নয়া দিল্লি: আগামী লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Election) আঞ্চলিক দলগুলি (Regional Party) থেকে বিজেপি বিরোধিতায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একাধিক মুখের কথা আলোচনায় উঠেছে। কিন্তু, কংগ্রেসই (Congress) যে বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেবে তা স্পষ্ট করে দিলেন রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi)। শুক্রবার কংগ্রেসের ভারত জোড়ো (Bharatjodo Podoyatra) পদযাত্রার ১০০ দিন পূর্ণ করে সাংবাদিক সম্মেলনে (Press Conference) রাহুল গান্ধি সদর্পে জানালেন, কোনও আঞ্চলিক দল দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য সামনে আসতে পারে না। আঞ্চলিক দলগুলি কোনও কমিউনিটি, রাজ্য বা অঞ্চলের জন্য ভাবে। দেশের জন্য তাদের দৃষ্টি নেই। কংগ্রেসই বিজেপিকে (BJP) পরাস্ত করবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আগামী বছর নয়টি রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর কন্যাকুমারী থেকে শুরু হওয়া কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রায় ভালোরকম সাড়া পড়ছে। তারপর রাহুলের এই ব্যাখ্যায় রাজনীতিতে অন্যরকম বার্তা গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজস্থান, ছত্তিশগঢ় সহ একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও জাতীয় রাজনীতিতে (National Politics) প্রভাব (Impact) অনেক কমেছে। তবে সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। দলের জাতীয় সভাপতি পদে বসেছেন গান্ধি পরিবারের বাইরে দক্ষিণ ভারতের মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge)।
আরও পড়ুন: Bharat Jodo yatra: ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে কী বলছেন রাজস্থানের মানুষ? দেখুন কলকাতা টিভির Exclusive ভিডিয়ো
তারপরে রাহুল গান্ধির এই বার্তায় ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, এর একাধিক ব্যাখ্যা হতে পারে। প্রথমত, এটি বলার অর্থ হল, আঞ্চলিক দলগুলিকে কংগ্রেসের ছাতার তলায় এসে বিজেপি বিরোধিতায় নামতে হবে। দুই, কংগ্রেসকে অবজ্ঞা করে কোনও আঞ্চলিক বিরোধী দল চলতে পারবে না। তৃতীয়ত, এর ফলে বিরোধীদের জোটের সম্ভাবনা নাকচ হয়ে গেল। চতুর্থ, কংগ্রেস বিজেপি বিরোধিতায় গেরুয়া শিবিরের দেশ আবেগের পালের হাওয়া কাড়তে চাইছে।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টির বিপুল জয়ের আগে থেকে কথা উঠেছিল যে, সর্বভারতীয় পার্টির দিন বোধ হয় শেষ হতে চলেছে। কারণ, একের পর এক রাজ্যে উত্থান হচ্ছিল আঞ্চলিক শক্তির। কিন্তু, তারপর মোদি ও বিজেপির অভূতপূর্ব উত্থান দেখেছেন দেশবাসী। এখন মূল্যবৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে নাজেহাল দেশবাসী। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী শিবিরের হাত শক্ত হয়েছে বলে তারা মনে করছে। চীন ইস্যুতে সংসদে এককাট্টা হয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে আপ। দিল্লির পরে পাঞ্জাবে ক্ষমতায় ভারতের রাজনীতিতে ধুমকেতুর মতো উত্থান হওয়া আপের এখন প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাতেও বিধায়ক আছে। এখন তারাও জাতীয় দল। বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল (জোতীয় দল)। তাছাড়া বিহারে নীতিশকুমার, ওডিশায় নবীন পট্টনায়েক, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হোক বলে তাদের দলের নেতারা চান। সেই প্রেক্ষিতে রাহুল গান্ধির এই বার্তা জাতীয় রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।