নিউ ইয়র্ক: ভারতীয়-বংশোদ্ভূত এক সহযোগী অধ্যাপক (Indian-origin Associate Professor) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা (Lawsuit) দায়ের করেছেন। ম্যাসাচুসেটসের (Massachusetts) ওয়েসলি বিজনেস স্কুলে (Wellesley Business School) তিনি কাজ করেন। আদালতে দায়ের করা মামলায় তাঁর অভিযোগ, তিনি বর্ণ ও লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার (Racial and Gender discrimination) হয়েছেন। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মামলাকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলার নাম লক্ষ্মী বালাচন্দ্র (Lakshmi Balachandra)। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দ্য বস্টন গ্লোব (The Boston Globe) সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, অভিযোগকারী বাবসন কলেজে (Babson College) অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অঁতরপ্রিনরশিপ (Associate Professor of Entrepreneurship) হিসেবে কাজ করতেন। লক্ষ্মীর অভিযোগ, দুর্ব্যবহার এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার (Mistreatment and Administrators’ Failure) কারণে তিনি পেশাদারি কেরিয়ারে সুযোগ হারিয়েছেন (Career Opportunities) এবং তাঁর আর্থিক ক্ষতি (Economic Losses) হয়েছে। তিনি মানসিক যাতনার (Emotional Distress) সম্মুখীন হয়েছেন এবং এতে তাঁর সুনাম নষ্ট (Harm to Her Reputation) হয়েছে।
আরও পড়ুন: North Korea: প্রকৃত যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকতে সামরিক মহড়া জোরদারের নির্দেশ কিমের
লক্ষ্মী বালাচন্দ্র ২০১২ সালে ফ্যাকাল্টি (Faculty) হিসেবে বাবসনে যোগ দিয়েছিলেন এবং ২০১৯ সালে তিনি সেখান থেকে দায়িত্বে অব্যাহতি নেন। দায়ের করা আইনি মামলায় তিনি অ্যান্ড্রু কর্বেট (Andrew Corbett) নামে এক অধ্যাপককে ‘বৈষম্যমূলক কাজের পরিবেশের জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী (Primary Direct Perpetrators of the Discriminatory Work Environment)’ করেছেন। অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট কলেজের অঁতরপ্রিনরশিপ ডিভিশনের শীর্ষ পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি ওই কলেজের প্রাক্তন কর্মী। গত মাসের ২৭ তারিখে বস্টনের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে (US District Court in Boston) দায়ের করা মামলায় লক্ষ্মী আরও অভিযোগ করেছেন, করবেট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অ্যাসাইনমেন্ট (teaching assignments), শ্রেণি সূচি (Class Scheduling) এবং বার্ষিক পর্যালোচনার (Annual Reviews) বিষয়গুলির তদারকি করতেন। তাঁর কাছে লক্ষ্মী বালাচন্দ্র অনুরোধ করেছিলেন, তিনি ঐচ্ছিক বিষয় (Electives) নিয়ে পড়াতে চান। কিন্তু, তার অনুরোধে কর্ণপাত না করে, তাঁকে অঁতরপ্রিনরশিপের প্রয়োজনীয় কোর্স (Required Courses) পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হতো। অথচ অভিযোগকারীর এমআইটি স্লোন স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট এবং হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে (MIT Sloan School of Management and Harvard Business School) ওই সমস্ত ক্লাস নেওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।
বর্ণ ও লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগে লক্ষ্মী বালাচন্দ্রন বলেছেন, বাবসন সাদা চামড়া এবং পুরুষ ফ্যাকাল্টি (White and Male Faculty) পছন্দ করে। সেই মতোই তারা পুরস্কার (Reward) এবং সুযোগ-সুবিধা (Privileges) প্রদান করে। মামলায় অভিযোগ অনুসারে, তাঁর গবেষণার রেকর্ড, আগ্রহ প্রকাশ করা এবং কলেজে পরিষেবা প্রদানের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও, তাঁকে একাধিক নেতৃত্বস্থানীয় পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং গবেষণা পরিচালনা ও লেখালেখির জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। লক্ষ্মী বালাচন্দ্রের অ্যাটর্নি মনিকা শাহ (Monica Shah) বলেছেন, অধ্যাপক ম্যাসাচুসেটস কমিশন এগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশনে (Massachusetts Commission Against Discrimination) বৈষম্যের অভিযোগও দায়ের করেছেন।
বাবসন কলেজ এই মামলা ও অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, তারা উদ্বেগ কিংবা অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়। সেগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত ও সমাধান করার জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত প্রোটোকল এবং সংস্থান (Protocols and Resources) রয়েছে।