নয়াদিল্লি: রোগীদের মদ ছাড়ানোর আগে ডাক্তারদেরও মদ ছাড়তে হবে। এ ব্যাপারে ডাক্তারদেরই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্র। তার জন্য প্রাথমিক স্তরে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার, আলোচনাচক্রে মদের আয়োজন বন্ধ করতে বলা হল কেন্দ্রের তরফে। সম্প্রতি ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেল্থ সার্ভিস অতুল গোয়েল দেশের সমস্ত চিকিৎসক সংগঠনকে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে বলেছেন। তাঁর মতে, ডাক্তাররাই পারেন রোগীদের মদ্যপান থেকে দূরে রাখতে। তবে তার জন্য ডাক্তারদেরও মদ থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে তো রোগীরা অনুপ্রেরণা পাবেন।
ডিজিএইচএস ওই চিঠিতে বলেছেন, ডাক্তারদের বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা, আলোচনাচক্র, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের শেষে ঢালাও খানাপিনার আয়োজন থাকে। সেটা দিনের বেলাতেও হয়, রাতে আবার বেশি হয়। অনেক ডাক্তার কোনও কোনও সময় নেশার ঘোরে বেসামালও হয়ে পড়েন। অতুলের পরামর্শ, ওই সব সেমিনার, আলোচনাচক্রের শেষে যেন মদ পার্টির কোনও ব্যবস্থা না থাকে। ডাক্তাররা এটা যদি করতে পারেন, তাহলে একটা ভালো দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারে। চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম, এই নীতি চালু হোক, এমনটাই চান অতুল। তাঁর দাবি, এরকম হলে পরিবেশটাই পাল্টে যাবে।
অতুলের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নন কমিউনিকেবল ডিজিজে মৃত্যুর হার ৬৩ শতাংশেরও বেশি। হৃদরোগ, ডায়াবিটিস, ক্যানসার, শ্বাসনালির রোগে মৃত্যুর হারও কম নয়। এই ধরনের রোগের ক্ষেত্রে তামাক সেবন কিংবা মদ্যপান একটা বড় ফ্যাক্টর। এই রোগীদের তাঁদের ডাক্তররা মদ্যপান বা ধূমপান করতে নিষেধ করেন। অতুল বলছেন, রোগীদের বারণ করার আগে ডাক্তাররা যদি নিজেরা মদ্যপান বা ধূমপান বন্ধ করেন, তবে বিষয়টা অনেক সরল হয়। ডাক্তারদের থেকেই রোগীরা অনুপ্রেরণা পেতে পারেন।
মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত কোনও রোগীকে যে ডাক্তার নিয়মিত দেখেন, দেখা গেল, তিনিই ধূমপান বা মদে আসক্ত। তিনিই আবার তাঁর রোগীকে মদ্যপান করতে নিষেধ করেন। অতুল বলছেন, এই ডাক্তারের পরামর্শ রোগী কেন মানবেন। নিজে মদ্যপান বা ধূমপান বন্ধ করলে যে জোরের সঙ্গে একজন ডাক্তার তাঁর রোগীকে সে ব্যাপারে সতর্ক করতে পারেন, নিজে নেশায় আসক্ত হলে তা তিনি পারবেন না। এই কারণেই তিনি চান, কোনও একটা জায়গা থেকে শুরুটা হোক। তারই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে তিনি সেমিনার, আলোচনাচক্রের শেষে খানাপিনার আসর বসানোয় ইতি টানতে চান। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতো সংস্থা অতুলের এই চিঠির বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে।