নয়াদিল্লি: কাশ্মীর ফাইলস, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র। এবার ‘কেরালা স্টোরি’ (Kerala Story) চলচ্চিত্র নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে। কংগ্রেস (Congress) নেতা তথা তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor) এনিয়ে মুখ খুললেন। এক টুইটে (Tweet) তিনি লিখেছেন, এটা আপনাদের কেরালা স্টোরি, এটা আমাদের কেরালা স্টোরি নয়। টুইটের সঙ্গে চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপনের একটি পোস্টার দিয়েছেন থারুর। যাতে লেখা রয়েছে, গোপন করে রাখা সত্যকে বেপর্দা করার কাহিনি। যেখানে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্যের প্রায় ৩২ হাজার নিখোঁজ মহিলাকে ধর্মান্তরকরণ করা হয়েছে। যা কট্টর মনোভাব এবং দেশ ও বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানোর লক্ষ্যবস্তু ছাড়া কিছু নয়, থারুর মন্তব্য করেছেন।
ছবির অন্যতম নায়িকা আদা শর্মা (Adah Sharma) কী বললেন ছবি নিয়ে?
ভয়ঙ্কর ব্যাপার! মেয়েরা একের পর এক হারিয়ে যাচ্ছে! আরও ভয়ের যে মানুষ এটাকেও অপপ্রচার বলে যাচ্ছে? নিখোঁজ মেয়েদের সংখ্যা নিয়ে তর্ক করে যাচ্ছে! আমি তো বিশ্বাস করতেই পারছি না, প্রথমে সংখ্যা তারপর এরকম কিছু ঘটেছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আমি নিজে কয়েকজন এরকম মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি সেকথা ভাষায় বর্ণনাও করতে পারব না।
আগামী শুক্রবার, ৫ মে মুক্তি পেতে চলেছে কেরালা স্টোরি। কেরালা কংগ্রেস ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে যাতে এই ছবির মুক্তি বন্ধ করা হয়। কংগ্রেসের দাবি, এই ছবি মিথ্যায় ভরা। মুসলিম সম্প্রদায়কে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশন বলেন, উদ্দেশ্যমূলক পরিকল্পনা নিয়ে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ধর্মীয় শত্রুতা ও ঘৃণা ছড়ানোর চক্রান্ত রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের মতলবকে ব্যর্থ করে দিতে মানুষ তৈরি আছে। তিনি আরও বলেন, এখানে গুচ্ছ গুচ্ছ মিথ্যাকে দেখানো হয়েছে। ৩২ হাজার মহিলাকে ধর্মান্তরিত করে ইসলামিক রাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। যা আদ্যন্ত মিথ্যা। এই ছবির ট্রেলারেই সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট ধরা পড়েছে। রাজ্য এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করতে সঙ্ঘ পরিবারের চক্রান্ত এর পিছনে রয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।
শুধু কংগ্রেস নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও (CM Pinarayi Vijayan) কেরালা স্টোরির নির্মাতাদের একহাত নেন। তিনিও এই ছবিকে সঙ্ঘ পরিবারের অপপ্রচারের চেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন। এই অবস্থায় ছবির মুক্তি এবং তাকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে মুক্তি নিয়ে বামশাসিত রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখার। কেরলে বরাবরই ডান ও বাম সরকার পরিচালনা করে এসেছে। হিন্দুত্ববাদীরা সেখানে কোনওদিনই ঠেকনা পায়নি। অনেকে মনে করছেন, এবার হিন্দুত্ববাদীরা দক্ষিণের এই রাজ্যে খাতা খোলার চেষ্টা করছে। যার মহড়া শুরু হচ্ছে চলচ্চিত্র দিয়ে।