কলকাতা: ইডি-সিবিআইয়ের (ED-CBI) বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আদালতের তোপের মুখে জেলবন্দি বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল (TMC) নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh))। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Avishek Banerjee) নাম বলানোর জন্য তাঁর উপর ইডি-সিবিআই চাপ দিচ্ছে বলে গত কয়েক দিন ধরে অভিযোগ করছেন কুন্তল। বুধবার তিনি দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় এবং আলিপুর বিশেষ আদালতে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগপত্র দেখতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছে ইডি (ED)। এদিনই বেলা তিনটের মধ্যে সেই অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে। হাইকোর্টের অভিযোগ, তদন্তের গতি স্তব্ধ করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এই অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)।
বিচারপতি এদিন বলেন, এটা মারাত্মক প্রবণতা। তদন্তকারী আধিকারিকদের হুমকি দেওয়া এবং তদন্তের গতি আটকে দেওয়ার জন্য এসব চিঠি লেখা হচ্ছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে এসব বন্ধ করতে হবে।
গত ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানের সমাবেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি বিরোধীদের হেনস্তা করার জন্য ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগাচ্ছে। কুণালদা, মদনদা যখন জেলে ছিলেন, তখন ইডি-সিবিআই আমার নাম বলানোর জন্য তাঁদের চাপ দিয়েছিল। তারপর থেকেই আদালতে যাতায়াতের পথে লাগাতার কুন্তল বলে চলেছেন, ইডি-সিবিআই অভিষেক-সহ অনেকের নাম বলার জন্য আমাকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে।
আরও পড়ূন: Abu Taher Khan | জেলা কমিটির তালিকা নিয়ে তৃণমূলের কাজিয়া, মাঝপথে সাংবাদিক বৈঠক ছাড়লেন চেয়ারম্যান
বুধবার হেস্টিংস থানায় কুন্তল দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তারপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানান, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত ও পুলিশ ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। আরও বলা হয়েছে, এদিন বেলা তিনটের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারককে কুন্তলের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করতে হবে।
ইডির দাবি, প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে ওই বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা হেস্টিংস থানায় অভিযোগ করেন। দিনকয়েক আগে নিম্ন আদালতেও একই অভিযোগ করেন কুন্তল।
আইনজীবীদের একাংশের মতে, এভাবে কুন্তল তদন্তের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। তার জন্য ইচ্ছে করে তিনি এই ধরনের মনগড়া অভিযোগ আনছেন। এবার হাইকোর্ট চেপে ধরায় তিনি বিপাকে পড়বেন। দিল্লি যাত্রা এড়াতে এর আগে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) বারবার এই আদালত, সেই আদালতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। তাঁকে তিহার জেলে যেতেই হয়েছে।