Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeজেলার খবরTitanic House | টাইটানিকের আদলে স্বপ্নের বাড়ি গড়ে তুলেছেন ফাঁসিদেওয়ার মিন্টু

Titanic House | টাইটানিকের আদলে স্বপ্নের বাড়ি গড়ে তুলেছেন ফাঁসিদেওয়ার মিন্টু

Follow Us :

নীচবাড়ি (দার্জিলিং): একবুক স্বপ্ন। দুমুঠো জেদ। প্রেমের মিনার। এসবকে এক হাঁড়িতে এনে ফোটালে তৈরি হয় মিন্টু রায়ের (Mintu Roy) সাধের বাড়ি। ইচ্ছে ছিল সিনেমার পর্দায় দেখা ‘টাইটানিকের’ (Titanic) আদলে একটি বাড়ি হবে। না, সম্রাট শাজাহানের ভ্রাতুষ্পুত্র নন মিন্টু। একজন চাষি (Marginal Farmer)। তা সত্ত্বেও ইচ্ছাশক্তির নিপুণ হলকর্ষণে ফলিয়েছেন কংক্রিটের ফসল। এখন সেসব কথা বলতে গিয়ে খানিক লজ্জাও পান, চোখে ফুটে ওঠে গর্বের ঝলক।

দার্জিলিং জেলার (Darjeeling) অখ্যাতনামা নীচবাড়ি গ্রামে বসত বছর ৫২-র মিন্টু রায়ের। স্ত্রীর নাম ইতি। প্রায় শেষ হতে চলা তাঁদের জাহাজবাড়ি এখন গোটা গ্রামের গর্ব। তিনতলা এই বাড়ি দেখতে এখন আশপাশের গ্রাম, এমনকী দূর থেকে সাংবাদিকরাও আসছেন। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের (Phasidewa Block) নীচবাড়ি গ্রামে মাত্র ৯.৫ ডেসিমেল জমিতে টাইটানিক নির্মাণের কাজ শুরু করেন মিন্টু। সেটা ২০১০ সাল। মিন্টু জানতেন, এই বাড়ি তৈরি করতে তাঁর বহু সময় লাগবে। কেননা, অর্থের অভাব।

আরও পড়ুন: North Bengal | Bagora | কুয়াশাচ্ছন্ন সবুজ ঘেরা পাহাড়, কার্শিয়াংয়ের এই গ্রাম তৃপ্তি দেবে আপনার মনকে

মিন্টুর যখন কৈশোরকাল, তখন তাঁর বাবা তাঁকে বউবাজার এলাকার একটি হস্টেলে রেখেছিলেন। তখন সে কলকাতার দুর্গাপুজোয় টাইটানিকের আদলে একটি মণ্ডপ দেখে। আর তা খুব ভালো লাগে। তখন থেকেই সে মনের ভিতর স্বপ্নের বীজ বুনতে শুরু করে। ঠিক করে তারও একটা বাড়ি হবে টাইটানিকের মতো।

বছর ৩০ আগে ফাঁসিদেওয়ায় ফিরে আসেন মিন্টু। ইতির সঙ্গে বিয়ে ২১ বছর আগে। বড় মেয়ে কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছেলে ছোট, এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। প্রত্যন্ত চাষি মিন্টুর নিজস্ব একটি ছোট্ট চা বাগানও রয়েছে। কিন্তু, একটির পর একটি ইট গেঁথে গত ১৩ বছরের চেষ্টায় তিনতলা টাইটানিক দাঁড় করানো কি চাড্ডিখানি কথা! যা সম্ভব করে তুলেছেন মিন্টু। বাড়ি তৈরির জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের কাছেও শলা-পরামর্শ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পয়সা দিতে পারবেন না শুনে সটান ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তাতেও জেদ থেকে টলাতে পারেনি কেউ তাঁকে।

মিন্টু তখন ঘর ছেড়ে নেপালে (Nepal) চলে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ শেখেন। তিন বছর পর ফিরে আসেন বাড়িতে। নেপালে যা কিছু রোজগার করে জমিয়েছিলেন, তা বিনিয়োগ করেন টাইটানিক নির্মাণে। ইতি জানালেন, ঠিক কত টাকা আমরা জমিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে লাখ ১৫ তো হবেই। মেয়ের জন্মের পর আমাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়। তখন আমরা অন্যের থেকে জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষ করে পেট চালাতাম। এরপর শ্বশুরমশাইয়ে কাছে থেকে ৩ বিঘা জমি পাই। সেখানে চা বাগান (Tea Garden) করেন। অন্য সময় ও টোটো চালাত। তা থেকে অতিরিক্ত কিছু আয় হতো, জানালেন ইতি।

মিন্টুর কথায়, ২০১০ সালে যখন এই বাড়ির কাজ শুরু করি, তখন খুবই আর্থিক অনটন ছিল। আর এখন গোটা রায় পরিবার মিন্টুর সঙ্গে রয়েছে। তিনি বলেন, আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তখন আমরা সবাই মিলে ওখানে চলে যাব। জাহাজের ডেকে আমি একটা চায়ের দোকান খুলতে চাই। বাড়িতে সত্যিকারের টাইটানিকের মতোই কাঠের কাজ ও আসবাব করা হয়েছে। ফলে আর বেশিদিন বাকি নেই যেদিন মিন্টুর স্বপ্নের টাইটানিক জাহাজবাড়ি জীবন সমুদ্রে ভাসবে। আর তার ডেকে লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও এবং কেট উইনসলেটের মতো স্বপ্ন পূরণের ডানা মেলে দাঁড়াবেন মিন্টু ও ইতি রায়।

RELATED ARTICLES

Most Popular