বেশি দলের মধ্যে ক্ষমতার দখলের লড়াই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে শুরু হয়েছিল যার সেই কে কামরাজ কংগ্রেস সভাপতির পদে ছিলেন ১৯৬৪ সাল থেকে। ১৯৬৭-তে অবশ্য তাঁর অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। এরপরে ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্ষন্ত নিজলিঙ্গাপ্পা, তারপর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত জগজীবন রাম আবার ১৯৭২ সাল থেকে ৭৪ সাল পর্যন্ত দেশের আর এক প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সভাপতি পদের দায়িত্বে ছিলেন। আর জরুরি অবস্থার সেই ভয়াবহ দিনগুলিতে “ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া” থ্যাত দেবকান্ত বড়ুয়া সাতাত্তর সাল পর্যন্ত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতির পদে।
এরপর দীর্ঘদিন গান্ধী পরিবারের আয়ত্ত্বের মধ্যেই ছিল কংগ্রেস সভাপতির পদ। যার ব্যতিক্রম ঘটে ১৯৯২ সালে। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেস সভপতির দায়িত্ব নেন পি ভি নরসীমা রাও। তার পরবর্তীতে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতির গদিতে বসেন সীতারাম কেশরী। যার পরে দলের আপামর কর্মী-সমর্থকদের দাবি মেনে গান্ধী পরিবারের তরফে কমবেশি দুদশক দলের দায়িত্ব সামলান কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।