বহরমপুর: আবাস যোজনায় সমীক্ষা (Awas Yojana Survey) ঘিরে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় হুলস্থুল হচ্ছিল। সমীক্ষার সঙ্গে নিযুক্ত আশা (Asha Worker) ও আইসিডিএস কর্মীরা (ICDS Worker) বিক্ষোভ (Agitation) দেখিয়েছেন। আবার কোথাও তাঁদের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ হয়েছে। এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালাও ঝুলেছে। এবার আবাস যোজনায় বেনিয়ম ঘিরে মানুষের অশান্তির আশঙ্কায় মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে মালিহাটী পঞ্চায়েতে (Malihati Panchayet) গণ ইস্তফা (Mass Resignation) জমা পড়ল। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ প্রধান সহ ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য ইস্তফা দিলেন। শনিবার সালারে ভরতপুর দুনম্বর ব্লক অফিসে গিয়ে তাঁরা ইস্তফাপত্র জমা দেন। যে ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। আবাস প্লাসে সমীক্ষার পরে বাড়ির ন্যায্য প্রাপকদের নাম তালিকায় বাদ যাওয়ায় এই ইস্তফা বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
ঘটনায় চাপান উতোর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সমীক্ষার নামে আবাস যোজনায় গরিব মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। দুঃস্থ মানুষ পঞ্চায়েতে এসে কান্নাকাটি করছে, অথচ প্রধান, উপ প্রধান ও সদস্যরা কিছুই করতে পারছে না ন্যায্য প্রাপকদের জন্য। এমনটাই জানিয়েছেন মালিহাটী পঞ্চায়েতের প্রধান সৈয়দ নাসিরুদ্দিন, উপ প্রধান মনিকা দাস সহ অন্যান্য সদস্যরা।
আরও পড়ুন: Awas Yojana: আবাস যোজনার প্রকাশিত তালিকা নিয়ে অসন্তোষ আলিপুরদুয়ার ও খড়্গপুরে
জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে মালিহাটী গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৯১৭ জন উপভোক্তার নামের তালিকা প্রকাশ হয় আবাস যোজনায়। পরবর্তীতে ব্লক প্রশাসনের তত্বাবধানে আশা কর্মীদের দিয়ে সমীক্ষা করা হয়। সেই সমীক্ষার পর এলাকার ৮৬২ জনের নাম বাদ যায়। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে চুনশহর ও শালিন্দা গ্রামের ন্যায্য প্রাপকদের নাম বাদ গিয়েছে বলে দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের। সমীক্ষার পরবর্তী সময়ে যে তালিকা প্রকাশ করে ব্লক প্রশাসন তাতে শতাধিক ন্যায্য প্রাপকদের নাম বাদ গিয়েছে বলে দাবি পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্য সদস্যদের। ব্লক প্রশাসনের কাছে দরবার করেও কোনও কাজ না হওয়ায় পঞ্চায়েতের সদস্যরা ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এদিন ভরতপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও আশিস মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে ব্লকের রিসেপশন সেকশনে ইস্তফাপত্র জমা দেন মালিহাটীর প্রধান, উপপ্রধান সহ সদস্যরা। যদিও এই প্রসঙ্গে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এই বিষয়ে সাংসদ আবু তাহের খান (Abu Taher Khan) বলেন, তাঁরা আলোচনা করতে পারতেন। বিষয়টি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করব। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, আবাস যোজনার দুর্নীতি শিক্ষক নিয়োগের চেয়েও বড় ঘটনা।
উল্লেখ্য, এমনিতেই রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ এবার শেষ হতে চলেছে। আগামী বছরের শুরুর দিকেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে।