হংকং: অ্যান্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা (Jack Ma)-র হাতে আর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না চীনা এই অর্থনৈতিক প্রযুক্তি সংস্থার (Chinese Fintech)। কারণ এই সংস্থার শেয়ারহোল্ডাররা (Shareholders) এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার ফলে সংস্থায় ধারাবাহিক সমন্বয়ের বাস্তবায়ন ঘটবে, আর তার ফলে জ্যাক মা’কে তাঁর ভোট দেওয়ার অধিকার (Voting Rights) ছেড়ে দিতে হবে। শনিবার সংশ্লিষ্ট সংস্থা সম্পর্কে এই কথা জানানো হয়েছে সংবাদ মাধ্যমকে (News Media)।
২০২০ সালে অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আইপিও (IPO) নষ্ট হয়েছে। বৃহত্তম আইপিও নিয়ে শেয়ার বাজারে (Share Market) প্রবেশের চেষ্টা চালালেও চীনের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা (Chinese Regulatory) সূত্রে নেওয়া পদক্ষেপ, বলা চলে সরকারি চাপে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় অ্যান্ট গ্রুপের। সংস্থার ইতিহাসে এটা একটি বড় ঘটনা ছিল। তার জেরেই এই অর্থনৈতিক প্রযুক্তি সংস্থা (Financial technology Company) তাদের পরিচালন ব্যবস্থাকে (Management System) ঢেলে সাজাতে হচ্ছে বাধ্য হচ্ছে।
হংকংয়ে ওরিয়েন্ট ক্যাপিটাল রিসার্চ (Orient Capital Research)-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর (Managing Director) আন্দ্রে কোলিয়ের (Andre Collier) এবিষয়ে বলেছেন, অ্যান্ট গ্রুপ থেকে প্রতিষ্ঠাতার জ্যাক মা’র প্রস্থান এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে চীনা নেতৃত্ব (Chinese Leadership) দেশে বৃহৎ বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের (Largest Private Investors) প্রভাব খর্ব করার (Reducing the Influence ) পথে দৃঢ় সঙ্কল্প। তার চেয়ে বড় কথা হল, আগামী দিনেও এই ট্রেন্ড (Trend) চলতে থাকবে এবং এর ফলে চীনের অর্থনীতিতে সর্বাধিক উৎপাদনশীল অংশে ক্ষয় জারি থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, এবিষয়ে একাধিক বক্তব্য প্রকাশের পর আর্থিক ব্যবস্থায় (Financial System) ঝুঁকি নিয়েও ছোট ব্যবসার জন্য ঋণ বন্দোবস্ত করারও চেষ্টা চালিয়েছিল। এই পদক্ষেপ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (Economical Growth) ক্ষেত্রে অন্যতম মূলক চালিকাশক্তিও (Key Drivers) ছিল।
বেজিংয়ে বিনিয়োগ উপদেষ্টা সংস্থা বিডিএ-এর চেয়ারম্যান ডানকান ক্লার্ক (Duncan Clark, Chairman Of Investment Advisory Firm – BDA) বলেছেন, জ্যাক মা কোম্পানির নিয়ন্ত্রক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে আর নেই। এই বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই তত্ত্ব থেকে আইপিও ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত, এর মধ্যে অন্যতম হল ডেটা সংক্রান্ত তত্ত্বাবধান কিংবা মালিকানা (Oversight and Ownership of data) সংক্রান্ত বিষয়, যা ইতিমধ্যেই সমাধান হয়েও গিয়েছে বলে দাবি তাঁর।
বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, চীনা অর্থনীতি এই সময় ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় রয়েছে, সেই কারণে সরকার একটা ইঙ্গিত দিতে চাইছে যে তারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রযুক্তি ও বেসরকারি ক্ষেত্র সবসময়ই এটা একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। সংস্থায় নতুন যে পরিবর্তন আসছে, তাতে অ্যান্ট গ্রুপও সাময়িক সময় পাবে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সংস্থায় ভোটিং ব্যবস্থা সংক্রান্ত যে পরিবর্তন আসছে, তাকে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি অনুসারে অ্যান্ট গ্রুপের আইপিও সংক্রান্ত প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, অ্যান্ট গ্রুপ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তাতে তারা সফল হবে এবং আগামী দিনে চীনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ফের উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।